চীনের ২০০ বিমান ওড়ানো ‘বন্ধ’ রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র, ফের হুমকি ট্রাম্পের

SHARE

চীন যদি বিরল ধাতুর চুম্বক রপ্তানি কমিয়ে দেয় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ২০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করবে বলে আবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে নাজুক বাণিজ্য সমঝোতা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের চুম্বক দিতে হবে, যদি তা না দেয়, তাহলে আমাদের ২০০ শতাংশ শুল্ক বসাতে হবে বা কিছু একটা করতে হবে।’

বেইজিংয়ের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ চাপের হাতিয়ার দেখিয়েছে ট্রাম্প—বিমান যন্ত্রাংশ।
তিনি দাবি করেন, ‘আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে বোয়িং যন্ত্রাংশ না দেওয়ায় তাদের ২০০টি বিমান উড়তে পারেনি। কারণ তারা আমাদের চুম্বক দেয়নি।’

বোয়িং বর্তমানে চীনের কাছে ৫০০ পর্যন্ত বিমান বিক্রির একটি বড় চুক্তির পথে রয়েছে বলে জানা গেছে, যা বাণিজ্য আলোচনায় বিমানশিল্পের গুরুত্বকে তুলে ধরছে।

এদিকে ট্রাম্পের সতর্কবার্তার আগে জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে চীনের বিরল ধাতব চুম্বক রপ্তানি ৬৬০ শতাংশ বেড়েছে ও জুলাইতেও এ ধারা অব্যাহত ছিল।
বিশ্বে এই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণের সরবরাহ শৃঙ্খলে চীনের প্রভাবশালী অবস্থান রয়েছে তারা প্রায় ৯০ শতাংশ বিরল ধাতব চুম্বক উৎপাদন ও পরিশোধন প্রক্রিয়ার দখলে রেখেছে। এতে বেইজিং বড় ধরনের কৌশলগত সুবিধা পাচ্ছে, কারণ মার্কিন গাড়ি, ইলেকট্রনিকস ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি শিল্প এ উপকরণের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

সেন্টার ফর চায়না অ্যান্ড গ্লোবালাইজেশনের প্রেসিডেন্ট ও বেইজিংভিত্তিক চিন্তক হেনরি ওয়াং ট্রাম্পের মন্তব্যকে ‘ধোঁকাবাজি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি সিএনবিসিকে বলেছেন, ‘শুল্ক বা শাস্তি নিয়ে ট্রাম্প সব সময় বড় বড় কথা বলেন, কিন্তু আমাদের এসব কথার মধ্যে ডুবে যাওয়া উচিত নয়।

ওয়াং আরো বলেন, উভয় পক্ষ বিদ্যমান চুক্তি বাস্তবায়নে কতটা আন্তরিকভাবে কাজ করছে, সেটাই হবে প্রকৃত অগ্রগতির মাপকাঠি।

বর্তমান অস্থায়ী বাণিজ্য সমঝোতায় চীনের বিরল ধাতুর রপ্তানির ওপর নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা ও কিছু মার্কিন প্রযুক্তি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের চুক্তি অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ চুক্তি অনুযায়ী, উভয় দেশের পণ্যের ওপর শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫৫ শতাংশ ও চীনে ৩২ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

এদিকে নভেম্বরের মাঝামাঝি এ চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। এর ভাগ্য নির্ভর করবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ধারাবাহিক আলোচনার ওপর।
চীনের জ্যেষ্ঠ বাণিজ্য আলোচক লি চেংগাং মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ারসহ অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য এই সপ্তাহে ওয়াশিংটনে যাচ্ছেন।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া