স্ত্রী হারানো ফরিদের সেই হৃদয়বিদারক গল্পটি শুনলেন প্রিন্স উইলিয়াম

SHARE

নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে নিহত হয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশি হুসনে আরা পারভীন। গোলাগুলির খবর পেয়ে স্বামী ফরিদ আহমদকে বাঁচাতে ছুটে গিয়েছিলেন এই সিলেটি নারী। ঠিকই বাঁচিয়েছিলেন প্রিয়জনকে। কিন্তু নিথর পড়ে ছিল পারভীনের দেহ। ব্রিটেনের প্রিন্স উইলিয়াম ক্রাইস্টচার্চ সফরে গেলে সেখানে স্ত্রী হারানোর করুণ গল্পটি তুলে ধরেন ফরিদ আহমদ। তার হৃদয়বিদারক ঘটনাটি শোনেন ডিউক অব ক্যামব্রিজ।

গতমাসে এক শুক্রবার নামাজের সময় মসজিদে প্রবেশ করে গুলিবর্ষণ করা হয়। ফরিদ জানান, তার স্ত্রী হামলার স্থানে এসে কয়েকটা শিশুসহ একদল মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। সেখানেই গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান তিনি।

আল নূর মসজিদে গিয়েছিলেন প্রিন্স। তাকে সেই ঘটনা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। ধরে আসা কণ্ঠ নিয়ে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমার হৃদয় ব্যথিত। আমি সেই যন্ত্রণা এখনো অনুভব করি। আমি আমার স্ত্রীকে হারিয়েছি। আমি এখানে অনেক মানুষকে হারিয়েছি। আমি ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি বলতে চাই, আপনারা কেউ একা নন। আমরা সবাই আপনার যন্ত্রণা ভাগ করে নেবো। আমরা সবাই এক। গোটা বিশ্ব আপনাদের সাথে আছে’।

শান্তির জন্যে গোটা সমাজকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্দোষ প্রাণগুলো রক্ষা করাই আমাদের মিশন’।

তিনি নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন ধন্যবাদ জানান। আরডার্ন দেখিয়েছেন ‘যদি আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকেন তবে শোককে আশায় পরিণত করা যায়’।

উইলিয়ারকে তিনি গোটা বিশ্বে ‘অনুপ্রেরণা’র প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেন। বলেন, ‘আমরা আপনার জন্যে প্রার্থনা করি যেন আল্লাহ আপনাকে বিশ্বের মানুষের কাছে শান্তি, নিরাপত্তা এবং আশার আলোকবর্তিকা হিসেবে উপস্থাপন করেন’।

তারও আগে আল নূর মসজিদের ইমাম গামেল ফৌদা মসজিদটিকে ‘ভালোবাসার স্থান’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে সকল মুসলিমকের কাছে, বিশ্বের সকল মানুষের কাছে, এটি ভালোবাসার স্থান। এটি সহমর্মিতা ও দয়াশীলতার স্থান’।

ডিউকের উপস্থিতিতে নিজ বক্তব্য তিনি বলেন, ‘নিউ জিল্যান্ড ভঙুর নয়। আমরা এই স্থানকে ভালোবাসি, আমরা আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে ভালোবাসি, আমরা নিউ জিল্যান্ডারদের ভালোবাসি’।
সূত্র: ইন্ডিপেনডেন্ট