শেষ হতে চলেছে করোনার প্রকোপ

SHARE

করোনার ভ্যাকসিন বাজারে আসা সময়ের অপেক্ষা হলেও, তা প্রথম ধাপে কতটা কার্যকরী হবে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। তবে এবার আশার বার্তা নিয়ে এসেছে বিশেষজ্ঞরা। করোনার প্রকোপ কমবে বলে দাবি করছে তারা।

বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট অনুযায়ী ৪০ শতাংশ করোনা আক্রান্তদের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে কোনও উপসর্গ নেই। এই রকম উপসর্গহীন করোনাই ধীরে ধীরে ছড়াবে। যার ফলে একসময় করোনার বিশেষ কোনও উপসর্গ আর থাকবে না। এতেই করোনার প্রকোপ কমার দিকে যাবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বস্টন আশ্রয়শিবিরে ১৪৭ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে ৮৮ শতাংশের কোনও উপসর্গ মেলেনি। অথচ তারা করোনা আক্রান্ত। নর্থ ক্যারোলিনা, আরকানসাস, ওহিও এবং ভার্জিনিয়ায় ৩ হাজার ২৭৭ জন আক্রান্ত হলেও ৯৬ শতাংশ উপসর্গহীন। সাত মাস ধরে চলা এই মহামারীতে মারা গিয়েছেন ৭ লক্ষ মানুষ। তবে বেশিরভাগ মানুষকেই ছুঁতে পারেনি করোনা।

সান ফ্রান্সিসকোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক-রোগ বিশেষজ্ঞ গান্ধী বলেছিলেন,উপসর্গহীন সংক্রমণ ভাল, এটি ব্যক্তির পক্ষেও ভাল এবং সমাজের জন্যও। করোনাভাইরাস শিশুদের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে কম। সুতরাং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হালকা লক্ষণ দেখা যায়। ।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায় অ্যান্টিবডি মানুষের শরীরে দুই থেকে তিনমাস থাকে। এছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে সাধারণত টি সেল দীর্ঘস্থায়ী হয়। গবেষণায় দেখা যায় শতকরা ৪০ থেকে ৬০ ভাগ নমুনায় টি সেল রয়েছে। কজন সুস্থ মানুষের শরীরের এক মাইক্রোলিটার রক্তবিন্দুতে দুই থেকে চার হাজার ‘টি-সেল’ থাকে। টি-সেলের কাজ হলো করোনাভাইরাসকে ধ্বংস করা।

এছাড়া নেদারল্যান্ডসের এক গবেষণায় দেখা যায় জার্মানীতে শতকরা ৩৪ ভাগ এবং সিঙ্গাপুরে শতকরা ৫০ ভাগ মানুষের শরীরে টি সেল রয়েছে। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ গান্ধী বলছেন, মহামারীর শুরুর দিকে যারা মাস্ক পরত না তাদের শতকরা ১৫ ভাগ মানুষ ছিলো উপসর্গহীন। মাস্ক পরা শুরুর পর এই হার বেড়ে হয় ৪০ থেকে ৪৫ ভাগ। আর উপসর্গহীন সংক্রমণ একসময় করোনার প্রকোপ কমাতে পারে।

গবেষণা বলছে, কম বেশী সবাই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই অ্যাসিম্পট্যোম্যাটিক অর্থাৎ তাদের কোনও উপসর্গ নেই। গবেষকদের ধারণা এত উপসর্গ রয়েছে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার, যে সঠিক ভাবে কোনও একটা নির্দিষ্ট ধারাকে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। ভ্যাকসিন তৈরির পথ যত সুগম হচ্ছে, মানুষের শরীরেও ততটাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন তারা।

তাই বিজ্ঞানীদের ধারণা এই হারে যদি অ্যাসিম্পট্যোম্যাটিক রোগির সংখ্যা বাড়ে, তবে তা ভাল লক্ষ্মণ। কারণ এই ভাবে ধীরে ধীরে করোনা নিজের কার্যক্ষমতা হারাবে। কমে আসবে করোনার মারণ প্রকোপ। ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাস আঘাত হেনেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে রবিবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ১ কোটি ২৭ লক্ষ ২০ হাজার ১৮৭ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

সূত্র: বোস্টন গ্লোব, এংকরএইজ ডেইলি নিউজ