স্পেনের স্বপ্ন চুরমার করে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড

SHARE

স্পেনের স্বপ্ন চুরমার করে টানা দ্বিতীয়বার নারী ইউরোচ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা জিতেছে ইংল্যান্ড। ১২০ মিনিটের লড়াই শেষে প্রথমবার ফাইনালে ওঠা স্পেনকে টাইব্রেকারে ৩-১ গোলে হারিয়েছে ২০২২ আসরে জার্মানিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ইংলিশ মেয়েরা।

১-১ সমতায় খেলা শেষ হওয়ার পর শ্বাসরুদ্ধকর টাইব্রেকারে অবতীর্ণ হয় স্পেন-ইংল্যান্ড। কলোই কেলি শিরোপা নির্ধারক শ্যুটে গোল করে ইংল্যান্ডকে জিতিয়ে দেন।

এবারের আসরে ইংল্যান্ড গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে অসাধারণভাবে প্রত্যাবর্তন করেছে। কোয়ার্টার ফাইনালে সুইডেনের বিপক্ষে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও জয় পেয়েছিল টাইব্রেকারে এবং সেমিফাইনালে ইতালিকে অতিরিক্ত সময়ে কেলির অবিশ্বাস্য গোলের মাধ্যমে হারিয়েছিল।

সুইজারল্যান্ডের জ্যাকব পার্ক স্টেডিয়ামে বিশ্ব ও নেশনস লিগ চ্যাম্পিয়ন স্পেন ম্যাচের ২৫ মিনিটেই এগিয়ে যায়। ওনা বাতিয়ের ক্রসে মরিওনা ক্যালদেন্তে হেড করে ইংল্যান্ড গোলরক্ষক হান্না হ্যাম্পটনকে পরাস্ত করেন।

সেমিফাইনালে ইতালির বিপক্ষে জয়ের নায়ক কেলি দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামেন। এতে ইংল্যান্ডের ফুটবলাররা অনুপ্রেরণা পান। কেলি ইংল্যান্ডের দুর্বল বাম দিকটা মজবুত করেন এবং ৫৭ মিনিটে আলেসিয়া রুসোর হেডে সমতাসূচক গোলের জন্য নিখুঁত ক্রসটি দেন। ফলে ১-১ সমতায় ফেরে দুই দল।

ফাইনাল হেরে হতাশ স্পেনের আইতানো বোনতামি (বাঁয়ে) ও মারিয়ানা ক্যালদেন্তে। ছবি: সংগৃহীত

স্পেন বলের দখলে আধিপত্য ধরে রাখে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে আর কোনো গোল করতে পারেনি। অতিরিক্ত সময়ে বারবার আক্রমণ করেও ইংল্যান্ডের রক্ষণ ভাঙতে ব্যর্থ হয় এবং খেলা ১-১ গোলে শেষ হয়।

টাইব্রেকারে স্পেন দারুণ শুরু করে, যখন ইংল্যান্ডের বেথ মিডের শট ঠেকিয়ে দেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক কাতা কোল। তবে ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক হ্যাম্পটন ক্যালদেন্তে ও আইতানা বোনমাতির শট ঠেকিয়ে ম্যাচে ইংল্যান্ডকে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যান।

লিয়া উইলিয়ামসনের শট এক হাতে ঠেকিয়ে কোল স্পেনকে আবারও লড়াইয়ে ফেরান। কিন্তু স্পেনের পরিবর্তিত খেলোয়াড় সালমা পারালুয়েলো তার শটটি গোলবারের বাইরে দিয়ে মেরে দেন।

এরপর ইংল্যান্ডের কেলির সামনে আসে আরেকবার ইতিহাস গড়ার সুযোগ। ২০২২ সালে যেভাবে তিনি অতিরিক্ত সময়ে জার্মানির বিপক্ষে জয়সূচক গোল করেছিলেন, এবারও তিনি একই কীর্তি গড়েন।

কেলি দৌড়ে এসে বল জালে জড়িয়ে দিলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে উদযাপন শুরু করে সতীর্থরা।

কেলি বলেন, আমি খুবই গর্বিত, এই দলটির অংশ হতে পেরে, এই ব্যাজ গায়ে ধারণ করতে পেরে এবং ইংরেজ হতে পেরে। আমি শান্ত ছিলাম, আত্মবিশ্বাসী ছিলাম এবং জানতাম বল জালে যাবে।

এই ফাইনাল ছিল ১৯৮৪ সালের পর প্রথমবার, যেটি পেনাল্টি শ্যুটআউটে গড়ায়। সে বছর ইংল্যান্ড সুইডেনের কাছে হেরেছিল।

উচ্ছ্বসিত ইংলিশ গোলরক্ষক হান্না হ্যাম্পটন বলেন, অবিশ্বাস্য, অবিশ্বাস্য। এই টুর্নামেন্টে আমরা বারবার দেখিয়েছি যে আমরা পেছনে পড়লেও ফিরে আসতে পারি, আমাদের মাঝে সেই লড়াকু মানসিকতা আছে। আমাদের রক্তে ইংরেজ স্পিরিট আছে। আমরা কখনো হার মানি না, আর আজকেও আমরা তা প্রমাণ করেছি।”

স্পেনের তারকা বোনমাতির জন্য এই হার ছিল বেদনাদায়ক। তিনি বলেন, সত্যি বলতে আমার মধ্যে কোনো আবেগ আর অবশিষ্ট নেই। আমি নিজেকে পুরোপুরি নিঃশেষ করেছি। আমরা সবাই ক্লান্ত। আমাকে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে। কারণ শেষ পর্যন্ত আমারই দোষ ছিল, আমি গোল করতে পারিনি। তবে প্রতিপক্ষকে অভিনন্দন জানাই। আমার মতে আমরা ম্যাচে ভালো খেলেছি, কিন্তু ফুটবলে অনেক সময় তা যথেষ্ট নয়।