আজ রোববার আষাঢ়ের প্রথম দিন

SHARE

ড়ঋতুর বাংলাদেশে গ্রীষ্মের দাবদহ ও ভ্যাপসা গরম প্রশমনের প্রাণষ্পর্শী বর্ষাঋতুর প্রথম দিন।

আবহমান কাল ধরে বাঙালির জীবন, পরিবেশ, কৃষ্টি, সামাজিকতা, আনন্দ-বেদনা, চলন-বলন, গান, উৎসব, ব্যবসা-বাণিজ্য, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে ঘিরে বর্ষা আলোকবর্তিকা হিসেবেই সমাদৃত। সার্বিক বোধন আর আরাধনায় আষাঢ়-শ্রাবণের বর্ষকাল বাঙালিকে আবিষ্ট করে রেখেছে।image_86388_0

এজন্যই বর্ষার আগমনের সূচনালগ্নে আষাঢ়ের প্রথম দিনটিকে বরণ করে নিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সর্বত্র বিভিন্ন সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আদিকাল থেকে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় বর্ষাঋতু নিয়ে রয়েছে উচ্ছ্বসিত বন্দনা, অনুরাগ ও স্তুতি। রহস্যময়ী এ বর্ষার রূপ, বৈচিত্র্য, চমক, বর্ণচ্ছটা এবং আকাশ- প্রকৃতির গভীর মিতালী শিল্প-সাহিত্যের সরস উপকরণ হিসেবে আবহমানকাল থেকেই অনুপ্রাণিত ও স্পন্দিত করছে শিল্পী, কবি ও সাহিত্যিকদের।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্য সাহিত্যসহ সব ধরনের সাহিত্যকর্মে বর্ষা স্থান পেয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বিশ্বকবির কাছে প্রিয় ঋতু ছিল বর্ষা। তাই তার বিভিন্ন গানে প্রজ্জ্বোল হয়ে উঠে এসেছে মেঘ-মেদুর বর্ষার রূপ ঐশ্বর্যের শিল্পিত বর্ণনা। তিনি লিখেছেন- ‘বজ্র মানিক দিয়ে গাঁথা, আষাঢ় তোমার মালা/ তোমার শ্যামল শোভা বুকে বিদ্যুতেরই জ্বালা ॥/ তোমার মন্ত্রবলে পাষাণ গলে, ফসল ফলে/ মরু বহে আনে তোমার পায়ে ফলের ডালা ॥…’ অথবা ‘বাদলের ধারা ঝরে ঝরঝর,/ আউশের ক্ষেত জলে ভরভর,/ কালি-মাখা মেঘে ওপারে আঁধার ঘনিয়েছে দেখ্ চাহি রে।/ ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে…’/ অথবা ’বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল।’

তবে কবির এমনই আহবানের মতো দেশবাসীরও আশা, বর্ষার আগমনে তাপিত গ্রীষ্মের দীর্ঘ অধ্যায়ের অবসান হবে। দাবদাহে হাঁসফাঁস হয়ে ওঠা মানুষগুলো স্বস্তি পাবে। জলভরা মেঘের আষাঢ় এসে যবনিকা টেনে দেবে বহমান দীর্ঘ তাপদহনের জ্বালা- যন্ত্রণার অধ্যায়ের, অর্থাৎ গ্রীষ্মের।

বর্ষার আগমনে দাবদাহে কাহিল মানবকুলের সঙ্গে মুক্তি পাবে প্রকৃতি এবং উদ্ভিদরাজিও। শান্তি, স্বস্তি ও জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে পেতে তাই মানুষ ও প্রকৃতি উভয়ের মধ্যেই চলছে একে বরণ করে নেয়ার নানা আয়োজন।