সরকারের কাছে মানিলন্ডারিংয়ের তথ্য নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

SHARE

তারা (বিদেশিরা) মানিলন্ডারিং এবং সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার করার কথা বলে। আমরা বললাম, কারা পাচার করেছে? কিন্তু তারা তথ্য দিলো না। তারা বলে, প্রাইভেট সেক্টরের তথ্য দেওয়া যাবে না। তারা আসলে মানিলন্ডারদের সাপোর্ট করে।

মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে ‘আমাদের টাকায় আমাদের পদ্মা সেতু’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

মন্ত্রী বলেন, বিদেশিরা কিছু বললেই লাফালাফি করার সুযোগ নেই। যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন, মামলা খেয়েছেন, দুর্নামের ভাগিদার হয়েছেন তাদের পুরস্কৃত করা উচিত। তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। যারা অভিযোগ তুলেছিলেন, তাদেরই এই ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু কেবল দুই পাড়কে এক করার সেতু নয়, এটা দেশের আত্মবিশ্বাস ও সক্ষমতা গড়ার সেতু। এটি নির্মাণের শুরুতে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু তা কানাডার আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। করাপশন (দুর্নীতি) সম্পর্কে ঢালাই অভিযোগ আসলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না- এটি আজ প্রমাণিত।

মোমেন বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের গর্ব, আত্মপ্রত্যয়ের প্রতীক। তাই বিদেশিরা কিছু বললেই লাফালাফির কিছু নেই। বিদেশিদের সব পরামর্শ গ্রহণ করার প্রয়োজনও নেই। এই শিক্ষা আমরা পদ্মা সেতু থেকে শিখেছি। এটি সারা বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বাড়িয়ে চলছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, এই সেতু তৈরি করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন, তা অজানাই রয়েছে। এজন্য জাতীয় সংসদে এ নিয়ে আলোচনা হয়। জাতীয় সংসদ ও বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানানো হয়।

স্পিকার বলেন, বড় উদ্যোগে এ ধরনের প্রকাশনা সবসময় প্রয়োজন আছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের পেছনের গল্পগুলো সবারই জানা উচিত। কী কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগিয়েছেন, এগুলো জানতে হবে।

অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিশ্বব্যাংক নিজেরাই অভিযোগ তুলে তা তদন্ত করতে চেয়েছিলো। আমি তা নাকচ করে বলি, এটি একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন দেশ। এখানকার নিজস্ব আইন ও বিচারব্যবস্থা আছে। এরপর তারা তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করতে চাইলো। আমি সেটাও নাকচ করি।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, পদ্মা সেতুতে রাজনীতি এত বেশি প্রবল ছিল যে, টেকনিক্যাল জটিলতার কথা কেউ দেখার প্রয়োজন বোধ করেননি। দেশি বিশেষজ্ঞরা সবকিছু সামলেছেন। এই সেতু নিয়ে এই আলোচনা বহুদিন জারি থাকবে।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সবার সম্মিলিত চেষ্টায় সবচেয়ে দুরূহ কাজটি সম্পাদন করা সম্ভব হয়েছে। সে সময় একজন লোকও ছিলো না, যারা পদ্মা সেতুকে লাভজনক বলেছে। তারা সঠিক ছিলো না। সবাই বুঝে বিরোধিতা করেনি, শুধু এগিয়েছে ধারণার ওপর।

বিশেষজ্ঞ বক্তব্যে অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, ধার করা অর্থে টেকসই উন্নয়ন হয় না। নিজস্ব অর্থায়নে, নিজেদের জ্ঞান ও বুদ্ধির বদৌলতে এ দেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

চন্দ্রাবতী একাডেমি প্রকাশিত এ বইটিতে শিক্ষাবিদ, সংবাদকর্মী, প্রকৌশলী বিশেষজ্ঞ ও নির্মাণসংশ্লিষ্ট বিশিষ্ট লেখকদের ৬৭টি লেখা, গুরুত্বপূর্ণ ছবি ও তথ্য-উপাত্ত স্থান পেয়েছে। বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে পদ্মা সেতুর স্বপ্নদ্রষ্টা ও মূল রূপকার বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্পাদিত বইটির প্রচ্ছদ, শিল্পী ও নাম ঠিক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই।