আগামীতে পেঁয়াজের মূল্য আরো কমবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে ভারত পেঁয়াজ রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। সরকারও পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কৃষকদের প্রণোদনাসহ সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে বাজারে পেঁয়াজের মূল্য কমতে শুরু করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এসংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার।
জবাবে মন্ত্রী আরো বলেন, এই মুহূর্তে পেঁয়াজের দাম বেশি। আমরা দেখেছি ভারত পেঁয়াজ রপ্তারিন ওপর নিষেধজ্ঞা তুলে নিয়েছে। দেশেও পেঁয়াজের মৌসুম শুরু হয়েছে। অন্যান্য দেশেও মৌসুম শুরু হবে। তাই কোনো ক্রমেই পেঁয়াজের দাম ১১০ টাকা থাকবে না। আমি খুবই আশাবাদি পিয়াজের দাম কমে আসবে।
আওযামী লীগের সদস্য এম আব্দুল লতিফের সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সারাদেশে পেঁয়াজ নিয়ে নানা রকম ক্ষোভ ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিলো। এখন স্থিতিশীল পর্যায়ে এসেছে। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয়, তবে আগামীতে পেঁয়াজ নিয়ে কোনো সঙ্কট সৃষ্টি হবে না। যদি আমদানি করতেই হয়, তবে আগে থেকেই আমদানির ব্যবস্থা করা হবে। কৃষকরা যাতে পেঁয়াজের উৎপাদনের ন্যায্য মূল্যে পায়, স্থানীয় পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণের নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, দেশে ২৩ থেকে ২৪ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, কিন্তু চাহিদা রয়েছে ৩০ থেকে ৩২ লাখ মেট্রিক টন। অবশিষ্ট চাহিদা পূরণে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। গত মৌসুমের শুরুতে অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়, ফলে অধিক ঘাটতির সৃষ্টি হয়। এর ওপর পাশ্ববর্তী দেশ ভারত হঠাৎ করে পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির কারণে দেশে হু হু করে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পায়, আমরা বাজারে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। সরকার থেকে দ্রুত চীন, মিশরসহ কয়েকটি দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজের বিষয়টি সরকার এবার গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা ও প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। অতীতের তুলনায় এবার অধিকহারে পেঁয়াজ উৎপাদন হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পেঁয়াজের মৌসুমে আমদানি বন্ধ করে দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনকারী কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্যে পায় সে ব্যবস্থা করা হবে। আমাদের দেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থা নেই। পেঁয়াজ পচনশীল ফসল। এ কারণে মৌসুমে কৃষকরা পেঁয়াজ খুব অল্পমূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। এতে পেঁয়াজ উৎপাদনে তারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। আগামীতে এটা যাতে না হয় সে ব্যাপারে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।