আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সংসদের বেশিরভাগ আসনে বিজয়ী হয়ে আবারও রাষ্ট্রক্ষমতায় আসতে পারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। লন্ডনভিত্তিক ‘ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে’র (ইআইইউ) বাংলাদেশ বিষয়ক এক প্রতিবেদনে এমন আভাস দেওয়া হয়েছে। গত ৪ ডিসেম্বর প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের সুদৃঢ় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখায় ২০১৮ সালের শেষ দিকে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে পারে।
এছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে এবং বেসরকারি খাতের ভোগ ও মোট স্থায়ী বিনিয়োগের ব্যাপক বৃদ্ধির ওপর ভর করে ২০১৮-১৯ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশের প্রকৃত মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) গড়ে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ করে বাড়বে বলেও প্রতিবেদনে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় বেশ কিছু মতামত জরিপে শেখ হাসিনাকেই এখন পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা হিসেবে দেখা গেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অসাধারণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি আসন্ন নির্বাচনের প্রচারণায় বিরোধী দলের পিছিয়ে থাকার কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব কারণে আওয়ামী লীগকে ঠেকানোর মতো যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ বিএনপি বা আরো বড় পরিসরে দেখলে ঐক্যফ্রন্ট তৈরি করতে সক্ষম হবে না।
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগের জয় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দেবে এবং এটা অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বিস্তৃত ও জোরালো করতে প্রশাসনের প্রচেষ্টায় সহায়ক হবে।
এ নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে তার কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোকে ব্যবহার করে ভারত, চীন ও জাপানের কাছ থেকে আরও বেশি ছাড় ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আদায় করে নিতে পারবে বলেও প্রতিবেদনে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পর্কে তেমন উন্নয়ন হবে না উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট ঘিরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে মাঝারি ধরনের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে এবং সম্ভাব্য যে সময়সীমাকে বিবেচনায় নিয়ে পূর্বাভাসমূলক এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে তার অন্তত প্রথম ভাগ পর্যন্ত রোহিঙ্গা সংকট এখনকার মতোই তীব্র থাকবে।
প্রসঙ্গত, ‘ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট’ লন্ডনভিত্তিক ‘দি ইকোনমিস্ট গ্রুপ’-এর একটি প্রতিষ্ঠান। প্রভাবশালী সাময়িকী ‘দি ইকোনমিস্ট’ও এই গ্রুপেরই প্রতিষ্ঠান।