মুসল্লিদের নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো আপস নয় : র‍্যাব

SHARE

আগামী ১০, ১১ ও ১২ জানুয়ারি প্রথম ধাপে এবং ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। মুসলমানদের এই অন্যতম বৃহৎ সম্মিলন ১৯৬৭ সাল থেকে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কাকরাইল মারকাজ পরিচালিত মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের আখেরি মোনাজাতের পর ২০২০ সালের ২ পর্বের ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করা হয়। মানুষের যানজটজনিত দুর্ভোগ কমাতে ২০১১ সাল থেকে বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে ভাগ করে আয়োজন করা হচ্ছে।

বিশাল এই জমায়েতে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে নেওয়া হয় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে গঠন করা হয় বিশেষ নিরাপত্তা সেল। আর এই নিরাপত্তাব্যবস্থায় অন্যতম ভূমিকা পালন করে থাকে বাংলাদেশ পুলিশের এলিট ফোর্স র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। বরাবরের মতো এবারও তারা নিয়েছে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা। আর এই পুরো বিষয়টি তদারক ও সমন্বয় করছেন র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল। আর এ কাজে তাঁকে সহায়তা করছেন র‍্যাব ১, ক্রাইম প্রিভেনশন স্পেশাল কম্পানি ও গাজীপুর ক্যাম্প কমান্ডার লে. কমান্ডার আবদুল্লাহ আল মামুন।

বিশ্ব ইজতেমার নিরাপত্তাব্যবস্থার বিষয়ে কালের কণ্ঠের পক্ষ থেকে কথা হয় লে. কমান্ডার আবদুল্লাহ আর মামুনের সঙ্গে। নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি প্রথমেই বলেন, নিরাপত্তার সঙ্গে কোনো আপস নেই। আমরা আমাদের মহাপরিচালক জনাব বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দানের ব্যবস্থা করেছি। প্রতিটি মুসল্লির নিরাপত্তার বিষয়ে যা যা করা প্রয়োজন, আমরা সব করব।

তিনি বলেন, আমরা এর মধ্যেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। ডগ স্কোয়াড দিয়ে পুরো ইজতেমা ময়দান স্যুইপ করা হয়েছে। ইজতেমা শুরু হওয়ার আগের দিন আমরা বিদেশি খিত্তায় আরেকবার স্যুইপ করব। এ ছাড়াও সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড।

পোশাকে, সাদা পোশাকে এবং গোয়েন্দা হিসেবে সারা ইজতেমা ময়দানে ছড়িয়ে থাকবে র‍্যাব সদস্যরা, যোগ করেন তিনি। ৮৭টি দেশি ও একটি বিদেশি খিত্তায় গোয়েন্দা সদস্যরা থাকবেন। তাঁদের প্রতি রয়েছে বিশেষ নির্দেশনা। থাকবে ফুট পেট্রলিং, প্রস্তুত রাখা হবে স্ট্রাইকিং ফোর্স। প্রতি মুহূর্তে সজাগ থাকবে কন্ট্রোল রুম। সেই সঙ্গে মোটরসাইকেল পেট্রলিং ও হেলিকপ্টার টহল তো থাকছেই।

৯০ বা ততোধিক ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার আওতাভুক্ত করা হয়েছে ইজতেমা ময়দানকে। বসানো হয়েছে ১০টি ওয়াচ টাওয়ার। শক্তিশালী দূরবীন হাতে সেগুলোতে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন র‍্যাব সদস্যরা। যেকোনো প্রয়োজনে প্রস্তুত থাকবে অ্যাম্বুলেন্স। প্রাথমিক ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য র‍্যাবের মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত থাকবে বলেও জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

র‍্যাবের নির্দিষ্ট কন্ট্রোল রুমের সামনে আমরা যথেষ্ট পরিমাণ সুপেয় পানির সরবরাহ রাখব। থাকবে সদাপ্রস্তুত চিকিৎসা সহায়তা কেন্দ্র। আর এবারের ইজতেমায় আমাদের পক্ষ থেকে নতুন সংযোজন ‘শাটল বাস’- যোগ করেন তিনি। শাটল বাসগুলো মহাখালী থেকে ইজতেমা ময়দান পর্যন্ত নিয়মিত চলাচল করবে বলেও জানান তিনি।

‘পর্যাপ্তসংখ্যক র‍্যাব সদস্য’ বাক্যটির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, র‍্যাবের মোট ১৫টি ব্যাটালিয়ন থেকে সদস্য তলব করা হয়েছে। তাঁর এরই মধ্যে র‍্যাব ১ ও সদর দপ্তরে সংযুক্ত হয়েছেন।

তবে সবশেষে তিনি বলেন, সবার স্বতঃস্ফূর্ত ও সৌহাদ্যপূর্ণ অংশগ্রহণেই এই বিশাল আয়োজনটি কোনোরকম সমস্যা ছাড়াই এতদিন সম্পন্ন হয়ে এসেছে। আশা করি, এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। সবশেষে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।