ইসরায়েলের সঙ্গে সমন্বয়ের কথা স্বীকার ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর

SHARE

গাজা উপত্যকায় ত্রাণ লুটের অভিযোগে অভিযুক্ত ও হামাসবিরোধী একটি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রধান রবিবার স্বীকার করেছেন, তারা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছেন।

ইসরায়েলের আরবি ভাষার সরকারি রেডিও মাকানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পপুলার ফোর্সেস নামে পরিচিত গোষ্ঠীটির নেতা ইয়াসের আবু শাবাব বলেন, তারা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে অবাধে চলাফেরা করতে পারেন এবং আগেভাগেই নিজেদের অভিযান সম্পর্কে জানিয়ে দেন।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা তাদের (ইসরায়েলিদের) জানিয়ে রাখি, তবে সামরিক অভিযান আমরা নিজেরাই চালাই।’

ইসরায়েলের নাম সরাসরি উল্লেখ না করে আবু শাবাব জানান, তারা ‘বিভিন্ন পক্ষ থেকে সরঞ্জাম ও আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন’।
তিনি এ-ও বলেন, ‘কিছু বিষয় আছে, যা আমরা প্রকাশ্যে বলতে পারি না।’

এর আগে গত মাসে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে, তারা হামাসবিরোধী কিছু ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীকে সমর্থন দিচ্ছে। যদিও সে সময় তারা কোনো গোষ্ঠীর নাম বলেনি। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে আবু শাবাবের গোষ্ঠীকেই সেই গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
তখন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটা ভালো কাজ। এটা ইসরায়েলি সেনাদের জীবন বাঁচাচ্ছে।’

অন্যদিকে ইসরায়েলের সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিগদর লিবারম্যান ‘অপরাধী ও দাগি লোকজনকে অস্ত্র সরবরাহ’ করার জন্য সরকারকে অভিযুক্ত করেছেন। এ ছাড়া ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেইন রিলেশনস থিংকট্যাংক আবু শাবাবকে গাজার দক্ষিণে রাফা অঞ্চলের একটি অপরাধীচক্রের নেতা হিসেবে বর্ণনা করেছে, যাকে ত্রাণ ট্রাক লুটের সঙ্গে যুক্ত বলে সন্দেহ করা হয়।

তবে রেডিও সাক্ষাৎকারে আবু শাবাব এসব অভিযোগ সম্পর্কে কিছু বলেননি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তাদের মিলিশিয়ার একমাত্র লক্ষ্য হলো হামাসকে পরাজিত করা এবং গাজা শাসনের জন্য একটি বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কোনো মতবাদ বা রাজনৈতিক সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত নই।’ তারা শুধু হামাসের ‘অন্যায়’ ও ‘দুর্নীতি’ নির্মূল করতে চান উল্লেখ করে আরো বলেন, ‘আমরা লড়াই চালিয়ে যাব, রক্তপাত যতই হোক না কেন। হামাস এখন ধ্বংসের পথে।
তারা জানে, তাদের ধ্বংস খুব কাছে।’

২০০৭ সাল থেকে গাজা শাসন করে আসা হামাস ইতিমধ্যে আবু শাবাবের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। গত বুধবার এক সামরিক আদালত তাকে রাষ্ট্রদ্রোহসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিচারের জন্য ১০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে রবিবার ফিলিস্তিনের বিভিন্ন গোত্রের একটি জোট পপুলার ফোর্সেসকে ‘নির্লজ্জভাবে শত্রুর সঙ্গে আঁতাতকারী’ বলে অভিযুক্ত করেছে। জোটটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘তারা আমাদের জনগণের কাছে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যাত। আমরা তাদের প্রতি কোনো দয়া দেখাব না, যেমনটা করব না তাদের অনুসারীদের প্রতিও, যারা দখলদারের সাহায্য করছে। তাদের যে প্রাপ্য, তাই হবে—তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতক ও সহযোগীর মতো আচরণ করা হবে।’