অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম অধীর আগ্রহে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছেন। এর পাশাপাশি সম্মানের সঙ্গে নিজের জুতো জোড়া তুলে রাখার (বিদায় নেয়ার) স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
বৃধবার (৬ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা জানান।
স্ট্যাটাসে শফিকুল আলম লেখেন, একটি জাতির জীবনে ছয় মাস বড় কোনো সময় না। কিন্তু, আমার কাছে এ সময়টা যেন অনন্তকাল। আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের জন্য। সেই সাথে সম্মানের সঙ্গে নিজের জুতো জোড়া তুলে রাখার (বিদায় নেয়ার) স্বপ্ন। আমাকে কি একটি মর্যাদাপূর্ণ বিদায় দেওয়া হবে? শুধু উপরওয়ালাই জানেন।
তিনি লেখেন, গত ১২ মাসে আমি নিজের জন্য খুব কমই অবসর পেয়েছি। মাঝেমধ্যে সময় ফাঁকি দিয়ে চলে যেতো। প্রতিটি মিনিট মনে হয়েছে এক একটি মাসের মতো। প্রতিটি দিন যেন একটি বছর!
প্রেস সচিব লেখেন, আমার পরবর্তী জন্মদিনে কী করবো? ঠিক জানি না। মস্তিষ্কের একপাশ আমাকে সাংবাদিকতা চালিয়ে যেতে বলে। অন্যপাশ আবার টাকা কামাতে চায়- গত এক বছরের হারিয়ে যাওয়া সুযোগগুলোর ক্ষতিপূরণ করতে। হৃদয়ের ডানপাশ বলে, ঢাকার অলিগলি ধরে হাঁটো, মানুষের গল্প লেখো। প্রতিটা অলি-গলির মধ্যেই জিন্দাবাহারকে দেখতে! আর বাম পাশ চায়, এই দেশটা ঘুরে দেখো। কম খরচে, ব্যাটারিচালিত ভ্যান-রিকশায় করে!
স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, অনেক আগেই একটা পরিকল্পনা করেছিলাম। বাংলাদেশের মারাত্মক রেললাইন আর স্টেশনগুলো নিয়ে একটা বই লিখবো, যেখানে দেশের সবচেয়ে কম আলোয় আসা কিছু হত্যার গল্প লুকিয়ে আছে। সেই বিস্মৃত স্বপ্নটা কি কখনো পূরণ হবে? বাংলাদেশ খুব বড় দেশ নয়। কিন্তু কেউ যদি তার পিতা ও পূর্বপুরুষদের পদচিহ্ন অনুসরণ করে, তবে এই যাত্রাপথ আর ইতিহাসের মহাকাব্যগুলো কখনো ফুরায় না। দুঃখজনক হলো, আমাদের কোনো পল থেরু (Paul Theroux) নেই, নেই প্যাট্রিক লি ফার্মার (Patrick Leigh Fermor)-এর মতো কেউ নেই।
প্রেস সচিব আরও লেখেন, বাংলাদেশ, তার নদী, গ্রামীণ ছোট রাস্তার দীর্ঘ জাল, চায়ের দোকানে বসে থাকা মানুষ, সুফি দরগায় উপাসনা করা অথবা বটগাছের নিচে ঘুমিয়ে থাকা প্রাণ, এসবই আমার জীবনের চিরকালীন মোহ। কিন্তু এই তৃষ্ণা মেটাতে দরকার সময় ও অর্থ। আমার প্রিয় লেখক বিভূতি ২০ শতকের মাঝামাঝি সময়ে গ্রামবাংলার পথের গান আর গ্রামে ট্রেনের আগমনের গল্প নিয়ে লিখেছেন। আমি কি এই ২১ শতকের শুরুর দিকের বাংলা বদ্বীপের কোনো পথের গান লিখতে পারবো?