হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, আপনি আসুন: অপর্ণা সেন

SHARE

কলকাতার নিল রতন হাসপাতালে আন্দোলনরত ডাক্তারদের পাশে এবার দাঁড়িয়েছেন তারকারা। আজ শুক্রবার দুপুরে পরিচালক-অভিনেত্রী অপর্ণা সেন, নাট্যকার কৌশিক সেন, সংগীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র এনআরএস হসপিটালে যান। ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেন তারা। বলেন, আন্দোলনে তারা ডাক্তারদের পাশে আছেন।

হাসপাতাল চত্বর থেকেই অপর্ণা সেন মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, হাতজোড় করে অনুরোধ করছি। আপনি আসুন। কথা বলুন। এদের সমস্যা বোঝার চেষ্টা করুন।

তিনি আরো বলেন, আমার বিনীত অনুরোধ আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। আপনি শুধু রোগীদের নন, এই সব ডাক্তারদেরও মুখ্যমন্ত্রী। আপনি এদের মায়ের মতো। আপনি অভিভাবক। একই সঙ্গে আপনি রাজ্যের পূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রীও বটে। এদের নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করুন। হুমকি দিয়ে এই পরিস্থিতি সামলানো যায় না। এরা আমাদের রত্ন। এই পরিস্থিতির শিকার হয়ে যদি এরা রাজ্য ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়, তাহলে ক্ষতি হবে পশ্চিমবঙ্গের। যদি জুনিয়র ডাক্তারদের কোনো কথায় আপনার খারাপ লেগে থাকে, তাহলে আমি অনুরোধ করছি, সন্তান মনে করে ওদের ক্ষমা করে দিন।

কোনো দলের হয়ে নয়, একজন নাগরিক হিসেবে এনআরএস এর আন্দোলনকারীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, জানান অপর্ণা। বলেন, আমি জানি এখানে কোনো ডাক্তার কোনোদিন রোগীর জাত, ধর্ম বা বর্ণ দেখে চিকিত্‍সা করেন না। এই অচলাবস্থার জন্যে রোগীরা যতটা কষ্ট পাচ্ছেন, আমার বিশ্বাস প্রত্যেক ডাক্তার ততটাই কষ্ট পাচ্ছেন।

মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তার আবেদন, একবার এসে যেন তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের কথা শোনেন। বলেন, এরা যদি চলে যায়, তাহলে কি আমাদের উপকার হবে? সারা ভারতের ডাক্তাররা এদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এটা এমনি এমনি হয় না। আমার বারবার অনুরোধ, আপনি একবার নিজের অবস্থান থেকে একটু সরে আসুন। কেউ যদি কিছু বলে থাকে, যাতে আপনার আঘাত লেগেছে, ক্ষমা করুন। আপনি তো বড়।

জুনিয়র ডাক্তারদের অপর্ণা সেন বলেন, এই পরিস্থিতি একেবারই কাম্য নয়। আজ তাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে বলেই তারা আন্দোলনে নেমেছেন। কিন্তু হাজার হোক, তারা তো ডাক্তার। কোন পথে যাবে তারা ঠিক করুক।

আন্দোলনকারী ডাক্তারদের কাছে কৌশিক সেনের আবেদন, এমন কোনো ব্যবস্থা নিন যাতে রোগীর কষ্ট কম হয়, অথচ আপনাদের আন্দোলনও চলবে। একই অনুরোধ জানিয়েছেন অপর্ণা সেন ও।

এনআরএস তথা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যে অচলাবস্থা চলছে, তারই মাঝে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, অবিলম্বে কাজে যোগ না দিলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপর পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে ওঠে। বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের চিকিত্‍সকরা একে একে ইস্তফা দিতে শুরু করেন।

শুক্রবার সকালে কলকাতার আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের কমপক্ষে ৮০ জন চিকিৎসক গণইস্তফা দিয়েছেন। সিনিয়র ডাক্তার এবং প্রফেসররাও রয়েছেন এই তালিকায়।