বার্সেলোনা, রিয়াল, না করোনাভাইরাস—স্প্যানিশ লিগ জিতবে কে?

SHARE

লা লিগা টেবিলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে দুই পয়েন্টে এগিয়ে শীর্ষ আছে বার্সেলোনা। লিগে বাকি আছে আর এগারো ম্যাচ। এই পর্যায়ে এসে করোনাভাইরাসের আক্রমণে স্থবির হয়ে আছে ক্রীড়াঙ্গন। এখন কী হবে? কে জিতবে শিরোপা? নাকি রিয়াল-বার্সাকে পিছে ফেলে শেষ হাসি হাসবে করোনাই?

স্প্যানিশ লিগে বাকি আছে আর মাত্র এগারো ম্যাচ। যেখানে অনেক মৌসুমে শিরোপাজয়ী নির্ধারণ করার জন্য একদম শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়, সেখানে এগারো ম্যাচ অনেক বড় ব্যাপার। লিগ টেবিলে আপাতত বার্সা শীর্ষে থাকলেও, মৌসুমের শেষে যে তারাই শীর্ষে থাকত, এ কথা জোর গলায় বলার জো নেই। যেখানে রিয়াল পিছিয়ে আছে মাত্র দুই পয়েন্টে। এই অবস্থায় হানা দিয়েছে করোনাভাইরাস। মরণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণে ক্রীড়াঙ্গন স্থবির হয়ে আছে, বন্ধ হয়ে গিয়েছে খেলা।

ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এই মৌসুমের ভবিষ্যৎ কী? কে জিতবে শিরোপা? বার্সেলোনা না রিয়াল মাদ্রিদ? না এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে বোকা বানিয়ে কর্তৃপক্ষকে মৌসুম বাতিল করতে বাধ্য করে শেষ হাসি করোনাভাইরাসই হাসবে?

বলা যাচ্ছে না। তবে বেশ কয়েকটি সম্ভাবনার কথা উঁকি দিচ্ছে এই সময়ে। তবে লা লিগা কর্তৃপক্ষ ও স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে এই মৌসুমের শিরোপাজয়ী নির্ধারণ করা হবে বলে জানা গেছে। লা লিগার সভাপতি হাভিয়ের তেবাস ও স্প্যানিশ ফেডারেশনের সভাপতি লুইস রুবিয়ালেসের যৌথ স্বাক্ষর সংবলিত সমন্বয় চুক্তির ষষ্ঠ আর্টিকেল অনুযায়ী, লা লিগা ও স্প্যানিশ ফেডারেশনের ঐক্যমত্যেই নির্ধারণ করা হবে, এ মৌসুমের শিরোপা কার হাতে উঠবে, সেটা।

সে ক্ষেত্রে, সেটা নির্ধারণ করার জন্য বেশ কিছু পন্থা অবলম্বন করতে পারে তারা। আপাতত চারটি পন্থার কথা জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে।

প্রথম পন্থা
করোনাভাইরাসের কারণে আপাতত আগামী দুই সপ্তাহের খেলা স্থগিত করা হলেও, এ দুই সপ্তাহের মধ্যে যে করোনার প্রকোপ কমবে না, তা মোটামুটি নিশ্চিত। ফলে আরও কিছুদিন লিগ স্থগিত করা লাগতে পারে। সে ক্ষেত্রে লিগ যখনই শুরু হোক, দুই সপ্তাহ পর বা দুই মাস পর, লিগের বাকি ম্যাচগুলো আয়োজন করেই নির্ধারণ করা হবে শিরোপাজয়ী। তবে পরবর্তীতে সে ম্যাচগুলো আয়োজন করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাবে কি না, সেটাও প্রশ্ন। সামনেই আছে ইউরো। চলমান মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ইউরোপা লিগের ম্যাচও আছে। তাই ইউরো ও ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার ম্যাচগুলো নিয়ে উয়েফা কি সিদ্ধান্ত নেয়, সেটার দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে লা লিগা ও স্প্যানিশ ফেডারেশনকে।

দ্বিতীয় পন্থা
সাতাশ ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার পর লিগ টেবিলের অবস্থা এখন যেমন, সে অবস্থাতেই লিগের সমাপ্তি টানা হবে। সে হিসেবে শিরোপা যাবে বার্সার ঘরে, রানার্সআপ হবে রিয়াল মাদ্রিদ। অর্থাৎ লাভবান হবেন মেসিরা। অবনমিত হবে এসপানিওল, লেগানেস ও মায়োর্কা। রিয়াল ও বার্সা ছাড়া পরবর্তী মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা পাবে সেভিয়া ও রিয়াল সোসিয়েদাদ। কপাল পুড়বে অ্যাটলেটিকোর, তাঁদের খেলতে হবে ইউরোপা লিগে, তাঁদের সঙ্গী হবে গেটাফে। দ্বিতীয় বিভাগ থেকে উঠে আসবে রিয়াল জারাগোজা ও কাদিজ।

তৃতীয় পন্থা
এই পন্থা অবলম্বন করলে বার্সেলোনা বা রিয়াল নয়, জয়ী হবে করোনাভাইরাস। আর পন্থাটা হলো, পুরো মৌসুম বাতিল করে দেওয়া। কেউ ট্রফি জিতবে না, অবনমিত হবে না কোনো দল। এই মৌসুমের অস্তিত্বই মুছে যাবে ইতিহাসের পাতা থেকে। এই মৌসুমে মেসি-রামোসদের অর্জনগুলো মনে রাখবে না কেউ। শুধু মনে রাখবে করোনাভাইরাসকে!

চতুর্থ পন্থা
এ পন্থা অনুযায়ী দেখা হবে উনিশ ম্যাচ শেষে পয়েন্ট টেবিলে কার কী অবস্থা ছিল। আটত্রিশ ম্যাচের লিগে উনিশ ম্যাচ আয়োজিত হলে লিগের অর্ধেক শেষ হয়ে যায়, সবাই সবার সঙ্গে অন্তত একবার খেলে ফেলে। তাই উনিশ ম্যাচ পর কার অবস্থা কী ছিল, সেটা দেখেই লিগ শিরোপা বিজয়ী নির্ধারণ করার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সে হিসেবেও লাভবান হবে বার্সেলোনা। কেননা উনিশ ম্যাচ পরে তারা লিগের শীর্ষে ছিল। রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট চল্লিশ ছিল সে পর্যায়ে, কিন্তু গোল ব্যবধানে পিছিয়ে ছিলেন রামোস-বেনজেমারা।

দেখা যায়, স্প্যানিশ ফেডারেশন ও লা লিগা কোন পন্থা বেছে নেয়!