ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যকর পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল নীল দল বিপুল জয় পেয়েছে। কার্যকর পরিষদে ১৫টি পদের মধ্যে ১৪ পদেই নীল দলের শিক্ষকরা নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপি-জামাতপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল সাদা দল একটি পদে জয় পেয়েছে।
আজ সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক হাসিবুর রশিদ এই ফল ঘোষণা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিচার্স ক্লাবে সকাল দশটা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
এ বছর ২ হাজার ১১ শিক্ষকের মধ্যে ১ হাজার ৪৩৪ শিক্ষক ভোট প্রদান করেন। ভোট প্রদানের হার ৭১ দশমিক ৩ শতাংশ।
এবছর নীল দল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া। এ নিয়ে অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল টানা চারবারের মতো সভাপতি পদে নির্বাচিত হলেন। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রথমবারের মতো অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া নির্বাচিত হয়েছেন।
সাদা দল থেকে সহ-সভাপতি পদে নীল দলের প্রার্থী অধ্যাপক সাদেকা হালিমকে পরাজিত করে সাদা দলের শিক্ষক অধ্যাপক লুৎফুর রহমান জয়ী হয়েছেন। অধ্যাপক সাদেকা হালিম মাত্র তিন ভোটে পরাজিত হয়েছেন।
বিজয়ীরা হলেন, আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল নীল থেকে যুগ্ম সম্পাদক পদে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ, কোষাধ্যক্ষ পদে অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড লিডারশিপ বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মাদ আবদুল মঈন নির্বাচিত হয়েছেন।
দশটি সদস্যপদে নীল দলের শিক্ষক ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান; মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক জাকিয়া পারভীন; সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা; চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন; অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ; রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মো. আফতাব আলী শেখ; ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মো. আমজাদ আলী; অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়াউর রহমান; ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর দে নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক হাসিবুর রশিদ বলেন, সকাল থেকে উৎসবমুখর পরিবেশে শিক্ষকরা ভোট দিয়েছেন। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। কোনো পক্ষই নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ করেন নি। নীল দলের শিক্ষকরা নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে।
সভাপতি পদে নির্বাচিত অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পেশাগত মর্যাদা রক্ষার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়নে শিক্ষক সমিতি কাজ করবে। এ বছর আমাদের প্রধান নির্বাচনী অঙ্গিকার ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ মর্যাদা অর্জন করা। যেটা পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সপরিবারে নিহত হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শতবর্ষে পদার্পণ, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।