চার বছরে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১০ লাখ কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তরুণদের প্রশিক্ষণ দিয়েই এই উদ্যোগের সমাপণী টানতে চান না এর উদ্যোক্তারা। বরং প্রশিক্ষিত তরুণদের কর্মসংস্থানের (চাকরি) ব্যবস্থা করে দেওয়াইএ উদ্যোগের মুখ্য উদ্দেশ্য বলে জানা গেছে।
দেশে সফটওয়্যার বা সেবাপণ্য নির্মাতাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এই উদ্যোগ নিয়েছে। বেসিসের ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ এর একটি লক্ষ্য হলো ‘ওয়ান মিলিয়ন’ পেশাজীবী তৈরি করা। এর মধ্যে রয়েছে সফটওয়্যার ও অাইটি এনবল্ড সার্ভিসেস (অাইটিইএস) ও বিপিও (বিজনেস প্রসেস অাউটসোর্স) পেশাজীবী তৈরি।
এ উদ্যোগ গ্রহণের এক বছর পার হয়েছে এরই মধ্যে। এ খাতের অগ্রগতি ইতিবাচক বলে জানা গেছে। এর মধ্যে গেমস ও মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপিংয়ে তরুণদের বেশি অাগ্রহ দেখা গেছে। ১০ লাখের মধ্যে অাড়াই লাখ তরুণকে গেমস ও মোবাইল ডেভেলপমেন্টের প্রশিক্ষণ দিয়ে অাগামী দিনের জন্য তৈরি করা হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (অাইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ অাহমেদ পলক বলেছেন, অাগামী দিনে ট্রিলিয়ন ডলারের মার্কেট গলো মোবাইল গেমস। অামাদের সক্ষমতাকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, কীভাবে অামাদের তরুণদের এগিয়ে নেওয়া যায় সে বিষয়ে এক রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়েছে। অাগামী দিনে প্রযুক্তি কেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর একটি হলো মোবাইল গেমস। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সরকার মোবাইল গেমস ডেভেলপমেন্টের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে এবং বেসিস ১ মিলিয়ন ডেভেলপার তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বেসিস সভাপতি শামীম অাহসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অামরা অামাদের স্বপ্নের কথা ঘোষণা করি এবং সে লক্ষ্য নিয়েই অামরা এগিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, অামরা প্রশিক্ষণ দেওয়াটাই বড় করে দেখছি না। এটা অামাদের উদ্দেশ্যও নয়। অামাদের উদ্দেশ্য প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রশিক্ষিত কর্মীদের চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া।
সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের মধ্যে বেসিস তাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে চায়। এ লক্ষ্যে বেসিস বিভিন্নভাবে এবং কৌশলে প্রশিক্ষণ দিয়ে ১০ লাখ মানবসম্পদ তৈরি করতে চাইছে। এরই মধ্যে সংগঠনটি বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় সারা দেশের ২৩ হাজার শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত করার গোষণা দিয়েছে। অাইসিটি বিভাগের এলঅাইসিটি (লেভারেজিং অাইসিটি) প্রকল্প এরই মধ্যে ৩৪ হাজার প্রশিক্ষাণার্থীকে প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত করার ঘোষণা দিয়েছে।
বেসিসের মোবাইল মানডে এবং ক্লাউড ক্যাম্পের উদ্যোগে ১০ লাখ ডেভেলপারের মধ্যে ২ লাখ ৫০ হাজার শিক্ষার্থীকে দেওয়া হবে গেমস ও অ্যাপসের প্রশিক্ষণ। বেসিস অাড়াই লাখ ফ্রিল্যান্স্যারকেও প্রশিক্ষণ দেবে। বাজার উপযোগী করতে তাদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ দিয়ে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা হবে। এছাড়া অারও বিভিন্নভাবে বেসিস তরুণদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মমুখী হিসেবে তৈরি করবে।
হালে তরুণদের চাকরি না দিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে পথ দেখিয়ে দিলেই হচ্ছে। তারা নিজেরাই নিজেদের কর্মসংস্থান করে নিচ্ছে। কেবল প্রয়োজন সময়ের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলার মতো প্রশিক্ষণ। সরকারের উদ্যোগে সারাদেশে শুরু হয়েছে লার্নিং অার্নিং প্রজেক্ট। ওই প্রজেক্ট থেকে প্রশিক্ষণ নিলে ঘরে বসেই অায় করা যাবে। বেসিসের ১০ লাখ পেশাজীবী তৈরির উদ্যোগ বেসরকারি খাতে বড় একটি কাজ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যারা প্রশিক্ষণে অাগ্রহী তারা বেসিসের ওয়েবসাইটে একবার লগইন করতে পারেন।