বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গা অভিবাসী বা আশ্রয়প্রার্থীদের বহনকারী বোটগুলোকে সমুদ্রে ফিরিয়ে দেয়া বন্ধ করতে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার প্রতি আহবান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে দেশ তিনটির প্রতি এ আহ্বান জানিয়ে এইচআরডব্লিউ বলেছে, আশ্রয়প্রার্থীদেরকে তীরে নিয়ে গিয়ে জরুরি ভিত্তিতে তাদের যেসব সহায়তা প্রয়োজন অবিলম্বে সেগুলো সরবরাহ করা উচিত।
এদিকে বার্মা (মিয়ানমার) সরকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর অব্যাহত নিপীড়ন চালানোর মাধ্যমে এ সঙ্কট সৃষ্টি করেছে বলেও মন্তব্য করেছেন সংস্থাটির এশিয়া বিষয়ক ডেপুটি-পরিচালক ফিল রবার্টসন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার (আইওএম) দেয়া তথ্যানুযায়ী, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র উপকূলসমূহে বোটে ভাসছেন ৮ হাজার বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গা অভিবাসী। তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার, পানি বা স্যালাইন কিছুই নেই।
এমন খবরে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এইচআরডব্লিউ।
ফিল রবার্টসন বলেছেন, বার্মা (মিয়ানমার) সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর অব্যাহত নিপীড়ন চালানোর মাধ্যমে এ সঙ্কট সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া কর্তৃপক্ষ বোটে আসা অভিবাসীদের এ প্রবাহকে ফিরিয়ে দেয়ার নির্মম নীতি গ্রহণের মাধ্যমে সে সমস্যাকে আরও ঘনীভূত করেছে, যা হাজার হাজার জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলেছে।
অন্য দেশের সরকারসমূহের উচিত এই তিন সরকারকে একসঙ্গে কাজ করে মরিয়া এ মানুষগুলোকে উদ্ধারের আহ্বান জানানো এবং তাদের মানবিক ত্রাণ সরবরাহ করা। যাদের আন্তর্জাতিকভাবে সুরক্ষা প্রয়োজন, তাদের দাবিসমূহ প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে সহযোগিতা করা এবং তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
ফিল রবার্টসন আরও বলেছেন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া নৌবাহিনীর উচিত মানব সন্তানদের নিয়ে ত্রিমুখী পিং-পং খেলা বন্ধ করা। বরং, তাদের উচিত এসব দুর্ভাগ্যপীড়িত বোটগুলো থেকে সবাইকে উদ্ধারে একসঙ্গে কাজ করা।
তিনি বলেন, এ সরকারসমূহকে বিশ্ব মূল্যায়ন করবে তারা কিভাবে ভীষণভাবে অরক্ষিত এ পুরুষ, নারী ও শিশুদের সঙ্গে আচরণ করে, তার নিরীখে।
যদি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো বার্মা থেকে রোহিঙ্গাদের গণপলায়নের ঘটনায় সত্যিকারার্থে উদ্বিগ্ন হয়ে থাকে, তাদের উচিত অবিলম্বে বার্মাকে তার সবচেয়ে অরক্ষিত জনসংখ্যার বিরুদ্ধে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের আবসান ঘটানোর দাবি জানানো।
রবার্টসন বলেন, বৈষম্যমূলক নীতিসমূহের অবসান এবং পূর্ণ নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করা, যাতে রোহিঙ্গারা নিরাপদে এবং মর্যাদার সঙ্গে আরাকান রাজ্যে তাদের বাড়ি ফিরতে পারে, সেটা হবে শুরু করার জন্য ভালো একটি পদক্ষেপ।