বাংলাদেশ থেকে জোগান কম, হলদিয়ায় ইলিশ পড়ছে না জামাইদের পাতে!

SHARE

ভারতের বাজারে ইলিশ মাছের সংকট তৈরি হয়েছে, যার পেছনে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ না পাওয়াকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জামাই বাবাজি আসবেন, অথচ শাশুড়ি মাতা তাঁর পাতে ইলিশ দিতে পারবেন না। ‘প্রেস্টিজ পাংচার’ হওয়ার জোগাড়। কিন্তু বাজারে আর ইলিশ কই? থাকলেও জামাইষষ্ঠীতে তার গায়ে হাত দিতে গেলেই ছ্যাঁকা লাগে। তবে খুশির খবর একটাই, ইলিশের সংকট মেটাতে বিকল্প তৈরি হয়ে গিয়েছে। পেংবা মাছ। নামটা অপরিচিত। কেমন খটমটেও। কিন্তু কম ‘লা জবাব’। সুস্বাদু। মণিপুরে জামাইয়ের পাতে ইতিমধ্যেই পরম সমাদৃত।

ইলিশের অভাবে সেই মণিপুরের জলের রুপোলি ফসল এখন হলদিয়ার বাজারে। শুধু তাই নয়, রাজ্যে প্রথম। বৃহস্পতিবার হলদিয়া ব্লকে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে এই মাছের বিক্রি শুরু হল।

কলকাতার হলদিয়া ব্লক মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুমনকুমার সাহু বলেন, বাঙালির জামাইষষ্ঠী, মণিপুরে ‘নিগোল চৌকবা’। বাঙালি জামাইয়ের পাতে ইলিশ যেমন মর্যাদা পায়, মণিপুরে তেমন পেংবা। নিগোল চৌকবা’তে পেংবা ছাড়া ভাবাই যায় না। চারশো থেকে পাঁচশো গ্রাম ওজনের মাছটি ইলিশ এবং রুই মাছের মিশেল মনে হবে। সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্রেশ ওয়াটার অ্যাকোয়া কালচার, সংক্ষেপে সিফা ওড়িশার ভুবনেশ্বর অবস্থিত। সেখানের বিজ্ঞানীরা পেংবা মাছের কৃত্রিম প্রজনন ঘটান। সেখান থেকে গত বছর হলদিয়া ব্লকে আনা হয় পেংবা মাছের ধানি পোনা। ব্লকের বসানচকের শরৎচন্দ্র ভৌমিক, দ্বারিবেড়িয়ার পঞ্চানন মন্ত্রী এবং অরূপ মন্ত্রী এই মাছের চাষ করেন। বৃহস্পতিবার এই মাছ ধরে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে বিপণনে কাজ শুরু হল। জামাইষষ্ঠীকে লক্ষ্য করে বাজারে এসেছে পেংবা। মণিপুরের বাজারে এক হাজার টাকা প্রতি কিলো।

বাংলাদেশ থেকে ইলিশের পর্যাপ্ত জোগান না মেলায় আকাশ ছুঁয়েছে ইলিশের দাম। পাশাপাশি নিম্নচাপের জেরে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বাজারে তাজা ইলিশের জোগান নেই বললেই চলে।

মিয়ানমারের ইলিশ অবশ্য কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে ক্রেতাদের। হিমঘর থেকে আপাতত সেগুলিই বাজারে নিয়ে আসা হচ্ছে। তবে সাইজ বুজে ভারতীয় মুদ্রায় ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত দাম উঠছে ওই মাছগুলোর। এ বছর ছোট আকারের ইলিশও পাওয়া যাচ্ছে অপেক্ষাকৃত বেশি দামে। আকারে একটু বড় হলেই দাম আরও বেশি। কোথাও কোথাও প্রতি কেজি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকায়। এমনকী, ইলিশের দাম পৌঁছে গিয়েছে ভারতীয় মুদ্রায় চার হাজার টাকা পর্যন্ত।

সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন