‘ভারতীয় দলকে নিয়ে এমন হাসি-তামাশা কেউ করেনি’

SHARE

roshaloপ্রথম আলোর ‘রসালো’তে প্রকাশিত গ্রাফিক্স নিয়ে ভারতীয় বিশেষ করে কলকাতার মিডিয়া ক্ষেপে গিয়েছে। গতকাল এই নিয়ে  ভারতের কয়েকটি পত্রিকা ও নিউজপোর্টাল সংবাদ প্রকাশ করে। আজও এই নিয়ে কলকাতার পত্রিকা নিউজ করেছে। আজ আনন্দবাজার পত্রিকা এই নিয়ে যে প্রতিবেদন ছেপেছে। তাতে অবশ্য উগ্রতা নেই। তবে টাইমস অব ইন্ডিয়া গ্রুপের বাংলা দৈনিক এই সময় বাংলাদেশকে নিয়ে যা-তা লিখেছে।

আনন্দবাজারের প্রতিবেদন:

কারও ভাবাবেগে আঘাত করা নয়। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ঘটানোও নয়। পদ্মাপারের সংশ্লিষ্ট দৈনিকে ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে যে গ্রাফিক্স বেরিয়েছে, তা নেহাতই ওই ম্যাগাজিনের চরিত্র মেনে। যা কৌতুককে প্রাধান্য দেয়।

বাংলাদেশ বলে দিল, গ্রাফিক্স-বিতর্কে ভারত তাদের ভুল বুঝেছে।

বাংলাদেশের প্রথম সারির দৈনিকে এক গ্রাফিক্সকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার ধুন্ধুমার লেগে যায় ভারতে। সংবাদসংস্থা থেকে বিভিন্ন ক্রিকেট ওয়েবসাইট- ওই বিতর্কিত গ্রাফিক্স প্রকাশ করায় উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। বাংলাদেশে যা নিয়ে ফোন করে জানা গেল, তারা নাকি ঘটনায় স্তম্ভিত। সংশ্লিষ্ট দৈনিকের ক্রীড়াসম্পাদক উৎপল শুভ্র বলেও দিলেনম, ‘‘এটা একটা ফান ম্যাগাজিন। এর পিছনে কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। কাউকে আঘাত দিতে এটা করা হয়নি।’’

বিতর্কটা ঠিক কোথায়?

ছবিতে দেখানো হচ্ছে, টাইগার স্টেশনারি নামক এক দোকানে মুস্তাফিজুর কাটার পাওয়া যাচ্ছে। পাশে কাটার হাতে দাঁড়িয়ে স্বয়ং মুস্তাফিজুর রহমান। ঠিক নীচে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি সহ দাঁড়িয়ে সাত ক্রিকেটার। সামনে একটা ব্যানার যে, আমরা ব্যবহার করেছি। আপনারাও করুন। এবং প্রত্যেক ক্রিকেটারের মাথা অর্ধেক কামানো।

বিতর্ক এখানে। যা নিয়ে বলা হতে থাকে, বিজ্ঞাপনী যুদ্ধ পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু একটা সংবাদপত্র এটা কী ভাবে করতে পারে? সোশ্যাল মিডিয়াতেও ঝড় উঠে যায়। কিন্তু অভিযুক্ত পক্ষ থেকে বলা হলো যে, বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা খারাপ করলে তাদেরও বাঘ থেকে বেড়ালে নামিয়ে আনা হয়েছে। মন্ত্রী-আমলারাও বাদ যান না। আসলে যখন যে ব্যাপারটা শিরোনামে থাকে, সেটাকে নাকি এ ভাবে ‘ক্যারিকেচার’ করা হয়। বিশেষ এই ক্রোড়পত্রের চরিত্রই হলো, কৌতুক করা। নামেই তার প্রমাণ আছে। নামটা কী? ‘রসালো’!

 ‘অভব্য’ প্রতিবেশীর হাতে ‘ন্যাড়া’ ভারত

এই শিরোনামে সংবাদ ছেপেছে এই সময়।পত্রিকাটি লিখেছে:

‘ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ জিতে বোধহয় মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের’। একটি ছবি দেখে সহাস্য মন্তব্য এক পথচারীর। না, ঠিক সহাস্য ছিল না। শত হলেও ভারতীয় দলকে নিয়ে এমন হাসি-তামাশ এর আগে কোনো দেশ করছে বলে তো মনে পড়ছে না। তবে ‘অভব্যতার’ নজির গড়ে বাংলাদেশের এক প্রথম শ্রেণির দৈনিক অধিনায়ক ধোনি-সহ আরও ৬ ক্রিকেটারকে অর্ধেক ন্যাড়া অবস্থায় তাদের কভার পেজে ছাপল। যেখানে ‘নাপিত’-এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন বাংলাদেশি বোলার মুস্তাফিজুর রহমান।

ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি-সহ আরও ৬ ক্রিকেটার, বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, অজিঙ্কে রাহানে, রবীন্দ্র জাডেজা এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন একটি ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাতে লেখা, ‘আমরা ব্যবহার করেছি, আপনিও করুন!’ এর ওপরে বাংলাদেশি বোলার মুস্তাফিজুর রহমান একটি কাটার হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘এখানে বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত মুস্তাফিজ কাটার পাওয়া যায়’। তার নীচে ঠিকানা দেওয়া রয়েছে, স্টেডিয়াম মার্কেট মিরপুর, ঢাকা। মানে ঢাকার স্টেডিয়ামকে সেলুন হিসাবে দেখিয়ে মুস্তাফিজকে ‘নাপিত’ও বানানো হল। সেই সেলুনে ‘ন্যাড়া’ করা হলো ভারতীয় খেলোয়াড়দের।

এটাকে ঠিক কী বলা যায় জানা নেই। অসভ্যতা, অভব্যতা নাকি অনাস্বাদিত কোনও বস্তুর স্বাদে মাথা খারাপ হয়ে যাওয়ার উদাহরণ। কারণটা যাই হোক, তাতে অন্য দেশের আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের নিয়ে মজা করার এমন নজির বিশ্ব ক্রিকেটে মিলবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। ঘটনা দু’ দেশের সমর্থদের মধ্যে যে যথেষ্ট উত্তেজনা তৈরি করতে পারে তা নিয়েও ভাবনা-চিন্তার অবকাশ দেখা গেল না এমন ‘ন্যক্কারজনক’ কাজে।