করোনাকে থোড়াই কেয়ার, মাস্ক ছাড়াই ইউরোপে ৩০ হাজার মার্কিন সেনা!

SHARE

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেই নিজেদের সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শনে মাস্ক ছাড়াই ইউরোপে যাচ্ছেন ৩০ হাজার মার্কিন সেনা। গত ৬ মার্চ থেকে জার্মানির উইজবাডেনে ডিফেন্ডার ইউরোপ ২০ সামরিক মহড়া শুরু হয়েছে। সেখানে যোগ দেবেন এই বিপুল সংখ্যক মার্কিন সেনা।

যুক্তরাষ্ট্র কয়েক বছর আগে তার পারমাণবিক পরীক্ষায় সতর্ক না করেই সেনাদের আত্মত্যাগ করেছিল। এবার সেনারা মহামারি করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হতে পারেন এমন সম্ভাবনা স্বত্বেও দেশটি কোন সতর্কতা অবলম্বন করছে না।

যুক্তরাষ্ট্র করোনাভাইরাস সতর্কতা ইতালির জন্য লেভেল ৩ জারি করেছে। এর মানে হচ্ছে নাগরিকদের দেশটিতে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়াতে বলা হয়েছে। লম্বারডি এবং ভেনেটো শহরের জন্য লেভেল ৪ সতর্কতা জারি করেছে। এর মানে হচ্ছে সেখানে ভ্রমণ করা যাবে না। আমেরিকান এয়ারলাইন্স এবং ডেল্টা এয়ারলাইন্স মিলানে তাদের সব ফ্লাইট বাতিল করেছে। মার্কিন নাগরিকদের জন্য জার্মানি, পোল্যান্ড এবং ইউরোপীয়ান দেশগুলোতে লেভেল ২ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ, এই দেশগুলো ভ্রমণে মার্কিন নাগরিকদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের এই নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। ডিফেন্ডার ইউরোপ ২০ সামরিক মহড়ায় অংশ নেওয়ার জন্য এরই মধ্যে ২০ হাজার মার্কিন সেনা ইউরোপের বন্দর এবং বিমানবন্দরগুলিতে পৌঁছাতে শুরু করেছে, তারা ইউরোপে মার্কিন সেনার সবচেয়ে বড় এই মহড়ায় অংশ নেবে। গত ২৫ বছর ধরে মার্কিন সেনারা এই মহড়ায় অংশ নিয়ে আসছে। এপ্রিল-মে মাসজুড়ে চলা এই মহড়ায় প্রায় ৩০ হাজার মার্কিন সৈন্য অংশ নেবে। এই মহড়ায় ন্যাটোর ১৭টি সদস্য রাষ্ট্র থেকে ৭ হাজার সেনা সদস্য অংশ নেবে। সেখানে ইতালির সেনারাও রয়েছে।

২০ হাজার সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে মার্কিন সেনাদের প্রথম সাঁজোয়া ইউনিট যুক্তরাষ্ট্রের সাভানাহ বন্দর থেকে জার্মানির ব্রেমারহেভেনে বন্দরে পৌঁছেছে। ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে মার্কিন ঘাঁটি থেকে আরও ১৩ হাজার সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে মার্কিন সেনারা এই মহড়ায় অংশ নেবে। মূলত জার্মানি, হল্যান্ড এবং বেলজিয়ামে থেকেই এগুলো আসবে।

ডিফেন্ডার ইউরোপ ২০ সামরিক মহড়ায় মার্কিন সেনাদের সঙ্গে ইউরোপের বহু দেশ থেকে কয়েক হাজার সেনা, সামরিক কর্মী এবং বেসামরিক নাগরিক অংশ নেবে। ফলে সহজেই মার্কিন সেনাদের মাঝে মহামারি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে ৩০ হাজার মার্কিন সেনা পুরো ইউরোপীয় অঞ্চল জুড়ে মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত কতটা বাস্তব সম্মত হয়েছে সেটা নিয়ে অনেক সামরিক বিশ্লেষকই প্রশ্ন তুলেছেন।

করোনাভাইরাস সংকট মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র তার নাগরিকদের জন্য যে প্রতিরোধমূলক মানদণ্ড তৈরি করেছে তা থেকে সেনাদের অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। এটা কেবল বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। মার্কিন সেনারা ইউরোপে নিরাপদেই থাকবে এবং আমাদের বাহিনী পুরোপুরি সুস্থ রয়েছে এটা নিশ্চিত করা জরুরি।

করোনার সংকটময় এই পরিস্থিতিতে এধরণের সামরিক মহড়ার আয়োজন কতোটা যুক্তিযুক্ত সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন ন্যাশনাল অথরিটিসের প্রতিক্রিয়া কী? ডব্লিউএইচও এ সম্পর্কে কী করছে? তারা কেবল মুখ এবং নাক নয়, তাদের চোখকেও কী মুখোশ দিয়ে ঢেকে রেখেছে?