ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার মধ্যেই কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। তিনি বলেন, ভারত যদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হামলা চালায়, তবে তা দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে ‘সর্বাত্মক যুদ্ধ’ ডেকে আনতে পারে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসিফ বলেন, “যদি কোনো আক্রমণ বা এ ধরনের কিছু ঘটে, তবে অবশ্যই একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু হবে।”
কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর এই মন্তব্য এল। হামলার দায় স্বীকার করেছে একটি স্বল্পপরিচিত গোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)। ভারত হামলার পেছনে পাকিস্তানি সংযোগের অভিযোগ তুললেও তা অস্বীকার করেছেন আসিফ।
পাকিস্তানি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে আমাদের সরকার। আমরা নিজেরাও দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদের শিকার। তবে এমন কিছু গোষ্ঠীকে দায়ী করা হচ্ছে, যাদের নাম আগে শোনা যায়নি। এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত চক্রান্ত, যার লক্ষ্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংকট তৈরি করা।”
আসিফ দাবি করেন, ভারতের প্রতিক্রিয়া পূর্বানুমেয় এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি বলেন, “আমরা আগেই বুঝতে পেরেছিলাম, এই হামলাকে কেন্দ্র করে আমাদের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের দিকে আঙুল তোলার বিষয়ে তিনি বলেন, “বড় শক্তিগুলোর জন্য এটা সুবিধাজনক— দক্ষিণ এশিয়ায় যা-ই ঘটুক না কেন, পাকিস্তানকে দোষারোপ করা হয়।”
‘লস্কর-ই-তৈয়বা’র সম্পৃক্ততার প্রশ্নে আসিফ সাফ জানিয়ে দেন, এই গোষ্ঠী এখন কার্যত বিলুপ্ত। তাঁর ভাষায়, “যখন মূল সংগঠন নেই, তখন শাখা সংগঠন থাকার প্রশ্নই আসে না।”
২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলা ও বালাকোটে ভারতের বিমান হামলার প্রসঙ্গ টেনে আসিফ বলেন, সেসময়ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ পরিচালনা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, “আগেও এমন হয়েছে। ভারতের অনেক পদক্ষেপ ছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের বৈধতা তৈরির অংশ।”
যুদ্ধের আশঙ্কা থাকলেও, খাজা আসিফ শেষ পর্যন্ত সংলাপের পথে হাঁটার আহ্বান জানান। “এই সংকট আলোচনার মাধ্যমে মেটানো উচিত। সংঘাত নয়, শান্তিপূর্ণ সমাধানই একমাত্র পথ,”— বলেন তিনি।
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ভারত যদি আক্রমণ চালায়, পাকিস্তানও ‘সমানভাবে জবাব’ দিতে প্রস্তুত রয়েছে।