দু’দাদু মিলে ধর্ষণ, দিশেহারা কিশোরী

SHARE

repeবরগুনায় দুই দাদু মিলে ১৩ বছরের কিশোরী ধর্ষণের বিচার নিয়ে তৈরি হয়েছে ধূম্রজাল। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীরা সালিস বৈঠকের মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। অন্যদিকে, গত প্রায় চার মাস ধরে তদন্ত কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ। তবে আরো কতদিনে শেষ হবে তা বলতে পারছে না কেউই।

গেল ২০১৪ সালের ৩ মে স্কুল থেকে ফিরে প্রতিবেশি চাচাতো দাদু অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আব্দুল খালেকের বাড়ির টিউবয়েলে পানি আনতে যায় ওই কিশোরী। এ সুযোগে তাকে ঘরের মধ্যে নিয়ে ডেকে নিয়ে কৌশলে কিশোরীকে ধর্ষণ করে দাদু।

ওই ঘটনার তিনদিন পর সবকিছু ফাঁস করে দেবেন এমন হুমকি দিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে কিশোরীর ফুফাতো দাদু তৈয়ত আলী। দুই দাদুর হুমকির ভয়ে বিষয়টি চেপে যায় নির্যাতিতা কিশোরী। তবে এক পর্যায়ে অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে সে। ছয় মাস পর এ ঘটনায় সবকিছু জানাজানি হলে ২৪ নভেম্বর বরগুনা সদর থানায় ধর্ষণের পরিবার মামলা করে। কিন্তু এলাকার প্রভাবশালী মহল বিষয়টি মীমাংসার জন্য বাদীকে চাপ দিচ্ছে।

কোনো সমঝোতা নয়, আইনি বিচারের দাবি জানিয়ে ধর্ষিতার বাবা মোখলেছ হাওলাদার বলেন, থানায় মামলা করার পরেও পুলিশ কোনো তদন্ত করছে না। এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যানরা মীমাংসার কথা বলে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে।

ধর্ষিতার মা বলেন, পুলিশের কাছ থেকে আমরা কোনো সহযোগিতা পাই নি। তারা কোনো আসামিকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেনি। মেম্বার চেয়ারম্যানরা টাকা পয়সা দেয়ার কথা বলে সালিশ বৈঠকে বসার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে।

ধর্ষিতার মা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমাদের মান-সম্মান আর কিছুই নেই, সব শেষ। এখন শুধু আমার মেয়ের ধর্ষণের বিচার চাই, আর কিছু চাই না।

মীমাংসার চেষ্টা করার কথা স্বীকার করে বরগুনা সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হাকিম বাংলামেইলকে বলেন, আমি নিজে উদ্যোগ নিয়ে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেছি। এলাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সেটা মীমাংসা করা আমার দায়িত্ব। তবে আমি চাই ধর্ষিতা মেয়েটি যেন ন্যায্য বিচার পায়।

এদিকে কবে নাগাদ তদন্ত শেষ হবে তা বলতে পারছে না বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজ হোসেন। তিনি বলেন, তদন্ত কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে সেটা সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। ধর্ষিতা ও তার সন্তানের ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তা ঢাকা ডিএনএ ল্যাব-এ পাঠানো হয়েছে। ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত আমরা কিছুই বলতে পারছি না। তবে এর আগে যা করা দরকার সেটা আমরা প্রায় শেষ করেছি।