করোনার প্রাদুর্ভাব সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছিল? যা বলছে নতুন গবেষণা

SHARE

করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে সংক্রমিত করেছে। চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস বিশ্বের প্রায় সব দেশে হানা দিয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ডিসেম্বর মাসে এই মারণ ভাইরাসটি প্রথমে উহানে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু যুক্তরাজ্যের গবেষকদের করা নতুন এক গবেষণা বলছে, প্রথম করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে সেপ্টেম্বরের শুরুতেই।

ব্রিটেনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা করোনার প্রাথমিক প্রাদুর্ভাবের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে অনুসন্ধান করেছেন। তাদের পাওয়া তথ্য বলছে, ১৩ সেপ্টেম্বর ও ৭ ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।

এই সংক্রান্ত গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন পিটার ফ্রস্টার নামক বিশ্ববিদ্যালয়টির এক গবেষক। তিনি বলেন, অন্যান্যদের মধ্যে সংক্রমিত না হয়ে কয়েক মাস ধরে বাদুড় বা অন্যান্য প্রাণী; এমনকি মানুষের শরীরে ছিল ভাইরাসটি। কয়েক মাস আগে ভাইরাসটি মানুষের শরীরে আক্রমণ চালানোর জন্য নিজেই পরিবর্তন ঘটায়। এরপর ভাইরাসটি মানুষের শরীরে আক্রমণ চালায় ১৩ সেপ্টেম্বর ও ৭ ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে।

গবেষকরা গাণিতিক অ্যালগোরিদম ব্যবহার করে করোনভাইরাস স্ট্রেন বিশ্লেষণ করেছেন গবেষণায়। গবেষণাটি এখনো পিয়ার-রিভিউ করা হয়নি। বাদুড়ের মধ্যে ভাইরাসটির উদ্ভবের সময়, বিজ্ঞানীরা আসল সার্স-কভ-২ এবং উহানে প্রথম পাওয়া ভাইরাসটির মধ্যে কয়েকশ বার মিউটেশন খুঁজে পান। সাধারণত একটি করোনাভাইরাস প্রতি মাসে একবার মিউটেশন করে।

গবেষকদের মতে, এটি ইঙ্গিত দেয় যে ভাইরাসটি বহু বছর ধরে চুপচাপ প্রাণী ও মানবদেহে ছড়িয়ে পড়েছিল। আর আজ এই করোনাভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। হাজার হাজার প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে।

ফ্রস্টার বলেন, যদি আমাকে এই বিষয়ে কোনো কিছু বলতে বলা হয় তাহলে আমি বলব, করোনার মূল প্রাদুর্ভাব উহানের চেয়ে দক্ষিণ চীনে বেশি শুরু হয়েছিল। তবে প্রমাণ কেবল বাদুড়, সম্ভবত অন্যান্য সম্ভাব্য হোস্ট প্রাণী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে চীনা হাসপাতালে সংরক্ষণ করা টিস্যুর নমুনার বিশ্লেষণ থেকে পাওয়া যায়।

পিটার ফ্রস্টার বলেন, এই জাতীয় গবেষণা প্রকল্প করোনার ট্রান্সমিশন কিভাবে হয়েছিল তা বুঝতে এবং আমাদের ভবিষ্যতে এরকম ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার হাত থেকে বাঁচতে সহায়তা করবে।

করোনা নিয়ে এর আগে কয়েকটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, যে করোনাভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে তা মানুষের তৈরি। কিন্তু গত মাসের এক গবেষণায় এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

স্ক্রিপস রিসার্চের গবেষকরা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স ডেটা বিশ্লেষণ করেছেন এবং আবিষ্কার করেছেন যে ভাইরাসটি প্রাকৃতিক বিবর্তনের মধ্যে দিয়েই মানুষের শরীরে ঢুকেছে। গবেষণার লেখক ডা. ক্রিস্টিয়ান অ্যান্ডারসন বলেছিলেন, করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স ডেটার তুলনা করে বলতে পারি যে, এটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।

সূত্র: মিরর।