বিচারপতিদের মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়া রায় পক্ষপাতমূলক: প্রধানমন্ত্রী

SHARE

hasina290প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমে (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স) বিচারপতিদের মর্যাদা বাড়িয়ে উচ্চ আদালতের দেওয়া রায় নৈতিকতা বিরোধী এবং পক্ষপাতমূলক। আজ বুধবার জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সাংসদ সেলিম উদ্দিনের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নিজেরাই নিজেদের মর্যাদা বাড়িয়ে রায় দিয়েছেন, এ রায় কোনো মতেই সমীচীন নয়। এ ধরনের রায় পক্ষপাতমূলক। বিচার বিভাগের এই সিদ্ধান্তের ফলে একটি চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির উপক্রম হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই একটি নিয়মনীতি আছে। আমাদের সংবিধানে বলা আছে, সবাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। আইনসভা, বিচার বিভাগ ও প্রশাসন মিলিয়ে তিনটি স্তম্ভ। এই তিনটি স্তম্ভের সমন্বয়ে সব কিছু চলবে। কিন্তু কেউ যদি নিয়ম না মেনে হঠাৎ করে তাদের ইচ্ছামতো একটি ঘোষণা দিয়ে দেয়, তাতে বিশৃঙ্খলা হয়।”
শেখ হাসিনা আরও বলেন, “আমার অবাক লাগে, কার অবস্থান কোথায়, সেটা সংবিধানে সুনির্দিষ্ট করা আছে। সেখানে যার যার নিজের মর্যাদা নিজে দেওয়া, নিজের পক্ষে নিজের রায় দেওয়া, এটা তো সমীচীন নয়। এ রকম হলে যে যেখানে আছে, যার যার মত করে সুযোগ নেবে। কোনো শৃঙ্খলাই থাকবে না।”

বিচার বিভাগ এর আগে নিজেদের বেতন-ভাতা বাড়িয়ে নেওয়ায় একই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “বেতন-ভাতাও তারা আলাদা একটি কমিশন করে বাড়িয়ে নিয়েছিল। সেটা নিয়েও নানা রকমের সমস্যা হয়েছিল। পরে আমরা বসে মিটমাট করে একটা জায়গায় গিয়েছি। জেলা জজের মর্যাদা যদি সচিবের সমান হয়, তাহলে উচ্চ আদালতে যারা আছেন, তারা কোন মর্যাদায় যাবেন? যেতে যেতে তো মনে হয় তারা রাষ্ট্রপতির ওপরেই চলে যাবেন।”

শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ কোনো বিচ্ছিন্ন দেশ নয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন দেশ কীভাবে চলে, সেটা আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। প্রতিটি ক্ষেত্র যার যার কর্তব্য পালন করবে। বিচার বিভাগ তার দায়িত্ব পালন করবে। সবার মধ্যে সমন্বয় থাকলে রাষ্ট্র সুষ্ঠুভাবে চলবে। সেই জায়গাটা যদি নষ্ট করা হয় এবং সেটা যদি উচ্চ আদালত থেকেই হয়, তবে সেটা দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে আইনমন্ত্রী আলাপ-আলোচনা করছেন। সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আশা করি আমাদের বিচারকরা বিষয়টি বুঝবেন। কোনো আদালত নিজেই নিজেকে প্রমোট করা বা লাভবান হওয়া সম্পূর্ণ নৈতিকতা বিরোধী।”