২৩ মার্চ, ভগত সিংয়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘ছদ্ম স্বাধীনতা সংগ্রামী’ মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী-কে তোপ দাগলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মার্কণ্ডেও কাটজু। তিনি তার লেখা একটি ব্লগে এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন।
তিনি লিখছেন, ‘ভগত সিং, রাজগুরু, সুখদেব যাদের আজকের দিনে লাহোর জেলে ফাঁসি দিয়েছিল তৎকালীন বৃটিশ শাসকরা। আর তাদের মৃতদেহ জ্বালিয়ে ছাই পর্যন্ত কোনও অজ্ঞাত জায়গায় ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিল। এরাই আমাদের দেশের আসল স্বাধীনতা সংগ্রামী। গান্ধীর মতো ছদ্ম স্বাধীনতা সংগ্রামী নন। চন্দ্রশেখর আজাদ, আশফাকুল্লা খান, ক্ষুদিরাম বসু, রামপ্রসাদ বিসমিল এবং আরও অনেককে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল বা হত্যা করেছিল বৃটিশ সরকার। ১৯৩৪ সালে আরও একজন মহান সংগ্রামী মাস্টারদা সূর্য সেনকে হত্যা করা হয়। এরাই দেশের আসল স্বাধীনতা সংগ্রামী।
কাটজু আরও লিখেছেন, ‘ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে সেখানকার একটি অনুষ্ঠানে ভাষণে আমি বলেছিলাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম কখনও অহিংস হতে পারে না। আমেরিকার স্বাধীনতার যুদ্ধ (১৭৭৫-১৭৮১ সাল) কি অহিংস ছিল? জর্জ ওয়াশিংটন কি বৃটিশদের ফুল পাঠিয়ে বা সত্যাগ্রহ করে এই যুদ্ধ লড়েছিলেন, নাকি বুলেট দিয়ে লড়েছিলেন?
এটা খুব সহজেই বোঝার যে, অনশন বা ডান্ডি মার্চের মতো গান্ধীবাদী নাটক করলে এত বড় সাম্রাজ্য কেউ এমনি-এমনি ছেড়ে দেয় না। বৃটিশদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনের প্রয়োজন ছিল, যা এই মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীরা করেছিলেন। তবে অত্যন্ত চালাক বৃটিশদের চর গান্ধী এই আন্দোলনের গতিপথকে নিজের নির্বিষ ও ভ্রান্ত আন্দোলনের দিকে পরিবর্তিত করতে পেরেছিলেন, যাকে লোকে সত্যাগ্রহ বলে জানেন। যার মানে, এক গালে চড় মারলে অন্য গালও এগিয়ে দাও। বীরের মতো বুলেটের বদলে বুটেল দিয়ে লড়া নয়।
গান্ধী ভগত সিং এবং অন্যান্য সশস্ত্র সংগ্রামীদের ‘বিপথগামী তরুণ’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
যখন বৃটিশ সরকার ভগত সিংকে মৃত্যুদণ্ড দেয়, গান্ধী তার বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ জানাননি। ভাইসরয়কে কোনও চিঠি লিখে সাজা মাফের আর্জি জানাননি বা জনগণের উদ্দেশে এর বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য রাখেননি। খুব সম্ভবত তিনি বেশি খুশিই হয়েছিলেন। কারণ তার ‘প্রধান শত্রুরা’ একে একে মৃত্যুবরণ করছিলেন। যারা বেঁচে থাকলে তার জনপ্রিয়তা এবং তার ‘মহাত্মা খেতাব’ হাওয়ায় মিলিয়ে যেত।
আর এমনই একটা রাসকেল লোককে আমাদের দেশে জাতির জনক বলা হয়। যিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন ঢাল-তলোয়ার ব্যবহার না করে।
গান্ধীর নাটকের জন্য ভারত স্বাধীনতা পায়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানরা ইংল্যান্ড আক্রমণ করায় তারা দুর্বল হয়ে পড়ে। (যদি আমেরিকা তাদের সাহায্য না করত, তবে জার্মানরা ইংল্যান্ড দখল করে ফেলত বলে আমার মনে হয়) এবং আমেরিকা ইংল্যান্ডকে কাজটি করার জন্য রীতিমতো চাপ দিয়েছিল। সেই জন্য এই স্বাধীনতা পেয়েছে ভারত।’