রংপুরে ভোটযুদ্ধ শুরু, মূল লড়াইয়ে সাদ ও রিটা

SHARE

জাতীয় সংসদের রংপুর-৩ আসনে উপনির্বাচনে আজ শনিবার সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে। এবার ১৭৫টি কেন্দ্রে শুধু ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট গ্রহণ করা হবে।

আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার জিএম সাহাতাব উদ্দিন রংপুর সদর ও মহানগরের সব ভোটকেন্দ্রে সকাল ৯টায় ভোট শুরু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী এরশাদপুত্র রাহগির আল মাহি এরশাদ (সাদ) ও বিএনপির রিটা রহমানের মধ্যে মূল লড়াই হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জোটের অংশীদার হিসেবে জাতীয় পার্টি প্রার্থী দেওয়ায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এ আসন থেকে তাদের প্রার্থী প্রত্যাহার করেছে।

ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ইতিমধ্যে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। শেষ হাসি কে হাসে এখন শুধুই অপেক্ষার পালা।

নির্বাচনে ৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন, জাতীয় পার্টি মনোনীত রাহগির আলমাহি সাদ এরশাদ (লাঙ্গল), বিএনপির রিটা রহমান (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ (মোটরগাড়ি), এনপিপির শফিউল আলম (আম), খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মন্ডল (দেওয়াল ঘড়ি) এবং গণফ্রন্টের কাজী মো. শহীদুলস্নাহ বায়েজীদ (মাছ)। এদের মধ্যে ৪ প্রার্থী রংপুর-৩ আসনে ভোটার নন।

নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, রংপুর সদরের ৫টি ইউনিয়ন ও ১ থেকে ৮ নম্বর ব্যতীত ৯ থেকে ৩৩ নম্বর পর্যন্ত রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকার ২৫টি ওয়ার্ড নিয়ে রংপুর-৩ আসন গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৪২ হাজার ৭২ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২১ হাজার ৩১০ জন ও নারী ২ লাখ ২০ হাজার ৭৬২ জন।

নির্বাচনের সব ধরনের প্রচার কাজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার পর থেকে বন্ধ হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ভোট গ্রহণ শুরুর পূর্ববর্তী ৪৮ ঘণ্টা এবং ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ৩ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে ৭ অক্টোবর বিকাল ৫টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় যে কোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল ও শোভাযাত্রার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এছাড়া যান চলাচলের নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, ভোট গ্রহণের আগের দিন অর্থাৎ ৪ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে ভোট গ্রহণের দিন মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় ট্যাক্সি ক্যাব, বেবিট্যাক্সি/ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপভ্যান, কার, বাস, ট্রাক, টেম্পো, লঞ্চ, ইজি বাইক, ইঞ্জিনবোট ও স্পিডবোটগুলোর চলাচলের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে, রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতিসাপেক্ষে সীমিত আকারে যান চলাচল করবে।

তবে জাতীয় মহাসড়ক এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট যানবাহন বা নৌযান ও জরুরি সেবাদানকারী বা এমন যান চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা শিথিলযোগ্য হবে। সাংবাদিক, প্রার্থী ও প্রার্থীর এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষদের গাড়িও এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।

এদিকে, উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন অফিস। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। পাঠানো হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত টিম।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ লাখ ৪২ হাজার ৯২৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিপ্রার্থী রিটা রহমান পেয়েছিলেন ৫৩ হাজার ৮৯ ভোট। ভোট পড়েছিল ৫২ দশমিক ৩১ শতাংশ।

এ আসনের সাবেক সাংসদ হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ গত ১৪ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ সচিবালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) আ ই ম গোলাম কিবরিয়া স্বাক্ষরিত ১৬ জুলাই রংপুর-৩ আসনটি শূন্য হওয়ার গেজেট প্রকাশ করেন। ১ সেপ্টেম্বর উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।