জাপানে আটক অবস্থায় নির্দোষ ব্যক্তির মৃত্যু, ক্ষমা চাইল পুলিশ

SHARE

জাপানে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার হওয়ার পর দীর্ঘ সময়ের আটক অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা এক ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন দেশটির শীর্ষ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কর্মকর্তারা। এএফপি সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে।

যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ওকাওয়ারা কাকোহকির সাবেক উপদেষ্টা ছিলেন শিজুও আইশিমা, তিনজন কোম্পানি নির্বাহীর একজন যাদেরকে মাসের পর মাস অবৈধভাবে প্রাক-বিচার হেফাজতে রাখা হয়েছিল—যে অভিযোগগুলো পরবর্তীতে বাতিল হয়।

মানবাধিকার কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে জাপানের তথাকথিত ‘জিম্মি বিচার’ প্রথার অবসান দাবি করে আসছেন, যেখানে তদন্তকারীরা স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য আসামিদের দীর্ঘ সময় আটক রাখেন।

টোকিও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর দপ্তর ও টোকিও প্রসিকিউটর অফিসের কর্মকর্তারা সোমবার আইশিমার পরিবার ও তার সমাধিস্থল পরিদর্শন করেন।

টোকিও মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-সুপারিনটেনডেন্ট জেনারেল তেতসুরো কামাতা পরিবারের সঙ্গে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত বৈঠকে বলেন, ‘আমরা বেআইনি তদন্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

আইশিমার স্ত্রী বলেন, ‘আমি ক্ষমা প্রার্থনা গ্রহণ করছি, কিন্তু আমি কখনোই ক্ষমা করতে পারব না।’

২০২০ সালের মার্চে ওই তিনজনের ওপর অভিযোগ আনা হয়, তারা স্প্রে ড্রায়ার অবৈধভাবে রপ্তানি করেছেন, যা দিয়ে জীবাণু অস্ত্র তৈরি সম্ভব—যদিও তারা দাবি করেছিলেন রপ্তানিটি বৈধ।

আইশিমার শরীরে ২০২০ সালের অক্টোবরে অগ্রসরমান ক্যানসার ধরা পড়ে। তবুও মুক্তি দিলে তিনি প্রমাণ নষ্ট করতে পারেন এই যুক্তিতে প্রসিকিউটররা তাকে আটকে রাখেন। এক মাস পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আইশিমার সঙ্গে দেখা না করার শর্তে তার দুই সহকর্মীকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মুক্তি দেওয়া হয়—ফলে ওই মাসেই মারা যাওয়ার আগে তারা তার সঙ্গে দেখা করতে পারেননি।

পরবর্তীতে অভিযোগগুলো বাতিল করা হয় এবং আইশিমার পরিবার ও সহকর্মীরা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

টোকিও হাইকোর্ট রায়ে বলেছে, তদন্ত, গ্রেপ্তার ও অভিযোগপত্র—সবই বেআইনি ছিল ও কোনো প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত ছিল না।

পরিবারের আইনজীবী সুযোশি তাকাদা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আদালতের অনুমোদনে বারবার দেওয়া এই আটকাদেশ একজন বিচারকের একক ভুল নয়। আমাদের সব বিচারকের ভুল মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। আদালতকে এই ঘটনার শিক্ষা নিতে হবে এবং ভাবতে হবে, ভবিষ্যতে যেন আর কেউ ‘জিম্মি বিচার’ প্রথার শিকার না হয়।