সহজ জয় পেল আয়ারল্যান্ড। ৩০৫ রান কে হেসেখেলে অতিক্রম করল টেস্ট না খেলা দলটি। ৬ উইকেট হারিয়ে ৪৫.৫ ওভারে ৩০৭ রান করেছে। হাতে আছে ৪ উইকেট ও ২৫ বল রেখেই বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করল আয়ারল্যান্ড
নেলসনের স্যাক্সটন ওভালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে ত্রাণকর্তা হয়ে আসে লেন্ডল সিমন্স-ড্যারেন স্যামি। ৮৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কক্ষচ্যুত দলকে ১৫৪ রানের মূল্যবান জুটি গড়ে কক্ষপথে ফিরিয়ে আনেন তারা। আক্ষেপে জর্জরিত করলেন আইরিশ-শিবিরকে। স্যামি ৮৯ রানে ফিরে গেলেও নিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন সিমন্স। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গড়েছে ৩০৪ রানের বড় সংগ্রহ।
অথচ ম্যাচের প্রথমভাগের দৃশ্যপট ছিল ভিন্ন। প্রথমেই দেখা মিলেছিল প্রবল আত্মবিশ্বাসী এক আয়ারল্যান্ডের। চলনে-বলনে আধিপত্যের ছাপ স্পষ্ট, যেন তারাই ম্যাচের পরিষ্কার ফেবারিট। এই বিশ্বকাপের আগের চারটি ম্যাচে প্রথমেই ব্যাটিং করা দল যেখানে জিতেছে, আয়ারল্যান্ড টসে জিতে নিলো কিনা বোলিং! প্রথা ভাঙতেই কি আইরিশদের এই সিদ্ধান্ত?
শুরুটাও ছিল স্বপ্নের মতন। পোর্টারফিল্ডের দুর্দান্ত অধিনায়কত্ব ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের থিতু হতে দেয়নি। আইরিশ অধিনায়ক বারবার তার বোলারদের অদলবদল করেছেন, ফিল্ডিং সাজানোয় তার মুন্সিয়ানায় হাঁসফাঁস করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা, ছুঁড়ে এসেছেন নিজেদের উইকেট। ক্যারিবীয়দের রানের চাকা যেন আটকে গিয়েছিল বোলারদের মিতব্যয়ী বোলিংয়ে।
৮ম ওভারে ডোয়াইন স্মিথ তুলে দিলেন সহজ ক্যাচ, গেইলের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হলেন এক বলও না খেলা ড্যারেন ব্রাভো! ২২তম ওভারে আবারো জোড়া বিপর্যয়। বাঁহাতি স্পিনার জর্জ ডকরেলের বলে আউট ক্রিস গেইল ও মারলন স্যামুয়েলস। ক্রিস গেইলের ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং দেখতে যারা রাত জেগেছিলেন তাদের আশার গুঁড়ে বালি! গেইল আউট হন ৬৫ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলে! ৫৫.৩৮ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করে গেইল মাঠে যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন। ২০১৩ থেকে এ পর্যন্ত টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বাজে ব্যাটিং গড় গেইলের (১৮.৩), ভাবা যায়! ৮৭ রানে দিনেশ রামদিনও বিদায় নিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সমর্থকদের মনে নিশ্চয়ই কাঁপুনি ধরে গিয়েছিল! এরপরেই শুরু স্যামি-সিমন্স বীরত্ব।
প্রথমে দেখে শুনে সিঙ্গেল নেওয়ার প্রতিই মনোযোগ ছিল দুজনের। প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার পর শুরু হলো হাত খুলে খেলা। এই দুজনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে এলোমেলো হয়ে গেল আইরিশ বোলিং। স্যামি থেমেছেন ৯টি চার ও ৪টি ছয়ে ৬৭ বলে ৮৯ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে। সিমন্সের ৮৪ বলে ১০২ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে ছিল ৯টি চার ও ৫টি ছয়ের মার। আয়ারল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নিয়েছেন ডকরেল।