ভারতের তৎপরতায় জাতিসংঘের দ্বারস্থ আতঙ্কিত পাকিস্তান

SHARE

গত বৃহস্পতিবার জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ভারতের কেন্দ্রীয় আধাসামিরক বাহিনী সিআরপিএফ এর কনভয়ে আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় ৪৪ সেনা এবং তারপর থেকে কাশ্মীরে ২ মেজর-সহ ৬ নিরাপত্তাকর্মীর নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বাধার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ ওই হামলার দায় স্বীকার করার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বেড়়ে চলেছে।

এরমধ্যে সোমবার ১৭ ঘণ্টার এনকাউন্টারে ৩ জঙ্গিকে গুলি করে মেরেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এই তিন জঙ্গির মধ্যে একজন কামরান গাজি বলে দাবি করা হচ্ছে। এই কামরান-ই পুলওয়ামার সিআরপিএফ কনভয়ে হামলার মাস্টার মাইন্ড বলে দাবি করা হচ্ছিল।

স্বাভাবিকভাবেই এই তিন জঙ্গির সঙ্গে পাকিস্তানের সংযোগ পাওয়ার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

পরিস্থিতি যে হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে তা বুঝতে পেরেই মঙ্গলবার জাতিসংঘকে একটি চিঠি লেখেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টেনিও গুতেরেস -কে এই চিঠি-তে পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘অত্যন্ত এক জরুরি অবস্থা অনুধাবন করে আপনার গোচরে এটা আনতে চাইছি যে ভারত যেভাবে সমানে পাকিস্তানের উপর সেনা অভিযানের হুমকি দিচ্ছে তাতে আমাদের এই অঞ্চলে নিরাপত্তা অবস্থার ক্রমশই অবনতি ঘটছে।’

কাশ্মীর সমস্যা নিয়য়ে পাকিস্তান বহুদিন ধরেই তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করছে। কিন্তু, ভারত এর বিরোধিতা করে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার উপরে গো ধরে বসে রয়েছে। সন্দেহ নেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই চিঠিতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপই দাবি করছেন।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির দাবি, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত না করার আগেই ভারত যেভাবে পুলওয়ামাকাণ্ডের সঙ্গে পাকিস্তানের নাম জড়়িয়ে দিয়েছে তা অবাস্তব। তিনি আরও অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন, ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির জন্যই ইচ্ছাকৃতভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে থাকা বিদ্বেষকে জনমানসে বাড়িয়ে তুলছে এবং পরিবেশ-কে অশান্ত করছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব-কে লেখা এই চিঠিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমনও অভিযোগ করেছেন যে, ভারত সিন্ধু জলচুক্তি-রও খেলাপ করার কথা ভাবছে। এমনটা হলে এটা গুরুতর বিষয় হবে। অবিলম্বে এই উত্তেজনা প্রশমিত হওয়া দরকার বলেই মনে করছেন শাহ মেহমুদ কুরেশি। জাতিসংঘের উচিত দুই দেশের মধ্যে এই উত্তেজনা কমাতে উদ্য়োগী হওয়া।

এর আগে নওয়াজ শরিফ-ও দুই দেশের সমস্যা সমাধানে মার্কিন হস্তক্ষেপর দাবি জানিয়েছিলেন। আর এবার সেই দাবি ফের জানালেন ইমরান খান। মার্কিন সরকার অবশ্য বুঝিয়ে দিয়েছে আলোচনার টেবিলেই দুই দেশকে সমস্যা মেটাতে হবে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চিঠি এই মুহূর্তে কতটা কার্য়করি হবে তা বলা মুশকিল।

সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া, এএনআই