একুশে পদক পেয়েছেন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, লেখক ও অনুবাদক এবং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) ইংলিশ অ্যান্ড মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজেস বিভাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক নিয়াজ জামান।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার হাতে এই সম্মাননা তুলে দেন। শিক্ষাক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এই পদক দেওয়া হয়।
একুশে পদক বাংলাদেশের অন্যতম সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মান, যা ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতিবছর ভাষা, সাহিত্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাংবাদিকতা, সমাজসেবা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়।
অধ্যাপক নিয়াজ জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন ১৯৬৩ সালে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির আমেরিকান ইউনিভার্সিটি থেকে দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর এবং জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৮৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
তার শিক্ষকতা জীবন শুরু হয় ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও হলি ক্রস কলেজে। এরপর তিনি কাজ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।
১৯৭২ সালে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে, যেখানে তিনি কাজ করেছেন ২০১৩ সালে অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্ত। ২০০৬ সাল থেকে তিনি আইইউবির ইংরেজি বিভাগের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শিক্ষকতার পাশাপাশি, লেখালেখিতেও অধ্যাপক নিয়াজ জামান রেখেছেন সমান দক্ষতার ছাপ। লিখেছেন তিনটি উপন্যাস, তিনটি ছোটগল্পের বই এবং সাতটি শিশুতোষ গ্রন্থ।
তাঁর আ ডিভাইডেড লেগাসি : দা পার্টিশান ইন সিলেক্টেড নভেলস অফ ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, অ্যান্ড বাংলাদেশ গ্রন্থটি ন্যাশনাল আর্কাইভস অ্যাওয়ার্ড এবং আতোয়ার হুসেন পুরস্কার পায়।
বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্প নিয়েও তার কাজ প্রশংসিত হয়েছে। দা আর্ট অফ কাঁথা এমব্রয়ডারি এবং টেক্সটাইলস ফ্রম বেঙ্গল: আ শেয়ার্ড লেগাসি গ্রন্থে উঠে এসেছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী শিল্পের গল্প।
অনুবাদেও তার রয়েছে সমান দক্ষতা। কাজী নজরুল ইসলামের বাঁধন হারা ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন।
সম্পাদক হিসেবেও তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংকলন নিয়ে কাজ করেছেন, এর মধ্যে ১৯৭১ অ্যান্ড আফটার: সিলেক্টেড স্টোরিস এবং দা ডিমনেস: বেস্ট বাংলাদেশি স্টোরিস ১৯৭১-২০২১ পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে।
বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের স্বীকৃতি হিসেবে ড. নিয়াজ জামান পেয়েছেন বাংলা একাডেমি অনুবাদ পুরস্কার (২০১৬), আনন্যা সাহিত্য পুরস্কার (২০১৩), আমেরিকান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এডুকেশন অ্যাওয়ার্ডসহ (২০১৭) নানা সম্মাননা।