কবির নাম সাগর। এটি ছদ্মনাম। আসল নাম আমন। ভীষণই জনপ্রিয় তার কবিতা।
কবিতা প্রেমীর নাম পূজা। সাগরের কবিতা তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। কবির সঙ্গে তার যোগাযোগের ইচ্ছেও প্রবল।
এই দু’জনের মাঝে আছে আর এক চরিত্র, আকাশ। তার মহিলাপ্রীতি সর্বজনবিদিত। সম্পর্কে সে আমনের ভাই। কেননা, আকাশের বাবা-মা আমনকে দত্তক নিয়েছিলেন।
আকাশ একটা সময়ে পূজার সান্নিধ্যে আসে। সাগরের কবিতার প্রতি তার মুগ্ধতার কথা আকাশকে জানায় পূজা। আমনের প্রশ্রয়েই আকাশ নিজেকে পূজার কাছে সাগর হিসেবে উপস্থাপন করে। জমে যায় প্রেম। কিন্তু, শেষে সব সত্যি প্রকাশ্যে আসে। পরিণতিতে দেখা যায়, আসল কবির সঙ্গেই পূজার মিলনদৃশ্য।
এই তিন চরিত্রের প্রেমকথা নিয়েই ১৯৯১-তে ‘সাজন’ নির্মাণ করেছিলেন পরিচালক লরেন্স ডি’সুজা। ওই ছবিতে আমনের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সঞ্জয় দত্ত। আকাশের ভূমিকায় সালমান খান। আর এই দু’জনের সঙ্গে নায়িকা ছিলেন মাধুরী দীক্ষিত। বক্স অফিসে বেশ সাফল্য পেয়েছিল ছবিটি। গল্পের টানেই ছবিতে দেখা যায় সঞ্জয়-সালমান একই চরিত্রভূমিকায় মাধুরীর কাছে হাজির হয়। মিল একটাই, দু’জনেই সাগর।
এই ছবি মুক্তি পাওয়ার প্রায় ২৪ বছর পর সঞ্জয়-সালমান মিলে গেলেন আরও এক বার। তবে সেটা আর রিল-লাইফে নয়। রিয়্যাল লাইফে। ১৯৯৩-এর মুম্বাই বিস্ফোরণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ইতিমধ্যেই জেলে দিন কাটাচ্ছেন প্রথম জন। আর দ্বিতীয় জন বুধবার আদালতের রায়ে জেলে যেতে চলেছেন। চলেছেন, কেননা, এ দিন তার কারাদণ্ডের নির্দেশে দু’দিনের অন্তর্বর্তী জামিন মিলেছে তাই। তা না হলে, বুধবার বিকেলেই সালমানের জেল-যাত্রা প্রায় নিশ্চিত ছিল। ২০০২-এ ফুটপাথে শুয়ে থাকা কয়েক জন ব্যক্তি তার গাড়ির তলায় চাপা পড়েন। তাদের এক জনের মৃত্যু হয়। জখম হন চার জন। কাজেই ‘সাজন’-এর পর দুই নায়ক এবার আদালতের নির্দেশে একই ভূমিকায়, অর্থাৎ জেলবাসী হতে চলেছেন।
সঞ্জয়-সালমান এর পর বেশ কয়েকটি ছবিতে যৌথ ভাবে কাজ করেছেন। যেমন, ২০০০-এ ‘চল মেরে ভাই’, ২০০২-এ ‘ইয়ে হ্যায় জলওয়া’, ২০০৭-এ ‘ওম শান্তি ওম’, ২০১০-এ ‘তিস মার খান’, পরের বছর ‘রেডি’, ২০১২-তে ‘সান অব সর্দার’ ২০১৩-য় ‘পার্টনার ২’ এবং তার পরের বছর ‘কাঞ্চনা রিমেক’ ছবিতে তাদের একসঙ্গে কাজ করতে দেখা গিয়েছে।
বুধবার দুপুরে সলমনের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। আর তার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলিতে একটাই বার্তা ঘুরেফিরে আসছে- মাধুরীর দুই ‘সাজন’ই জেলে।
আকাশ থেকে সাগর- পূজা ভাসিয়ে দিল দু’জনকেই!