পিয়ানো বাজিয়ে আজান: বিতর্কে মালয়েশীয় ব্লগারের ভিডিও

SHARE

piyanoপিয়ানো বাজিয়ে অশুদ্ধ ভাষায় আজানের এক ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন একজন বিতর্কিত মার্কিন-প্রবাসী মালয়েশিয়ান ব্লগার।

এ্যালভিন ট্যান নামের এই চীনা-বংশোদ্ভূত ব্লগারের নানা ধরণের পোস্ট এর আগেও সমালোচিত হয়েছে। তিনি নিজেকে নানা সময় ‘সেক্স-ব্লগার’, ‘এজেন্ট প্রোভোকেটিউর’, ‘সমস্যা-সৃষ্টিকারী’ এবং ‘বাকস্বাধীনতার জন্য আন্দোলনকারী’ ইত্যাদি বলে পরিচয় দিয়েছেন।

মি. ট্যান এক বছর আগে আমেরিকায় পালিয়ে যান এবং এখন তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় বাস করছেন। সেখান থেকেই সবশেষ এই ‘আজান’ ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি।

এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, খালি গায়ে সানগ্লাস-পরা ট্যান পিয়ানো বাজিয়ে আজানের কথাগুলো ভুলভাল ভাষায় গাইছেন – যা হলো মুসলমানদের দিনের নির্দিষ্ট সময়ে নামাজ পড়ার আহ্বান।

ভিডিওর নিচে মি. ট্যান আবার লিখে দিয়েছেন: “দয়া করে আমাকে গানের কথার ভুলের জন্য বিরক্ত করবেন না। প্রথম এটি একটি কভার – তাই এখানে সৃষ্টিশীল পরিবর্তনের অনুমোদন আছে। দ্বিতীয়ত, আমি আত্মঘাতী বোমাবাজ নই।”

ভিডিওটি চার লক্ষেরও বেশি বার দেখা হয়েছে। এবং মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়েশিয়ায় এই ভিডিওটি হয়তো প্রত্যাশিতভাবেই অত্যন্ত তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।

একজন লিখেছেন, “এ্যালভিন ট্যান, তোমার লজ্জা হওয়া উচিত, এটি হচ্ছে আমার দেখা সবচেয়ে মারাত্মক অপমানের একটি”। আরেক জন লিখেছেন, “জঘন্য”।

তবে একজন আবার লিখেছেন, “ভিডিওটা ভালোই হয়েছে। আমি একজন মুসলিম, তবে আমার মোটেও রাগ হচ্ছে না।”

তিনি আরো বলেছেন “ব্রাদার, একদিন তুমি আমাদেরই একজন হবে।”

মালয়েশিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশই মুসলিম। তবে দেশটিতে বহু ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠীর লোকের বাস – যেখানে আছে বহু বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ও হিন্দু সংখ্যালঘু।

মালয়েশিয়ার এক-পঞ্চমাংশ লোক হচ্ছেন ট্যানের মতো চীনা বংশোদ্ভূত।

দু বছর আগে মি. ট্যান এবং তার বান্ধবী রমজান মাসকে অবমাননা করা এবং ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফিক ছবি পোস্ট করার দায়ে বিচারের সম্মুখীন হন। তাকে সেসময় গ্রেফতারও করা হয়েছিল।

মি ট্যান বলছেন, তিনি ধর্মনিরপেক্ষ উদারনৈতিক মূল্যবোধের পক্ষে, এবং তার গ্রেফতার প্রমাণ করে মালয়েশিয়ায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই।

কিন্তু এ্যালভিন ট্যানের কাজকর্ম এমনকি অমুসলিমদের সবার কাছেও সমর্থন পায় নি। একজন টুইটারে লিখেছেন, “এ্যালভিন ট্যান বেশি বাড়াবাড়ি করছেন, তার কাজ মালয়েশিয়ার চীনা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে না। কাজে তার নিন্দা করুন, ঢালাওভাবে চীনাদের নয়।

একজনের মন্তব্য: মি. ট্যানের সাথে ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের বিশেষ কোন পার্থক্য নেই।

এমন সমালোচনাও অনেকে করেছেন যে আমেরিকায় রাজনৈতিক আশ্রয় পাবার যাতে সুবিধে হয়, সেজন্যই মি ট্যান এসব ভিডিও পোস্ট করছেন।–বিবিসি