সহজ জয়ে সেমিতে নিউজিল্যান্ড

SHARE

newziland21নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারন করে দিয়েছিল। আরও স্প্ট করে বললে, মার্টিন গাপটিলের অপরাজিত ২৩৭ রানের ইনিংসই ম্যাচের গন্তব্য ঠিক করে দিয়েছিল। তারপরও ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্বভাবসুলভ চেষ্টা করেছে। লড়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সেটি পাহাড় ডিঙানোর মতো হয়নি। ওয়েলিংটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৪৩ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে নিউজিল্যান্ড।

চতুর্থ দল হিসেবে বিশ্বকাপের শেষ চারে উঠলো কিউইরা। ২৪ মার্চ অকল্যান্ডে প্রথম সেমিতে নিউজিল্যান্ড খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ২৬ মার্চ সিডনিতে দ্বিতীয় সেমিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ ভারত। শনিবার প্রথমে ব্যাট করে গাপটিলের ডাবল সেঞ্চুরিতে নিউজিল্যান্ড ৬ উইকেটে ৩৯৩ রানের বিশাল স্কোর গড়ে। জবাবে ৩০.৩ ওভারে ২৫০ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ম্যাচ সেরা হন গাপটিল।

৩৯৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি উইন্ডিজদের। ২৭ রানে ২ উইকেট হারায় দলটি। রানের চাপে প্রত্যেকেই এলোমেলো খেলে গেছেন। ছিল না পরিকল্পনার ছাপ। অসম্ভবকে সম্ভব করার চেষ্টা বাদ দিয়ে গেইলরা খেলে গেছেন নিজেদের মতো করে। গেইল সর্বোচ্চ ৩৩ বলে ৬১ রান (২ চার, ৮ ছয়) করেন। স্যামুয়েলস ২৭, কার্টার ৩২, স্যামি ২৭, রাসেল ২০ রান করেন। অধিনায়ক হোল্ডার ৪২ রান করে অপরাজিত ছিলেন। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে বোল্ট ৪টি, ভেট্টোরি-সাউদি ২টি করে উইকেট নেন।

এদিন ওয়েলিংটনে ওয়ানডের ষষ্ঠ ডাবল সেঞ্চুরি করেন কিউই ব্যাটসম্যান গাপটিল। তবে তিনি পঞ্চম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান। নিউজিল্যান্ডের মতো নিজের ক্যারিয়ারেও এটি তার প্রথম ডাবল। ক্রিস গেইলের পর বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে গড়লেন ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড। রানের হিসেবে গেইল অবশ্য ছাড়িয়ে গেছেন গেইলকে। ২১৫ রান করেছিলেন গেইল।

এর আগে কিউইদের ইনিংসটাই আবর্তিত হয়েছে গাপটিলের ব্যাট ঘিরে। যেখানে গাপটিল একাই করেছেন অপরাজিত ২৩৭ রান। কিন্তু ইনিংসের আর কোনো সেঞ্চুরি, এমনকি হাফ সেঞ্চুরিও নেই। মজার বিষয় হলো, ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪২ রান করেছেন রস টেলর। এখানেই স্পষ্ট ওয়েলিংটনে গাপটিলের ব্যাটেই পিষ্ট হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করেই বেশ রানের ধারায় ছিলেন গাপটিল। সেটিকে কাজে লাগিয়েই বেধড়ক পেটালেন উইন্ডিজ বোলারদের।

২৭ রানে ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে (১২) ফিরিয়ে উইন্ডিজদের শুরুটা খারাপ ছিল না।  দ্বিতীয় উইকেটে ৬২ রানের জুটি গড়েন কেন উইলিয়ামসন ও গাপটিল। তাদের জুটি বিচ্ছিন্ন হয় উইলিয়ামসন ৩৩ রান করে আন্দ্রে রাসেলের শিকার হলে। তৃতীয় উইকেটে অবশ্য বড় রানের ভিত পেয়ে যায় স্বাগতিকরা। গাপটিল-রস টেলর ১৪৩ রানের জুটি গড়েন। যেখানে রান আউট হওয়ার আগে টেলর ৬১ বলে ৪২ রান করেছেন। জুটিটা টেনেছে গাপটিলের বিস্ফোরক ব্যাটিংই।

সুবিধা করতে পারেননি কোরি অ্যান্ডারসনও। তিনি ১৫ রান করেই ফেরত যান। এরপর এলিয়টন, রনকি আসা যাওয়ার মাঝে থেকেছেন। একপ্রান্তে চলেছে গাপটিলের দুরন্ত ব্যাটিং। এলিয়টরাও ব্যাট হাতে চড়াও হয়েছেন প্রতিপক্ষ বোলারদের উপর। কিন্তু সেটি গাপটিলের মতো অগ্নিমূর্তি ধারণ করেনি। এলিয়ট ২৭, রনকি ৯, ভেট্টোরি ৮ রান করেন। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে যান গাপটিল।

৬৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। ১১০ বলে পূর্ণ করেন সপ্তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। দেড়শো রান ছাড়িয়ে যান ১৩৪ বলে। আর ডাবল সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছান ১৫২ বলে। ১৬৩ বলে অপরাজিত ২৩৭ রানের ইনিংসে ডানহাতি এই ওপেনার উইকেটের চারপাশে অসাধারণ সব শট খেলেছেন। তিনি ২৪ টি চার ও ১১ টি ছক্কা মেরেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে জেরমি টেলর ৩টি, রাসেল ২টি করে উইকেট পান।