মালয়েশিয়া উপকূলে সোমবার উদ্ধার হওয়া হাজারোধিক অভিবাসীর মধ্যে ৫৫৫ জনই বাংলাদেশি বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। বাকিদের মধ্যে ৪৬৩ জন রোহিঙ্গা বলেও নিশ্চিত করেছে তারা।
সোমবার সকালে দেশটির লংকাবি দ্বীপের সমুদ্র সৈকতের কাছ থেকে তিনটি বড় নৌকা থেকে ওই অভিবাসীদের আটক করে স্থানীয় কোস্টকার্ড ও পুলিশ। নৌকা তিনটিতে মোট এক হাজার ১৮ অভিবাসী ছিলেন।
লংকাবি পুলিশের পুলিশ প্রধান হারিথ কম আবদুল্লাহ বলেন, তিনটি নৌকা থেকে উদ্ধার হওয়া এই ১০১৮ অবৈধ অভিবাসীর মধ্যে ৫৫৫ জনই বাংলাদেশি। আর ৪৬৩ জন রোহিঙ্গা এবং বাকিরা এ অঞ্চলেরই কোনো দেশের বাসিন্দা। এদের মধ্যে আবার ৯৯ জন নারী ও ৫৪ জন শিশু।
হারিথ আবদুল্লাহ জানান, অবৈধভাবে মালয়েশিয়ার মাটিতে পা রাখা এই লোকদের শিগগির অভিবাসন অধিদফতরের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র তথ্য মতে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে প্রায় ২৫ হাজার বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা মানবপাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে, অথবা লাশ হয়েছে।
সোমবার মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষের এ খবরের পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়াও জানিয়েছে, এদিন দেশটির উত্তর-পশ্চিম উপকূলের আচেহ প্রদেশের জলসীমায় পৌঁছানো একটি বড় নৌকা থেকে বাংলাদেশিসহ প্রায় ৪০০ অভিবাসীকে উদ্ধার করে স্থানীয় কোস্টকার্ড ও পুলিশ। বঙ্গোপসাগরের ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ আন্দামান ও নিকোবারের কাছাকাছি আচেহ ভূখণ্ডের অবস্থান।
প্রদেশটির অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী বিভাগের প্রধান বুদিওয়ান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, উদ্ধার এ ৪০০ অভিবাসীর মধ্যে মায়ানমারের রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিরা রয়েছেন। তবে, এদের মধ্যে কতোজন রোহিঙ্গা ও কতোজন বাংলাদেশি রয়েছেন তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি বুদিওয়ান।
এর আগে, রোববার (১০ মে) আচেহ উপকূলে ম্যানতাং পুনতংগামী দু’টি নৌকা থেকে ৬০০ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে কোস্টগার্ড ও পুলিশ। এদের আটকের কথা নিশ্চিত করেন জাকার্তায় নিযুক্ত আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ডেপুটি চিফ অব মিশন স্টিভ হ্যামিল্টন। তিনি জানান, নারী ও শিশুসহ একটি নৌকায় ৪৩০ জন ছিল, আরেকটিতে ছিল ৭০ জন।
সম্প্রতি মানবপাচারকারীদের হাতে জিম্মি হয়ে বাংলাদেশিসহ অভিবাসীদের প্রাণ হারানোর ঘটনায় পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় তোলপাড় চলছে। বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে জনসাধারণের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া এই দালালদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে এরই মধ্যে কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ। কিন্তু প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপের মধ্যেই ইন্দোনেশিয়া উপকূলে দফায় দফায় অভিবাসী উদ্ধারের খবর আসছে।