একটি টেস্ট ম্যাচ জিততে প্রতিপক্ষের বিশ উইকেট নেওয়া আবশ্যক কর্ম। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্টে বাংলাদেশ সেটি করতে পারলো কই। দুই টেস্ট মিলে বাংলাদেশ পাকিস্তানের উইকেট নিতে পেরেছে ২৪টি। খুলনায় ১০টি, ঢাকায় দুই ইনিংস মিলে ১৪টি। শনিবার ম্যাচ সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকুর রহিম সহজ স্বীকারোক্তিই দিয়েছেন। বলেছেন, উইকেট না নিলে ম্যাচ জেতা সম্ভব নয়। আবার প্রতিপক্ষ ৫০০/৬০০ রান করে বসলে ব্যাটিং করতে নামাটাও বাড়তি চ্যালেঞ্জের হয়ে যায়।
ওয়ানডেতে ব্যালেন্সড হলেও টেস্টে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ সত্যিই ম্যাড়ম্যাড়ে। নেই সত্যিকারের পেসার, স্পিনটাও তেমন ধার সমৃদ্ধ হচ্ছে না। অতীতের তুরুপের তাস সাকিব আল হাসান তো এবার বলতে গেলে, নিষ্ক্রিয়ই ছিলেন। শহীদের মতো অনভিজ্ঞ, তাইজুলের মতো তরুণদেরই টানতে হয়ে বোলিং আক্রমণ। মুশফিকের মতে, ভবিষ্যতে টেস্ট জিততে হলে বোলারদের নিয়ে কাজ করতেই হবে। বর্তমান সময়ে ব্যাটসম্যানদের চেয়ে বোলাররা সত্যিই পিছিয়ে আছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক বলেন, “এটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি নিয়ে আমরা গত কয়েক মাস, এমনকি গত গয়েক বছর ধরে আলোচনা করেছে। আপনি যদি খেয়াল করে দেখেন, জিম্বাবুয়ের কথা বাদ দিলে আমরা কোনো দলের বিপক্ষেই ২০ উইকেট নিতে পারিনি। সত্য বলতে, আপনি যদি অন্যান্য টেস্ট খেলা দলগুলোর দিকে দেখলেও দেখবেন তাদের পেসাররা যেভাবে পরিকল্পনা করে বোলিং করে, নতুন বা পুরোনো বলে তারা যেভাবে খেলে, ওইখান থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। সেখানে কিভাবে কার্যকর বোলিং করা যায়, রান কম দেওয়া যায় এবং আক্রমণাত্মক বোলিং করতে হয়। আমার মনে হয় এখানে বোলাররা অনেক পিছিয়ে আছে। সে তুলনায় ব্যাটসম্যানরা অনেক উন্নতি করেছে। কিন্তু বোলারদের খুব কমই দেখা যায় আলাদাভাবে কাজ করতে। এর দায়টা আমাদেরই। আমরা হয়তো তাদেরকে বোঝাতে পারছি না বা লিড করতে পারছি না। ভবিষ্যতে এটা আমাদের দেখতে হবে। জিততে হলে আমাদের বোলার লাগবে। তাদেরকেও শিখতে হবে পাঁচটা দিন কিভাবে ভালো বোলিং করা যায়, প্রতিপক্ষের উপর চাপ প্রয়োগ করা যায়।”
পঞ্চম দিনে যাচ্ছে না ঢাকা টেস্ট, তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শনিবারও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা উইকেট বিলিয়ে এসেছেন। তাদের উল্লেখ করে বললে বলতে হয়, তামিম, মাহমুদউল্লাহ, সাকিবের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের কথা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং প্ল্যান সম্পর্কে মুশফিক বলেন, “নিজেদের সাধারণ খেলা খেলার পরিকল্পনা ছিলো। মিডল অর্ডারের কেউ কেউ চেষ্টাও করেছে। তাদের উচিত ছিল পরিস্থিতি চিন্তা করে খেলা। এমন পরিস্থিতিতে এই উইকেটে সব মারা বা সুইপ করা অনেক কঠিন হয়েছে যায়। কারণ এটি ছিলো চতুর্থ দিনের উইকেট। সব মিলিয়ে আমাদের চিন্তা ছিল আজকের প্রথম এক ঘণ্টায় টপ অর্ডারের বড় একটা জুটি গড়া। কারণ আমাদের একজন ব্যাটসম্যান কম, রাজীব ব্যাটিং করতে পারবে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা তা পারিনি। লাঞ্চের আগেই চারজন আউট হয়ে গেছে। তখনই আমরা ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছি।”