অনন্ত’র টাইমলাইন

SHARE
ananto bijoyমঙ্গলবার সকালে দুষ্কৃতিকারীরা কুপিয়ে হত্যা করেছে অনন্ত বিজয় দাসকে। ব্লগ সাইট মুক্তমনায় নিয়মিত লিখতেন তিনি৷

হত্যার কারণ সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যার পর মুক্তমনার আরো এক ব্লগারের মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আবারো তোলপাড় শুরু হয়েছে।

তার মৃত্যুর পর অনেকেই মুক্তমনায় প্রকাশিত অনন্তর পোস্ট ও ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত টাইমলাইন নিয়ে কৌতুহলী হয়ে উঠেছেন।

অনন্ত বিজয় দাস
গত দু’বছর ধরেই ইন্টারনেটে একটি হিট লিস্ট নিয়ে আলোচনা চলছে৷ বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের ৮৪ জন ব্লগার, অ্যাক্টিভিস্টের নাম রয়েছে সেই তালিকায়, যাদের মধ্যে ন’জন এখন পর্যন্ত খুন হয়েছেন৷ মানবাধিকার সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাআউট বর্ডার্স এই তালিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷ তবে পুলিশ লিস্টের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করেনি৷

নিহত ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ মুক্তমনা ব্লগে মূলত মানুষের জন্মের ইতিহাস, জীববিবর্তন, বিবর্তনবাদ, ডারউইন তত্ত্ব ও বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে লেখালেখি করতেন।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা সিলেটে মঙ্গলবার সকালে দুষ্কৃতিকারীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

তাকে হত্যার কারণ সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে এর আগে যে তিনজন ব্লগারকে প্রায় একইভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে ধারণা করা হয় যে ইসলামের সমালোচনা করার কারণেই তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে।

প্রশ্নবিদ্ধ পুলিশ
ব্লগার দাস হত্যাকাণ্ডের পর আরিফ জেবতিক ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘৮৪ জনের একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছিল দুই বছর আগে, তালিকা থেকে নবম হত্যা হয়েছে আজকে সিলেটে৷ তালিকা নিশ্চয়ই চূড়ান্ত নয়, গত দুই বছরে আরো নাম সেই তালিকায় নির্ঘাত যুক্ত হয়েছে৷ কিন্তু অন্তত এই ৮৪ জনের ব্যাপারে গত ২ বছরে কোনো খোঁজখবর হয়নি, তারা নিয়মিত বিরতিতে খুন হওয়া শুরু করেছেন৷”

মুক্তমনায় প্রোফাইল
বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানমনস্কতার ছোটকাগজ ‘যুক্তি’র সম্পাদক। মানবতা এবং যুক্তিবাদ প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০০৬ সালে মুক্তমনা র্যাশনালিস্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। প্রকাশিত প্রবন্ধ গ্রন্থ : (১) পার্থিব, (সহলেখক সৈকত চৌধুরী), শুদ্ধস্বর, ঢাকা, ২০১১। (২) ডারউইন : একুশ শতকে প্রাসঙ্গিকতা এবং ভাবনা, (সম্পাদিত), অবসর, ঢাকা, ২০১১। (৩) সোভিয়েত ইউনিয়নে বিজ্ঞান ও বিপ্লব : লিসেঙ্কো অধ্যায়, শুদ্ধস্বর, ঢাকা, ২০১২। (৪) জীববিবর্তন সাধারণ পাঠ (মূল: ফ্রান্সিসকো জে. আয়াল, অনুবাদ: অনন্ত বিজয় দাশ ও সিদ্ধার্থ ধর), চৈতন্য প্রকাশন, সিলেট, ২০১৪

ফেসবুক টাইমলাইন
ব্লগার অনন্তর মৃত্যুর পর ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত টাইমলাইনে মন্তব্য করছেন অনেকেই। মঙ্গলবার রাত ১১টা ১০ মিনিটে Jannatul Laboni‎ লিখেছেন- দাদা তুমি ছিলে , আছো, থাকবে। আমাদের চেতনায়, ধমনীতে। দাদা আমরা তোমরা উতরাধিকারী। lal salam। লীল লোহিত ১০টা ৫৮ মিনিটে লিখেছেন, অনন্ত বিজয়, তোমার মৃত্যু আমাকে অপরাধী দেয়! ১০টা ৩৪ মিনিটে Shuvo Majumdar লিখেছেন, Dada Rest in peace. ৯টা ৩৬ মিনিটে মন লিখেছেন, আমি দুঃখিত,দাদা। সত্যিই বলেছিলেন আপনি। আমারই বুঝতে দেরি হয়ে গিয়েছিল। ক্ষমা করো, দাদা।

এ ছাড়া অপ্রস্তুত চৌধুরী লিখেছেন, কত কথা বাকি ছিল।

Russell Jdp লিখেছেন, যেসব গোয়েন্দা সংস্থা বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা অথবা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যাক্তিরা এই প্রোফাইল এখন ঘাটাঘাটি করছ তাদের প্রতি রইলো তীব্র ঘৃণা । REP Ananta Bijoy।
Penumbra Talisman লিখেছেন, He was a one of my good friend.We used to hang around,studied together.He was a good and kind person.So many sweet memories…..Can’t believe that he is no longer alive..I read his statuses and told him not to write like that.Some people are only mentioning that he was against Islam but as far I have seen not only Islam,he was against all of the religions.Our prophet Muhammad SAW’s(Peace be upon him)uncle Abu Lahab was the biggest critics and created so much problems for him,hurt him but still Prophet didn’t do anything to him.Now days using name of Islam people are doing all the bad things and trying to justify.My point is,why wasn’t he left alone and let him write his blog.If some one is a believer,he is not gonna follow him.Almost 10 years or more then that didn’t meet him but still he was my friend and remain as a friend.Allah Rabbul Al Amin please forgive him and he knows the best.Whatever he wrote on his blog,still didn’t deserve to be killed.I want justice for his death and his family…।

চার্বাক শুভ্র লিখেছেন, কদিন আগে দেখায় বলেছিলাম, কবে বিয়ে করবেন অনন্ত দা ? বিয়েটা আর করা হলোটা, চাকরিটা আপনি পেয়েছিলেন সত্যি !

Utsab H Pronoy লিখেছেন, ভাবতে পারছিনা যে আপনি আর আমাদের মাঝে নেই! তিন ঘণ্টা আগে আপনার স্ট্যাটাসটা পড়ে ক্লাসে গিয়েছিলাম, আর এখন এসে দেখি…

কী ছিল সেই স্ট্যাটাস?
মঙ্গলবার সকালে ফেসবুকে দেয়া তার শেষ স্ট্যাটাসটি হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

“একজন ক্ষমতাসীন সাংসদ শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে প্রকাশ্যে চাবুক মারার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। চাবুক তো একসময় জমিদারদের হাতে হাতে থাকতো। প্রজাদের পান থেকে চুন খসলেই বলা নেই, কওয়া নেই চাবকিয়ে পিঠের চামড়া তুলে ফেলতো তারা। কিন্তু জমিদাররা পুকুর চুরি করলেও কারো মুখে রা কাটতো না!

ভাগ্য ভালো বলতে হয় আমাদের, এখন সেই আর জমিদারি যুগ নেই, তবে বিলুপ্তপ্রায় অঙ্গ অ্যাপেনডিক্সের মতো কতিপয় উচ্ছিষ্ট জমিদার রয়ে গেছে এখনও! জনাব সাংসদ, আপনি কোন অপেনডিক্স বংশের জমিদার বলবেন কি?

সাংসদের চাবুক মারার কথা শুনে আমারও অধ্যাপক আজাদের মতো জানতে ইচ্ছে করে, আপনি কী পাস সেটা এখন আর জানার দরকার নেই, আপনি কী ফেল সেটাই না-হয় বলুন! মেধা-গুণ-বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার কোনো দিক দিয়ে যে অধ্যাপকের হাঁটুর কাছে বসার যোগ্যতা এদের নেই তারাই আবার ওই অধ্যাপককে চাবুক মারার কথা বলে! কলিকালের শিক্ষা একেই বলে!

সাংসদ ক্ষমতার জোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মেম্বার হয়েছেন, তাতেই লঙ্কা বিজয় করে ফেলেছেন ভাবখানা ধারণ করে আছেন! একটা অনির্বাচিত সংসদের মেম্বার হয়েছেন, যেখানে লজ্জায় আপনাদের বিনম্র হওয়ার কথা, তা-না, উল্টো আপনাদের অনির্বাচিতদের ক্ষমতার দম্ভ দেখলে মনে হয়, বেহায়া আর কাকে বলে!

সাংসদ, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের দোরগোড়ায় আপনি কখনো গিয়েছেন কি-না সেটা জানার দরকার নেই আমাদের, আপনি বরং প্রাইমারি স্কুলের একজন শিক্ষককের নাম বলুন, বেঁচে থাকলে ওই শিক্ষককে আমরা জিজ্ঞেস করতাম, শৈশবে এরকম একটা বেয়াদপকে শিক্ষা দিয়ে নিজের অর্থপ্রাপ্তি ঘটানোর চেয়ে আপনার বরং কৃষিকাজই উত্তম ছিল। শিক্ষকতা পেশাকে কলুষিত করার কী দরকার ছিল!

জনাব সাংসদ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষককের বিরুদ্ধে “সিলেট-বিদ্বেষ”-এর অভিযোগ এনেছেন। তা জনাব, সিলেটের প্রতি এতো “আলগা-প্রেম” দেখানোর দরকারটাই বা কী! সিলেট কি বাংলাদেশের ভিতরে অন্য কোনো দেশের ছিটমহল, নাকি অন্য দেশের ভিতরে বাংলাদেশের কোনো ছিটমহল! আপনি কি কখনো প্রমাণ করতে পারবেন, আপনার তথাকথিত অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক “বাংলাদেশ-বিদ্বেষী”! অধ্যাপকের প্রতি আপনাদের এতো গাত্রদাহের কারণটা কি? শুনেছি এই সাংসদের পিতা ছিলেন একাত্তরের পাকিস্তানের গণহত্যার সহযোগী শান্তি কমিটির প্রভাবশালী ব্যক্তি। আর আমাদের বিশ্ববিদ্যলয়ের অধ্যাপক স্বাধীনতাবিরোধীদের বিপক্ষে একটি বজ্রকঠিন সাহসী কণ্ঠ। তিনি ক্লাসে, লেখালেখিতে, ভাষণে তিনি মুক্তিযুদ্ধের কথা বলেন, ৭১-এর চেতনার কথা বলেন, স্বাধীনতার কথা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা বলেন। শিক্ষার্থীরা যেন অন্তর থেকে বাংলাদেশকে ভালোবাসে এজন্য দীর্ঘদিন ধরে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বলেই বোধহয়, আমাদের সাংসদের অধ্যাপকের নাম শুনলেই গাত্রদাহ শুরু হয়। সমীকরণটা বেশ সোজা।

সাংসদ অভিযোগ করেছেন, ওই শিক্ষকের কারণে নাকি সিলেটবাসীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে না!! হাস্যকর কথাবার্তা! সিলেটবাসী মেধার জোরে পরীক্ষা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে, এতে কার কি সমস্যা আছে? আঞ্চলিকতার ভিত্তিতে কোটাভিত্তিক ব্যবস্থা যারা চান সিলেটিদের জন্য, তাদের উদ্দেশ্যে বলি, ঢাকাবাসী যদি দাবি করে শুধু ঢাকাইয়ারা ঢাবিতে পড়বে, অন্য কেউ না, চট্টগ্রামবাসী যদি দাবি করে শুধু চট্টগ্রামের লোকেরা কেবল পড়বে তাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে, রাজশাহী, খুলনা, বরিশালে যদি এমন দাবি উঠে তবে তো বাংলাদেশ আর অখণ্ড দেশ বলার দরকার নেই… বিশ্ববিদ্যালয়কে ভিত্তি করে একেকটা অঞ্চলকে স্বাধীন দেশ বানিয়ে দিলে চলবে! সিলেটিরা কি ঢাবিতে, চবিতে, রাবিতে লেখাপড়া করছে না? শাবিপ্রবিতে কি সিলেটিরা পড়ছে না?

জনাব সাংসদ, বিশ্ববিদ্যালয় শব্দটার মানেই হচ্ছে বিশ্বপরিসরের বিদ্যালয়! তা আপনাদের মতো কতিপয় “ছিলটি মৌলবাদী”র বক্তব্য শুনলে মনে হয়, বিশ্ববিদ্যালয়কে আপনারা নিজের এলাকার প্রাইভেট কিন্ডারগার্টেনের চেয়ে বেশি কিছু মনে করেন না। হয়তো ক্ষমতাসীন সাংসদ হওয়ায় আপনি নিজে কোনো প্রাইভেট স্কুল বা কিন্ডারগার্টেনের পরিচালনা-কমিটির সদস্য, তাই বিশ্ববিদ্যালয় আর পারিবারিক সম্পত্তি কিন্ডারগার্টেনের মধ্যে তফাৎ আপনি খুঁজে পান না। “ছিলটি-মৌলবাদী”দের কাছে সিলেট বাংলাদেশের কিছু নয়, সিলেট আলাদা একটা রাষ্ট্র! তাই বলি কী, সিলেটকে আগে বাংলাদেশ থেকে আপনারা বিচ্ছিন্ন করে ফেলুন, আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করুন, তারপর না-হয় যতখুশি “সিলেটি-প্রেম” দেখাবেন, আর তথাকথিত “সিলেট-বিদ্বেষী”দের খুঁজে বেড়াবেন। বাংলাদেশে থেকে, বাংলাদেশের খেয়ে, বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে, বাংলাদেশি পাসপোর্ট হাতে নিয়ে, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সাংসদ হয়ে বেশরমের মতো “আঞ্চলিকতা” করে বেড়াবেন তা তো হতে পারে না! আপনারা না-হয় আগে বাংলাদেশি আইডেনটিটি ত্যাগ করুন!

২০০৭ সালের দিকে আমি যখন “যুক্তি”র প্রথম সংখ্যাটা সম্পাদনা করি, সেখানে লেখক সুমন তুরহান-এর লেখা প্রকাশ করেছিলাম, যার নাম ছিল “সিলেটি মৌলবাদ”। এই লেখার শেষের দিকের কিছু অংশ এখানে তুলে ধরছি :

“সিলেট, মহাসমুদ্রের একটি ক্ষুদ্রতম চর, আর আমরা সেই চরের অধিপতিরা, আর কিছু করতে না পারলেও জন্ম দিয়েছি একটি স্বতন্ত্র মৌলবাদের। সিলেটি মৌলবাদ, অত্যন্ত নীরবে, বহুদিন ধরেই ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ মহামারি আকারে, এখনই এই প্রগতিবিরোধী আঞ্চলিকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো দরকার। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিজেদের গোষ্ঠীবদ্ধ করে রেখে কোনো ইতিবাচক অর্জন আনা সম্ভব নয়। কোনো মুক্তমনের মানুষই আঞ্চলিক মৌলবাদে দীক্ষিত হতে পারে না; পারেন না সংকীর্ণতার দেয়ালে নিজেকে আবদ্ধ করে রাখতে। পৃথিবীটা অনেক বড়ো, তবে আমাদের সুশীল ভণ্ডরা এখনো বেশ আদিম, তাঁদের সময় এসেছে কুয়োর বাইরে বেরিয়ে এসে বিশাল বিশ্বটাকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার। আমরা প্রত্যেকে মানুষ, এবং আমরা প্রত্যেকেই বাঙলাদেশের বাঙালি–এই সহজ সত্যটি উপলব্ধি করতে সিলেটবাসীর আর কতোকাল লাগবে?”

পুলিশের দায়িত্বহীনতা নিয়ে স্ট্যাটাস
এর আগে সোমবার তিনি অভিজিৎ রায় খুনের সময় পুলিশের দায়িত্বহীনতা নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। একদিন পরই তাকেও খুন হতে হলো। এ খুনের সময়ও পুলিশের দায়িত্বহীনতার অভিযোগ তুলছেন অনেকেই। পাঠকদের জন্য অনন্তর এ স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

“অভিজিৎ রায়কে যখন খুন করা হয়, অদূরেই পুলিশ দাঁড়িয়ে তামাশা দেখেছিল। খুনিরা নিশ্চিন্তে খুন করে চলে গেল। পরে পুলিশ বলে তাদের নাকি দায়িত্বে অবহেলা ছিল না। বড় জানতে ইচ্ছে করে তাদের দায়িত্বটা আসলে কী!
ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে যখন খুন করে খুনিরা পালিয়ে যাচ্ছিল তখনও কিন্তু পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু পুলিশের কপাল খারাপ, তারা বলতে পারলো না— এক্ষেত্রেও তাদের কোনো দায়িত্বে অবহেলা ছিল না। কারণ, লাবণ্য নামের তৃতীয় লিঙ্গের একজন মানবিক মানুষ খুনিদের ধরে ফেলেন। খুনিদের শ্রীঘরে পাঠিয়ে দেন।

বর্ষবরণে হাজার হাজার মানুষের সামনে যখন নারীদের একে একে লাঞ্ছনা করা হচ্ছিল পুলিশ তখন নিধিরাম সর্দার। তারা তখন মূলত দায়িত্ব অবহেলা না করতে সচেষ্ট ছিল। যৌনসন্ত্রাসী গুলোরে পালিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করে দিতেই তারা ব্যস্ত ছিল। তাইতো লিটননন্দীসহ আরো কয়েকজন মিলে কয়েকটা যৌনসন্ত্রাসীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন, পুলিশ কিছুসময় পরে এদের ছেড়ে দেয়। মিডিয়ায় এবিষয়ে যখন হৈচৈ, পুলিশ তখন সাফ অস্বীকার করে এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। কেউ তাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি!! সিসিটিভির ফুটেজে যখন অপরাধীদের দেখা গেল, তখন তারা চুপ। পুরানো গিটার আবার বাজালো। কেউ তাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেনি। সোশাল মিডিয়ায় এতোদিনে কয়েকটা যৌনসন্ত্রাসীকে চিহ্নিত করার পরও পুলিশ নিষ্ক্রিয়। তাদের কোনো দায়িত্বে অবহেলা নেই।

ছাত্রইউনিয়নসহ কয়েকটি বামসংগঠন ডিএমপি পুলিশের কাছে প্রতিবাদ লিপি দিতে গেল, অপরাধীদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, নিদেনপক্ষে কোনো উদ্যোগ কেন নেই…. পুলিশ তখন ঝাপিয়ে পড়ে। লাথি দিয়ে, বন্দুকের বাঁট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আহত করে!! এক্ষেত্রেও আমি শুনতে পাই… আসলেই পুলিশের দায়িত্ব অবহেলা নেই! কিন্তু বড়ই জানতে ইচ্ছে করে …. পুলিশের দায়িত্বটা আসলে কী!!”