খাঁ খাঁ করছে কলকাতার হোটেলপাড়া, ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

SHARE

করোনাভাইরাসের আতঙ্কে কলকাতার রাস্তাঘাট এখন প্রায় ফাঁকা। হোটেলপাড়ায় নেই কোনো ভিড়। বিদেশি পর্যটক না থাকায় হোটেলপাড়ার মানি এক্সচেঞ্জের দোকানগুলোর ঝাঁপ কার্যত বন্ধ। এতে হোটেলপাড়ার ছোট-বড় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানদারদের মাথায় হাত।

কলকাতার হোটেলপাড়ার বিভিন্ন হোটেল-গেস্টহাউসে বাংলাদেশ ছাড়াও অন্য দেশ থেকে পর্যটকেরা আসেন। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে কলকাতার হোটেল ও গেস্টহাউসে থাকা অধিকাংশ পর্যটক তড়িঘড়ি করে দেশে ফিরে গেছেন। যে দু-একজন এখনো আছেন, তাঁরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

কলকাতার সম্রাট হোটেলের ব্যবস্থাপক প্রেম ঘোষ আজ রোববার সকালে বলেন, ‘খুবই দুর্দিন চলছে আমাদের। রুম ফাঁকা। মানুষ আতঙ্কে কলকাতা ছেড়েছে। আমরা সত্যিই বিপদের মধ্যে আছি। কীভাবে খরচ চলবে এত বড় হোটেলের? বহু পর্যটক বুক করা হোটেল-রুম বাতিল করেছেন।’

সদর স্ট্রিটের একটি হোটেলের ব্যবস্থাপক বলেন, ‘করোনার আতঙ্কে দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা হোটেল ছেড়েছেন। দু-এক দিনের মধ্যে আমাদের এলাকার হোটেলগুলো পর্যটকশূন্য হয়ে যাবে। আমাদের হোটেলের সিংহভাগ পর্যটক হলেন বাংলাদেশের। বাংলাদেশ থেকে যাঁরা এখানে এসেছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই করোনার আতঙ্কে হোটেল ছেড়ে দেশে ফিরে গেছেন। যাঁরা আছেন, তাঁরাও দ্রুত ফিরবেন।’

বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনায় সরগরম থাকা কলকাতার নিউমার্কেট, সদর স্ট্রিট, মার্কুইস স্ট্রিট, কলিন লেন, রফি আহমেদ কিদোয়াই রোড, ধর্মতলা এলাকার বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরাঁ ও গেস্টহাউস এখন প্রায় ফাঁকা।

কলকাতার মানি এক্সচেঞ্জ তাজ ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের কর্মকর্তা শ্যামল সাহা বলেন, ‘আমাদের ব্যবসা বসে গেছে। বিদেশি পর্যটক কমে যাওয়ায় মার্কুইস স্ট্রিট এলাকার মানি এক্সচেঞ্জগুলো কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে। কারণ, বিদেশি পর্যটক না এলে ডলার-পাউন্ড-রুপির কেনাবেচা কীভাবে চলবে? আমরাই-বা কীভাবে বাঁচব এত কর্মচারী নিয়ে?’

আজ থেকে কলকাতায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, জাদুঘর, সায়েন্স সিটি, বিড়লা প্ল্যানেটারিয়ামসহ বিভিন্ন চিত্তবিনোদনের স্থান। এসব কেন্দ্রে সাধারণত বিদেশি পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে।

কলকাতার সঙ্গে ঢাকা-খুলনার মৈত্রী ও বন্ধন ট্রেন পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আজ থেকে। ঢাকা কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী বাস পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে গত শুক্রবার থেকে। ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এই পরিষেবা।

সড়কপথে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় আসা বাংলাদেশি পর্যটক এবং ভারত থেকে বাংলাদেশে যাওয়া ভারতীয় পর্যটকেরা এখনো ফিরতে পারছেন।

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা রবি মহাপাত্র
বলেন, আজ থেকে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন।

বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তের ভারতীয় অভিবাসন দপ্তরের কর্মকর্তা কুমার সিং বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা বাংলাদেশিরা এই সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরতে পারছেন। আবার বাংলাদেশে যাওয়া ভারতীয় নাগরিকরাও ফিরে আসতে পারছেন এই সীমান্তপথে।