যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য পারমাণবিক চুক্তি হলেও ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম স্থগিত করবে না—সোমবার এমনটাই জানিয়েছেন ইরানি কর্মকর্তারা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই স্পষ্ট করে বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তিন বছরের জন্য স্থগিত রাখার যে খবর ছড়িয়েছে, তা ‘পুরোপুরি ভিত্তিহীন’।
তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ওমানের মধ্যস্থতায় রোমে অনুষ্ঠিত পঞ্চম দফার বৈঠকের তিন দিন পর এই মন্তব্য আসে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম মেনে নিতে পারবে না। অন্যদিকে, ইরানও যুক্তরাষ্ট্রের এমন ‘লাল রেখা’ মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
বাঘাই বলেন, “ইরান কখনোই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম স্থগিত করতে রাজি হবে না।” তিনি আরও জানান, তেহরান এখন ওমানের কাছ থেকে ষষ্ঠ দফা আলোচনার সম্ভাব্য সময়সূচি ও আলোচ্য বিষয়ের বিষয়ে বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় রয়েছে, যেখানে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সমঝোতার পথ খোঁজা হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট মাথায় রেখে ইরান তার কঠোর অবস্থান বজায় রেখেছে। প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এক সরকারি বিবৃতিতে জানান, প্রয়োজনে ইরান আলোচনা ছাড়তেও প্রস্তুত। সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, “যদি তারা আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে বা নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাহলেও আমরা বাঁচার পথ খুঁজে নেব। চুক্তি ছাড়াও আমরা টিকে থাকতে পারব।”
বিভিন্নমুখী বার্তা
তেহরান যেখানে কঠোর অবস্থান বজায় রেখেছে, সেখানে ওয়াশিংটনের বার্তা ছিল অপেক্ষাকৃত আশাব্যঞ্জক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রবিবার বলেন, আলোচনা ‘খুব, খুব ভালো’ হয়েছে এবং আগামী দুই দিনের মধ্যেই একটি ঘোষণা আসতে পারে।
তিনি বলেন, “দেখা যাক কী হয়, তবে আমার মনে হয় ইরান ইস্যুতে ইতিবাচক কিছু আসছে। আমরা বাস্তব এবং গুরুত্ব সহকারে অগ্রগতি করছি।”
পঞ্চম দফা আলোচনার পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচিও আলোচনায় ‘অগ্রগতির ইঙ্গিত’ দিয়েছেন।
দুই পক্ষের এই আশাবাদী মন্তব্য থেকেই গণমাধ্যমে গুঞ্জন ওঠে, একটি অস্থায়ী চুক্তি হতে পারে যা পরবর্তীতে চূড়ান্ত সমঝোতার ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। তবে মুখপাত্র বাঘাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, “অস্থায়ী কোনো চুক্তির কথাও আমাদের আলোচনায় নেই। আমেরিকার সদিচ্ছা থাকলে আমরা আশাবাদী। কিন্তু আলোচনার উদ্দেশ্য যদি হয় আমাদের অধিকার খর্ব করা, তাহলে তা কোনো ফল দেবে না।”