৮৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতন, ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে সূচক

SHARE

বড় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বৈঠক ঘিরে দুদিন শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও ফের বড় দরপতনের বৃত্তে আটকে গেছে দেশের শেয়ারবাজার।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে।

সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে দরপতনের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ৮৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ছয় হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে গেছে।

এর আগে ঈদের পর শেয়ারবাজারে টানা ৯ কার্যদিবস দরপতন হলে সোমবার (২৫ জুলাই) ৩০ জন বড় বিনিয়োগকারীর সঙ্গে বৈঠক করে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন।

বিএসইসির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে নিয়ন্ত্রক সংস্থার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর আশ্বাস দেন বড় বিনিয়োগকারীরা। সেই সঙ্গে বড় বিনিয়োগকারীরা মার্কেট মেকারের ভূমিকা পালন করবেন বলে কথা দেন।

বিএসইসি বড় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে এমন খবরে টানা ৯ কার্যদিবস দরপতনের পর সোমবার শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে। বৈঠকের পরদিন মঙ্গলবারও ঊর্ধ্বমুখী থাকে বাজার। অবশ্য মঙ্গলবার লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ১০৩ পয়েন্ট বাড়লেও, লেনদেন শেষে সূচকটি বাড়ে ২৯ পয়েন্ট।

এরপর বুধবার শেয়ারবাজারে আবার বড় দরপতন হয়। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭৪ পয়েন্ট কমে যায়। এ পরিস্থিতে বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বড় হতে থাকে দরপতনের তালিকা।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র ২৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৩৩টির ও ২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৭ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৯৮০ পয়েন্টে নেমে গেছে।

প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বড় পতন হয়েছে অপর দুই সূচকের। এরমধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৭ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ১৪৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

মূল্য সূচক কমার পাশাপাশি বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৪১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৭৭৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। সেই হিসেবে লেনদেন কমেছে ৩৩৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৫ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সোনালী পেপারের ১৯ কোটি ৭০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১৬ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফরচুন সুজ।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে মতিন স্পিনিং, ইনট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, কেডিএস এক্সসরিজ, শাহিনপুকুর সিরামিকস এবং স্কয়ার টেক্সটাইল।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২০৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৭১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪০টির এবং ১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।