গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ ও গণহত্যা বন্ধ না হলে দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো আলোচনা কিংবা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হবে না বলে জানিয়েছে হামাস। ফ্রান্সের বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মঙ্গলবার (৬ মে) এ কথা বলেন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ও গাজা উপত্যকার সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাসেম নাঈম।
বাসেম বলেন, ‘যতক্ষণ গাজায় ক্ষুধা, পিপাসা ও হত্যাকাণ্ডের অপরাধ থামানো হবে না, ততক্ষণ আলোচনা অর্থহীন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে এসব অপরাধ বন্ধে চাপ দিতে হবে।
’
এই মন্তব্য এমন এক সময় এলো যখন ইসরায়েল ঘোষণা করেছে, তারা গাজার অধিকাংশ এলাকা দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, নতুন অভিযানে গাজা থেকে ‘অধিকাংশ জনগণকে সরিয়ে দেয়া’ হবে।
ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা সম্প্রতি সামরিক বাহিনীর ‘বিস্তৃত অভিযান’ পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পুরো গাজা উপত্যকা দখল এবং সেখানে অবস্থান করাও এই পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত।
ইসরায়েলের নতুন অভিযানের পরিকল্পনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, এটি ‘অগণিত বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর’ কারণ হবে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক বলেছেন, ‘গাজা একটি ভবিষ্যত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’
এদিকে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো এক রেডিও সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইসরায়েলের পরিকল্পনা ‘অগ্রহণযোগ্য’ এবং এটি মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
ফিলিস্তিনিদের কাছে এই ধরণের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময়ের ‘নাকবা’ বা বিপর্যয়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। সে সময় কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি দেশছাড়া হয়েছিল।
হামাস-শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নতুন ইসরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত ২,৪৫৯ জন নিহত হয়েছেন। পুরো যুদ্ধে এ পর্যন্ত মোট প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২,৫৬৭ জনে।