ধরাছোঁয়ার বাইরে ৮৮ শতাংশ অ্যাসিড সন্ত্রাসী

SHARE

520দেশে অ্যাসিড সন্ত্রাসের ঘটনা কমলেও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হচ্ছে না। গত ১৩ বছরে ( ২০০২ সাল থেকে ২০১৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত) অ্যাসিড সহিংসতার ঘটনায় সারাদেশে দায়েরকৃত দুই হাজারেরও বেশি মামলায় পাঁচ হাজারেরও বেশি আসামি অভিযুক্ত হলেও শতকরা ৮৮ ভাগ আসামি পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে। মাত্র ১২ শতাংশ আসামিকে গ্রেফতার হয়েছে।

শুধু তাই নয়, দায়েরকৃত মামলার বিচারে সাজার চিত্র আরো করুণ। শতকরা মাত্র ৯ ভাগ মামলার রায়ে আসামিদের সাজা হয়েছে। গত ১৩ বছরে ১৪ জনের মৃত্যুদণ্ড হলেও একটি মৃত্যুদণ্ডাদেশও কার্যকর হয়নি। অ্যাসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশন (এএসএফ) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অ্যাসিড ভিকটিমদের অভিযোগ তারা ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না। আদালতে আসামিদের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পরও তারা গ্রেফতার হচ্ছে না। অনেক সময় জামিনে বেরিয়ে এসে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে।

বিচারপতি, আইনজীবী ও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যাসিড সন্ত্রাস দমনে দেশে অ্যাসিড অপরাধ দমন ২০০২ ও অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০২ প্রণীত হলেও আইন দুটির সঠিক বাস্তবায়নের অভাবে অ্যাসিডের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ও অ্যাসিড সহিংসতা পুরোপুরি রোধ করা ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।

তারা বলেন, মামলা দায়ের থেকে শুরু করে তদন্ত ও বিচার চলাকালীন অভিযোগকারী পক্ষ হিসেবে রাষ্ট্রকে মামলার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হয়। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের অধিক ইতিবাচক ভূমিকা আক্রান্ত ব্যক্তির ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে সহায়ক হলেও বাস্তবে তা হচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হওয়ায় ভিকটিমরা হতাশাগ্রস্ত হলেও গত ১৩ বছরে অ্যাসিড সন্ত্রাস কমেছে। ২০০২ সালে দেশে অ্যাসিড আক্রমণের ৪৯৪টি ঘটনায় ৪৯৬ জন আক্রান্ত হলেও ২০১৫ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ৫৬টি ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ জন। যদিও কেউ আক্রমণের শিকার হোক এটা কাম্য নয়- তবুও আগের চেয়ে পরিস্থিতির উন্নতি অ্যাসিড সন্ত্রাস দমনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পুলিশ সদর দফতরের অ্যাসিড অপরাধ দমন মনিটরিং সেলের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০০২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অ্যাসিড সহিংসতার ঘটনায় ২০১৯টি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৪১৭ জন। তন্মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন মাত্র ৬৪৭ জন।

acid
পুলিশ বিভাগ ১২শ’টি মামলায় অভিযোগপত্র ও ৮০১টি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। ৫৪০টি মামলায় ১ হাজার ৮০৯ জন অভিযুক্ত খালাস পেয়েছে। ১৮৫টি মামলায় ৩২৫ জন অভিযুক্ত আসামি সাজা পেয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১১৭ জনের যাবজজ্জীবন, ও বিভিন্ন মেয়াদে ১৮৬ জন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন।

শনিবার রাজধানীর মহাখালীর ব্রাক ইন সেন্টারে এএসএফ আয়োজিত এক সম্মেলনে বিচারপতি মো. ঈমান আলী বলেন, সারভাইভারদের প্রতি অবিচার যদি কোনভাবে হয়, সেটা বিচার বিভাগের কলঙ্ক।

আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইনে তদন্ত, সাক্ষী ও বিচারের সময় নির্দিষ্ট এবং যদি তদন্ত যথাসময়ে শেষ না হয় তবে সেটা তদন্তকারীর ব্যর্থতা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা আছে, কিন্ত সমস্যা হলো পর্যাপ্ত মনিটরিং নেই, বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কতটুকু প্রাধান্য দিয়ে মামলা শেষ করছে সেটাও মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, অ্যাসিডের দাগ দৃশ্যমান এবং এক্ষেত্রে ফাইনাল রিপোর্ট কিভাবে দেয়া হয় আমার বোধগম্য নয়। উচ্চ আদালত থেকে আসামির জামিন প্রদান বিষয়ে কোন মনিটরিং নেই, এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে জানাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে প্রধান বিচারপতিকে জানানো যাতে উচ্চ আদালতে বিচারাধীন মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নেয়া যায়।

আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাসরিন বেগম (লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ) জানান, অ্যাসিড অপরাধের মামলা ৯০ দিনেই শেষ করতে  হবে, এক্ষেত্রে আইনে ভিন্ন কোনো নির্দেশনা নেই।

নিজস্ব বিচারিক কার্যক্রমের অভিজ্ঞতার উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি দেখেছি সাক্ষী আনা সম্ভব হয়, কিন্তু ডাক্তার আনা সম্ভব হয় না। সঠিকতথ্য মামলার ফলাফল নির্ধারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তথ্য বিভ্রাট বিষয়ে তিনি পিপি (পাবলিক প্রসিকিউশন), পুলিশ, আইনজীবী, বেসরকারি সংস্থা এবং সারভাইভারদের সজাগ দৃষ্টি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।দেশে অ্যাসিড সন্ত্রাসের ঘটনা কমলেও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হচ্ছে না। গত ১৩ বছরে ( ২০০২ সাল থেকে ২০১৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত) অ্যাসিড সহিংসতার ঘটনায় সারাদেশে দায়েরকৃত দুই হাজারেরও বেশি মামলায় পাঁচ হাজারেরও বেশি আসামি অভিযুক্ত হলেও শতকরা ৮৮ ভাগ আসামি পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে। মাত্র ১২ শতাংশ আসামিকে গ্রেফতার হয়েছে।

শুধু তাই নয়, দায়েরকৃত মামলার বিচারে সাজার চিত্র আরো করুণ। শতকরা মাত্র ৯ ভাগ মামলার রায়ে আসামিদের সাজা হয়েছে। গত ১৩ বছরে ১৪ জনের মৃত্যুদণ্ড হলেও একটি মৃত্যুদণ্ডাদেশও কার্যকর হয়নি। অ্যাসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশন (এএসএফ) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অ্যাসিড ভিকটিমদের অভিযোগ তারা ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না। আদালতে আসামিদের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পরও তারা গ্রেফতার হচ্ছে না। অনেক সময় জামিনে বেরিয়ে এসে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে।

বিচারপতি, আইনজীবী ও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যাসিড সন্ত্রাস দমনে দেশে অ্যাসিড অপরাধ দমন ২০০২ ও অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০২ প্রণীত হলেও আইন দুটির সঠিক বাস্তবায়নের অভাবে অ্যাসিডের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ও অ্যাসিড সহিংসতা পুরোপুরি রোধ করা ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।

তারা বলেন, মামলা দায়ের থেকে শুরু করে তদন্ত ও বিচার চলাকালীন অভিযোগকারী পক্ষ হিসেবে রাষ্ট্রকে মামলার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হয়। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের অধিক ইতিবাচক ভূমিকা আক্রান্ত ব্যক্তির ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে সহায়ক হলেও বাস্তবে তা হচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হওয়ায় ভিকটিমরা হতাশাগ্রস্ত হলেও গত ১৩ বছরে অ্যাসিড সন্ত্রাস কমেছে। ২০০২ সালে দেশে অ্যাসিড আক্রমণের ৪৯৪টি ঘটনায় ৪৯৬ জন আক্রান্ত হলেও ২০১৫ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ৫৬টি ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ জন। যদিও কেউ আক্রমণের শিকার হোক এটা কাম্য নয়- তবুও আগের চেয়ে পরিস্থিতির উন্নতি অ্যাসিড সন্ত্রাস দমনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পুলিশ সদর দফতরের অ্যাসিড অপরাধ দমন মনিটরিং সেলের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০০২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অ্যাসিড সহিংসতার ঘটনায় ২০১৯টি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৪১৭ জন। তন্মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন মাত্র ৬৪৭ জন।

acid
পুলিশ বিভাগ ১২শ’টি মামলায় অভিযোগপত্র ও ৮০১টি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। ৫৪০টি মামলায় ১ হাজার ৮০৯ জন অভিযুক্ত খালাস পেয়েছে। ১৮৫টি মামলায় ৩২৫ জন অভিযুক্ত আসামি সাজা পেয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১১৭ জনের যাবজজ্জীবন, ও বিভিন্ন মেয়াদে ১৮৬ জন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন।

শনিবার রাজধানীর মহাখালীর ব্রাক ইন সেন্টারে এএসএফ আয়োজিত এক সম্মেলনে বিচারপতি মো. ঈমান আলী বলেন, সারভাইভারদের প্রতি অবিচার যদি কোনভাবে হয়, সেটা বিচার বিভাগের কলঙ্ক।

আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইনে তদন্ত, সাক্ষী ও বিচারের সময় নির্দিষ্ট এবং যদি তদন্ত যথাসময়ে শেষ না হয় তবে সেটা তদন্তকারীর ব্যর্থতা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা আছে, কিন্ত সমস্যা হলো পর্যাপ্ত মনিটরিং নেই, বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কতটুকু প্রাধান্য দিয়ে মামলা শেষ করছে সেটাও মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, অ্যাসিডের দাগ দৃশ্যমান এবং এক্ষেত্রে ফাইনাল রিপোর্ট কিভাবে দেয়া হয় আমার বোধগম্য নয়। উচ্চ আদালত থেকে আসামির জামিন প্রদান বিষয়ে কোন মনিটরিং নেই, এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে জানাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে প্রধান বিচারপতিকে জানানো যাতে উচ্চ আদালতে বিচারাধীন মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নেয়া যায়।

আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাসরিন বেগম (লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ) জানান, অ্যাসিড অপরাধের মামলা ৯০ দিনেই শেষ করতে  হবে, এক্ষেত্রে আইনে ভিন্ন কোনো নির্দেশনা নেই।

নিজস্ব বিচারিক কার্যক্রমের অভিজ্ঞতার উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি দেখেছি সাক্ষী আনা সম্ভব হয়, কিন্তু ডাক্তার আনা সম্ভব হয় না। সঠিকতথ্য মামলার ফলাফল নির্ধারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তথ্য বিভ্রাট বিষয়ে তিনি পিপি (পাবলিক প্রসিকিউশন), পুলিশ, আইনজীবী, বেসরকারি সংস্থা এবং সারভাইভারদের সজাগ দৃষ্টি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।