মাস খানেক আগে মুক্তি পাওয়া ‘ভালোবাসা সীমাহীন’ ছবির মাধ্যমে রুপালি পর্দায় অভিষেক হয় পরীমনির। প্রথম ছবি মুক্তির মাস পেরোতে না পেরোতেই আবার মুক্তি পেল পরীমনি অভিনীত নতুন চলচ্চিত্র। নাম ‘পাগলা দিওয়ানা’। পরিচালক ওয়াজেদ আলী সুমন। দর্শকদের সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহে বসে ছবিটি দেখতে গত বুধবার রাতে সিরাজগঞ্জ যান পরীমনি। দর্শকদের সঙ্গে ছবি দেখার অভিজ্ঞতাসহ অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
ছবি দেখার জন্য সিরাজগঞ্জ কেন গেলেন?
কোনো ছবি সারা দেশে মুক্তির একদিন আগে সিরাজগঞ্জের সিনেমা হলে মুক্তি দেওয়া হয়। এই নিয়মটি নাকি অনেক বছর ধরে চলে আসছে। সিরাজগঞ্জের চলা সিনেমা হলে ছবি কেমন চলল, সেই ফলাফল দেখেই চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জন্য বুকিং দেন দেশের অন্য হল মালিকেরা। এই সিনেমা হল থেকে নায়ক-নায়িকা আর প্রযোজক-পরিচালকদের ভাগ্য পরীক্ষাও হয় বলতে পারেন। সব বিষয় মাথায় রেখে নায়ক-নায়িকারাও চেষ্টা করেন বৃহস্পতিবার চালা সিনেমা হলে ছবি মুক্তির দিনটিতে দর্শকের সঙ্গে বসে ফলাফল দেখতে। এ থেকে দর্শক ছবিটি কেমনভাবে গ্রহণ করলেন, তা বোঝা যায়।
সিরাজগঞ্জে ছবি দেখার অভিজ্ঞতা কেমন?
অসাধারণ। অবিশ্বাস্য। গত বুধবার রাতে সিরাজগঞ্জ যাই। স্থানীয় একটি রেস্টহাউসে বিশ্রাম নিই। সকালবেলা ঘুম ভাঙতেই শুনি মানুষের চিৎকার। জানতে পারলাম, আমি যে গেছি সেই বিষয়টি সেখানকার মানুষজন টের পেয়ে গেছে। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য। অনেকক্ষণ পর্যন্ত তাঁরা অপেক্ষা করলেন। তারপর আমি রেডি হয়ে কিছু দর্শকের সঙ্গে কথা বলি। সবাই তখন পরী, পরী বলে চিৎকার করছিলেন। কী যে ভালো লাগছিল বলে বোঝাতে পারব না। আমার মতো একজন নবাগত নায়িকার এর চেয়ে বেশি আর কী পাওয়ার আছে? মনে হয়েছে, আমার চলচ্চিত্র জীবন সার্থকতার পথে যাচ্ছে। দর্শকেরা আমাকে দারুণভাবে গ্রহণ করেছেন। আমি ধন্য।
মজার অভিজ্ঞতা…
আমি ভাবতেই পারিনি, ছবি দেখতে এত দর্শক আসবেন। সিরাজগঞ্জের চালা সিনেমা হলে আমি যখন মঞ্চে উঠলাম, তখন ‘ভালোবাসা সীমাহীন’ ছবির আইটেম গান বাজানো হচ্ছিল। সবাই ওই গানের সঙ্গে নাচতে শুরু করে দিলেন। আমি উপস্থিত সবার কাছে জানতে চাইলাম, আমার প্রথম ছবির নাম কী ছিল। সবাই একবাক্যে জোরে চিৎকার করে বললেন, ‘ভালোবাসা সীমাহীন’। তখন আমার ভেতরে কতটা আনন্দ হচ্ছিল, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। রাত নয়টার শো শুরু হওয়ার পরপরই আমরা ঢাকায় চলে আসি। এভাবে অসাধারণ একটি দিন কাটে আমার।
অনেককে বলতে শোনা যায়, আজকাল বাংলা ছবির দর্শক নেই। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?
এটি পুরোপুরি ভুল একটি ধারণা। আমি বিষয়টির সঙ্গে মোটেও একমত নই। বাংলা সিনেমার দর্শক যদি নাইবা থাকত, তাহলে বাংলা সিনেমা বানানো হতো না। আর বাংলা সিনেমা না বানানো হলে তো বাংলাদেশি চলচ্চিত্রশিল্পই টিকে থাকত না। আমার দুটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। দুটিতেই আমি দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় দেখেছি।
পাগলা দিওয়ানা ছবির বিশেষত্ব কী? কেনইবা দর্শক টিকিট কেটে ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে বসে দেখবেন বলে মনে করেন আপনি?
যাঁরা সিনেমা হলে ছবি দেখতে চান, ছবি দেখার সময় অনেক মজা করতে চান, যাঁরা প্রেম করতে চান, প্রেমের জন্য পাগলামি করতে চান—তাঁদের জন্যই এই সিনেমা। এককথায় ভালোবাসার পুরো একটি প্যাকেজ হচ্ছে ‘পাগলা দিওয়ানা’। ছবিটিতে ধুমধাড়াক্কা ব্যাপারও আছে। মারামারি যেমন আছে, তেমনি অনেক রোমান্টিক দৃশ্যও আছে। ‘পাগলা দিওয়ানা’ শুধু সিনেমা দর্শকদের পাগল করার জন্যই। আমি দর্শকদের পাগল করে দেব। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, যে দর্শক একবার হলে ঢুকবেন, তিনি প্রেমের জন্য পাগল হয়ে বের হবেন। ‘পাগলা দিওয়ানা’ ছবির একটি সংলাপ হল, ‘যদি ভালো লাগে একজনকে বলুন, আর যদি ভালো না লাগে তবে ১০০ জনকে বলুন।’ দর্শকদের প্রতিও আমার এই অনুরোধ রইল।
নতুন কী কাজ করছেন?
এখন আমার হাতে বেশ কয়েকটি নতুন ছবির কাজ আছে। কয়েকটি ছবির কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে এস এ হক অলীকের ‘আরও ভালোবাসবো তোমায়’, ওয়াজেদ আলী সুমনের ‘দরদিয়া’ এবং শামীমুল ইসলামের ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’। ছবিগুলোতে আমার সঙ্গে অভিনয় করেছেন শাকিব খান, আরিফিন শুভ ও আরজু। এ ছাড়া আরও ডজন খানেক ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আছি। পর্যায়ক্রমে ছবিগুলোর কাজ শুরু হবে।