অবরোধ চলবে কতদিন?

SHARE

oborod7২০ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধের পঞ্চম দিন অতিবাহিত হচ্ছে। বিশ্ব ইজতেমার জন্য অবরোধ শিথিল বা প্রত্যাহার হয়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে অবরোধ চলবে। তবে কতদিন চলবে সেটা বলা হয়নি। ইজতেমার মতো ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত না হওয়ায় তা দীর্ঘ সময় চলবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। বিএনপি চেয়াপারসন ও জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ‘ডু অর ডাই’ অবস্থানে রয়েছেন।

বিএনপি ও জামায়াত নেতারা বলছেন, নতুন নির্বাচন নিয়ে সরকার সমঝোতার পরিবেশ সৃষ্টি না করা পর্যন্ত লাগাতার অবরোধ চলবে। দাবি আদায়ে আগামী সপ্তাহে অবরোধের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হতে পারে হরতালও।

তারা জানান, আগামী তিন মাস রাজপথে টানা কর্মসূচিতে মাঠে থেকেই দাবি আদায়ের নির্দেশনা রয়েছে জোটের হাইকমান্ড থেকে। সুনির্দিষ্ট এজেন্ডায় নতুন করে নির্বাচনের উপায় বের না হওয়া পর্যন্ত প্রয়োজনে গুলশান কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ থেকেই দল ও জোটকে নিয়ে আন্দোলন চালাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তবে এর আগে বিএনপিপ্রধান গ্রেফতার হলে অন্য কৌশলে এগুবে বিএনপি জোট।

জোট নেতারা গত কয়েক দিনের আন্দোলন ও প্রভাবশালী গণতান্ত্রিক দেশগুলোর ভূমিকায় আন্দোলনের সাফল্য নিয়ে ইতিমধ্যে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। তাদের বিশ্বাস আলোচনার দিকে না এগোলে সরকার খুব কম সময়ের মধ্যে আরো বেশি চাপে পড়বে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ শুক্রবার বলেছেন, নতুন নির্বাচনের দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলন চলবে। সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার বলে মনে করছেন তিনি।

গত ৬ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে টানা অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে ২০ দল। সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে ইজতেমা উপলক্ষেও অবরোধ শিথিল করেনি আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী দল বিএনপি।

বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা বলেছেন, আন্দোলন দেখে সরকার ইতিমধ্যে বিচলিত হয়ে উঠেছে। এ কারণে তারা ‘গ্রেফতার নীতি’ অবলম্বন করছে। কিন্তু এভাবে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করলে ‘বুমেরাং’ হবে।

দ্রুত নির্বাচনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির শীর্ষ তিন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হচ্ছেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায় ও ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী। শমসের মবিন চৌধুরীকে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে গ্রেফতার করা হয়। তিনি মূলত কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকেন। বিএনপির নেতারা বলছেন, কূটনৈতিক তৎপরতা ‘দমিয়ে’ দিতেই শমসের মবিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, নতুন নতুন কৌশল প্রয়োগ করে আন্দোলন পরিকল্পনা সামনে এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়ে পুরো দেশ থেকে ঢাকা বিচ্ছিন্ন রাখার চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি বুঝে রাজধানীতে আন্দোলন কঠোর করা হবে।

দলের নেতারা বলছেন, তৃণমূলপর্যায়ে আন্দোলন দানা বেঁধে উঠছে। দিন যত যাবে তীব্রতা তত বাড়বে। আর ঢাকায় তীব্র আন্দোলনের মধ্য দিয়েই চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করবে। দাবি আদায়ে সফলও হবে বিএনপি।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার অবৈধ বন্দুকধারীদের মতো দেশ শাসন করছে। কোনো বেআইনি সরকার এভাবে দেশ পরিচালনার অধিকার রাখে না। তিনি দেশবাসী ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের অবরোধ কর্মসূচি সব শক্তি দিয়ে সফল করার আহ্বান জানান।