ব্যাংকগুলোকে ছিটমহলবাসীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান

SHARE

atiurrছিটমহলবাসীদের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে ও অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করে তুলতে ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও এনজিওদের সিএসআর কার্যক্রমের আওতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে মাস্টারকার্ড, ব্যুারো এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক আয়োজিত ১০ টাকার হিসেবধারীদের ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি প্রোগ্রামের উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

গভর্নর বলেন, ‘ছিটমহলবাসীরা দীর্ঘদিন স্বাভাবিক জীবন যাপন থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। তাদের চিকিৎসা, শিক্ষা, অর্থনৈতিকসহ সকল ক্ষেত্রেই পিছিয়ে আছে। তাদেরকে স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ফিরিয়ে আনতে সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে আমাদের সকলের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। আমি আশা করবো দেশের ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও এনজিওগুলো তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে।’

আতিউর রহমান ১০ টাকার হিসেবধারীদের ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে বলেন, এ ধরনের হিসাব খোলার ফলে এখন প্রান্তিক চাষিরা সহজে ঋণ নিতে পারছেন। ব্যাংকগুলো এজন্য আমাদের কাছ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছে। এছাড়া যেসব কৃষকদের কৃষিতে পাওয়া ভর্তুকির টাকা মাঝপথেই হারিয়ে যেত তা ১০ টাকার হিসেবের জন্য এখন আর হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন তহবিলে পরিচালন ব্যয়ের ভর্তুকি যদি সরকার প্রদান করে তবে প্রান্তিক চাষিদের আমরা ব্যাংক রেটে (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) ঋণ দিতে পারবো।

মাস্টারকার্ডের সাউথ এশিয়ার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ভিকাস ভার্মা বলেন, ব্যুরো বাংলাদেশ ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সহযোগিতায় ১০ হাজার জন ১০ টাকার ব্যাংক হিসাবধারীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মসূচি ঘোষণা করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এ প্রশিক্ষণ বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দিবে যা তাদেরকে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে এবং পরিবার ও সমাজে সামগ্রিক অবদান রাখতে আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তুলবে।’

এদিকে মাস্টারকার্ড দেশের সাধারণ জনগোষ্ঠীকে সহায়তা প্রদান ও তাদের ব্যবসায়ী হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি স্বরূপ ব্যুরো বাংলাদেশ এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সহযোগিতায় ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি প্রোগ্রামের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরুর ঘোষণা দিল। এর আওতায় ১০ হাজার ১০ টাকার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হোল্ডার বা হিসেবধারীদের ফিন্যান্সিয়াল অ্যান্ড বিজনেস লিটারেসি সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হবে।

প্রোগ্রামটি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিভলবিং রিফাইন্যান্সিং ফান্ডের মাধ্যমে ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন তৈরিতে সহায়তা করবে এবং মাইক্রো ফিন্যান্স লোনের যথাযথ ব্যবহারের জন্য প্রশিক্ষণ দিবে। মাস্টারকার্ড ২০১৩ সালে বাংলাদেশে এর প্রথম অফিস চালু করাকে চিহ্নিতকরণে প্রথম পর্যায়ে ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি প্রোগ্রাম শুরু করে। এর আওতায় ব্যুরো বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় দেশের এক লাখেরও বেশি নারী উদ্যোক্তাকে ফিন্যান্সিয়াল অ্যান্ড বিজনেস লিটারেসি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন মাস্টারকার্ডের সাউথ এশিয়ার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ভিকাস ভার্মা, ব্যুরো বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল কুদ্দুস ও মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল প্রমুখ।