ভারতের ওপর আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত সরকার। এই পদক্ষেপকে অন্যায়, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য বলেছে নয়াদিল্লি।
রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিয়ে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় ভারতের রপ্তানিপণ্যের উপর মোট শুল্ক দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ, যা এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। এই শুল্ক বৃদ্ধির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের টেক্সটাইল, অটো পার্টস, টায়ার, কেমিক্যাল, কৃষি-রাসায়নিক ও হীরার মতো রপ্তানিপণ্যগুলোর উপর ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে। এতে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য ভারসাম্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে ও সরবরাহ শৃঙ্খলাতেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আমরা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, রাশিয়া থেকে ভারতের জ্বালানি আমদানি বাজারভিত্তিক ও ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে শুধু ভারতকে লক্ষ্য করে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা অত্যন্ত দুঃখজনক।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা আবারও জোর দিয়ে বলছি- এ ধরনের পদক্ষেপ অন্যায়, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য। ভারত জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।
এর আগেও ভারত জানিয়েছিল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র নিজেই রাশিয়া থেকে আমদানি চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করেছিল। এমনকি, ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্যেও কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপের বাণিজ্যে শুধু জ্বালানি নয়, রয়েছে সার, খনিজ, রাসায়নিক, ইস্পাত, যন্ত্রপাতি ও পরিবহন সরঞ্জাম। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এখনো রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড, প্যালেডিয়াম, সার ও রাসায়নিক আমদানি করছে। সেই প্রেক্ষাপটে শুধু ভারতকে লক্ষ্যবস্তু করাটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
এদিকে, ভারতকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প বলেছেন, ভারত কখনোই ভালো বাণিজ্য সহযোগী ছিল না। আমরা ২৫ শতাংশে রাজি হয়েছিলাম, কিন্তু আমি সেটি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি, কারণ তারা রাশিয়ার তেল কিনছে।
সিএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ভারত রাশিয়ার তেল কিনছে ও রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রকে জ্বালানি দিচ্ছে। যদি তারা সেটাই করে, তাহলে আমি সন্তুষ্ট হতে পারি না।
বুধবার (৬ আগস্ট) স্বাক্ষরিত এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প বলেন, রাশিয়া সরকারের কর্মকাণ্ড ও নীতিমালা এখনো যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতির জন্য একটি অস্বাভাবিক ও গুরুতর হুমকি। এই জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতের আমদানি পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা প্রয়োজন ও যুক্তিসঙ্গত।