ক্রিকেট খেলা খুব সহজ সমীকরণ মেনে চলে। অত কিছু নিয়ে মাথা না ঘামালেও চলবে, শুধু প্রতিপক্ষের চেয়ে এক রান বেশি করলেই চলবে। কিন্তু আজ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই কাজটিই করতে পারছে না। অধিকাংশ বলেই কোনো রান নিতে পারছে না বাংলাদেশ। দলের স্কোর ১০০ পেরোনোর আগেই ডট বলের সেঞ্চুরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও জেগেছিল! ৪৪.৩ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ডট বল দিয়েছেন ১৫৪টি। প্রায় ২৬ ওভারই ডট!
টসে জিতে বাংলাদেশের ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্তে এখনো মাথা চুলকাচ্ছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকেরা। যাঁদের পক্ষে সম্ভব তাঁরা ধারাভাষ্য কক্ষে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। অন্যরা টুইটের আশ্রয় নিয়েছেন। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে পরে ব্যাটিং সুবিধাজনক জেনেও এমন সিদ্ধান্ত ম্যাচের ফলে কেমন প্রভাব ফেলে সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে এখনো পর্যন্ত যা দেখা গেছে, বাংলাদেশের ব্যাটিং মনঃপূত হচ্ছে না।
অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের কৃতিত্ব দিতেই হবে। অধিনায়কের সমালোচনার পর যেন জ্বলে উঠেছেন তাঁরা। বোলিং মেশিনের মতো মাপা বোলিং করে যাচ্ছেন। একেবারে পরিকল্পনা মেনে। উইকেটও ব্যাটিংয়ের জন্য সহায়ক মনে হচ্ছে না। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা কঠিন। মাত্র ১৩টি বাউন্ডারি (তামিম একাই মেরেছেন ৯টি) বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের ধরনের সঙ্গে যায় না। কিন্তু তাই বলে এতগুলো ডট! কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
কন্ডিশন যেমনই হোক, স্ট্রাইক রোটেট করলেই ব্যাটিংয়ের ওপর থেকে চাপ সরে যায়। মাঠে জায়গা করে নিয়ে সিঙ্গেল বা ডাবলস নেওয়ার মতো স্কিল তো বাংলাদেশের সব ব্যাটসম্যানেরই আছে। একের পর এক ডট বল মানেই নিজেদের ওপর চাপ টেনে আনা। বাংলাদেশের প্রথম ২৫ ওভারের মধ্যে ১৪ ওভারেই কমপক্ষে চারটি বল ডট ছিল!
২৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলের পর অদ্ভুত এক দৃশ্য দেখা গেল। বাংলাদেশের রান ৯৯, কোনো রান নিতে পারেনি এমন বলের সংখ্যাও ৯৯! ৩১ ওভার শেষে সে ডট সংখ্যা দাঁড়াল ১১১তে। রান অবশ্য একটু বেড়েছে, ১২৭। জশ হ্যাজলউড, মিচেল স্টার্ক কিংবা প্যাট কামিন্সের গতির সামনে এমন কন্ডিশনে রান বের করতে না পারার কারণ খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। ৯ বলের মধ্যে চার উইকেট নিলেও পুরো ইনিংস জুড়েই ত্রাস ছড়িয়েছেন স্টার্ক। তাঁর ৮.৩ ওভারে ৩৫টি ডট বল তাই মেনে নিতে হচ্ছে। কিংবা আরেক গতি দানব কামিন্সের বলে ৩২টি ডট বল। তবে ট্রাভিস হেডের ৪৮ বলের ২৭টিতে স্ট্রাইক রোটেট করতে না পারার অজুহাত খুঁজে বের করা মুশকিল।