তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে সোমবার আলোচনা করেছেন রাশিয়া ও ইরানের প্রেসিডেন্টরা। অকার্যকর হয়ে পড়া ২০১৫ সালের চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে ইউরোপীয় শক্তিগুলো তেহরানের বিরুদ্ধে পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেওয়ার প্রেক্ষাপটে এ আলোচনা হলো।
ক্রেমলিন সোমবার জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিফোনে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে কথা বলেন এবং তারা ‘ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ঘিরে পরিস্থিতি’ নিয়ে আলাপ করেন। তবে কী আলোচনা হয়েছে তা বিস্তারিত জানানো হয়নি।
পাশাপাশি ইরানি প্রেসিডেন্সির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পেজেশকিয়ান ইরানের ‘সমৃদ্ধকরণের অধিকার’ সমর্থনের জন্য পুতিনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং বলেছেন, ইরান ‘পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চাইছে না এবং কখনো চাইবেও না’।
এদিকে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ইরান যদি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সীমিত করতে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পরিদর্শকদের সঙ্গে সহযোগিতা পুনঃস্থাপন করতে রাজি না হয়, তবে তারা জাতিসংঘের সেই নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহালের জন্য ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ সক্রিয় করবে, যা ওই চুক্তির অধীনে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। ইরানি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, জেনেভায় মঙ্গলবার ইউরোপের এই তিন দেশের সঙ্গে আলোচনা করবে তেহরান।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে দুই দেশ রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরো জোরদার করেছে।
বর্তমান অচলাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু আলোচনা শুরুর আগে ইরান নিয়মিতভাবে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে অবস্থান সমন্বয় করার চেষ্টা করে আসছে। রাশিয়ার বাণিজ্যিক দৈনিক কোমেরসান্ত সোমবার জানিয়েছে, মস্কো ‘স্ন্যাপব্যাক’ নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করছে।
পত্রিকাটি রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ‘ইরানের বিরুদ্ধে পূর্বে স্থগিত জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের জন্য প্রক্রিয়া সক্রিয় করার হুমকি ব্রিটেন, জার্মানি ও ফ্রান্সের পক্ষ থেকে গুরুতর অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী পদক্ষেপ।’
রাশিয়া ২০১৫ সালের যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা বা জেসিপিওএর স্বাক্ষরকারী দেশ, যার মাধ্যমে ইরানকে নিষেধাজ্ঞা শিথিলতার বিনিময়ে তাদের পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার শর্ত দেওয়া হয়েছিল।
তেহরান চুক্তির স্ন্যাপব্যাক ধারা প্রয়োগের বৈধতা অস্বীকার করেছে এবং অভিযোগ করেছে, ইউরোপীয় দেশগুলো নিজেরাই চুক্তির প্রতিশ্রুতি পালন করেনি।
এ বছরের শুরুতে ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধের পর জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করে ইরান। তেহরানের অভিযোগ, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় তাদের পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আইএইএ তা নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হয়েছে।