‘শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন পৃথিবীর কোথাও হয় না’

SHARE

নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেছেন, ‘আমরা চাই না, এমন কোনো নির্বাচন এই জনগণকে উপহার দিতে, জনগণকে সব সময় আমাদের জবাবদিহি করতে হবে। কিন্তু হানড্রেড পারসেন্ট (শতভাগ) নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, এটা পৃথিবীর কোনো দেশেই হয় না। আমাদের দেশেও হবে না। সুতরাং আমরা বলতে চাই, একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে। যেটা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থাকবে।

আজ শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন কমিশনার ।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আজ নির্বাচনের হাওয়া বইছে। আজ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং নতুন সংসদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত এই হাওয়ার মধ্যেই আমাদের বসবাস। সুতরাং হাওয়াটা যেন কোনোভাবেই বৈরী না হয়- এ নির্দেশনা অবশ্যই আপনাদের প্রতিপালন করতে হবে।’

সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের ব্রিফিংয়ে কবিতা খানম বলেন, নির্বাচন কমিশন কখনোই চাইবে না নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হোক। আমরা শপথ গ্রহণের পর থেকে প্রতিটা নির্বাচনে মাঠে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। ইতোপূর্বে কোনো কমিশন এভাবে সাধারণ নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে বিচরণ করেনি।

নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ‘বিচারকের নিরপেক্ষতায়’ দায়িত্ব পালনের তাগিদ দিয়ে সাবেক এ বিচারক বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে বা অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী হয়ে আপনারা কোনো জাজমেন্ট করবেন না। সবার জন্য সমান আচরণ যেন থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখবেন।

নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত সব ধরনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের সঙ্গে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ‘সদ্ভাব’ বজায় রাখার পরামর্শ দেন এ নির্বাচন কমিশনার।

তিনি বলেন, ‘আইনের মাধ্যমে একটা নির্বাচন তুলে আনার ক্ষেত্রে সবার সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। শুধু নির্বাচন কমিশন এ কাজ সুষ্ঠুভাবে করবে, এ আশা যারা ব্যক্ত করেন, আমি বলব তারা নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্বগুলো ইগনোর করার চেষ্টা করেন।’

কবিতা খানম বলেন, নির্বাচনী দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের মিডিয়ায় কথা বলার ক্ষেত্রে ভারসাম্য রাখা দরকার। এমন কিছু বলা উচিত না যা নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা ঘটতে পারে।

শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিককে তিনি আহ্বান জানান, যেন তারা আচার-আচরণ এবং কথা-বার্তায় ‘নির্বাচনকে অসুস্থ করে’ এমন বিষয়গুলো থেকে দূরে থাকেন।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের হুশিয়ার করে তিনি বলেন, দায়িত্ব পালনে যেন এতোটুকু অবহেলা না হয়। একট সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন তুলে আনার ক্ষেত্রে আপনারা সৎ থাকবেন। নির্বাচন কমিশনের শপথের মর্যাদা রাখার চেষ্টা করবেন। তিন মাসের কর্মকাণ্ড আপনাদের চাকরি জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। সুতরাং আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সৎভাবে আপনারা দায়িত্ব পালন করবেন।

কবিতা খানম বলেন, আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ না করার কারণেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিচ্যুতি ঘটে। কমিশন সেসব ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেবে না।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন হবে, এটা ফিক্সড। এই নির্বাচন হবে সব দলের অংশগ্রহণে। তাই নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক।’

দেশের অনেক জায়গায় এখনো ব্যানার, পোস্টার নামানো হয়নি উল্লেখ করে হেলালুদ্দীন আহমদ নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘১৮ নভেম্বরের মধ্যে যাতে এগুলো নামিয়ে ফেলা হয় এবং মনোনয়নপ্রাপ্তরা যাতে ব্যানার-পোস্টার লাগানোর সুযোগ পান।’

তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন ২ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর এবং ভোটের দিন ৩০ ডিসেম্বর।