ভাঙ্গায় আ.লীগ নেতা বাদল মুন্সি স্কুলের জায়গা দখল করে দেয়াল নির্মাণ

SHARE

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে দেয়াল নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের ৯১নং বিবিরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গায় এ দেয়াল নির্মাণ করা হয়। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ রেজাউল করিম উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করেছেন। এই আওয়ামী লীগ নেতা ঘারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বাদল মুন্সি।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিবিরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে প্রতিবেশী মৃত শাজাহান মুন্সির ছেলে মো. বাদল মুন্সি (সাবেক ঘারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) সীমানা প্রাচীর তৈরি করছেন।

প্রধান শিক্ষক এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিদ্যালয়ের জায়গা দখলমুক্ত করার কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
নামধারী আওয়ামী লীগ নেতা তাদের কথায় কর্ণপাত না করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রধান শিক্ষক উপজেলা প্রশাসন বরাবর অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ দেওয়ার পরও তাদের কাজ থেমে থাকেনি। তিনি বিদ্যালয়ের সামনের প্রধান ফটকসহ খেলার মাঠ সম্পূর্ণ আটকিয়ে দেন।

এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম কুদরত এ খুদা 24hourbd.com কে জানান, স্কুলের হেডমাস্টার সাহেব আমাকে বিষয়টি প্রাচীর নির্মাণের পরে অবহিত করেছেন। আমি বিষয়টি অবগত হয়ে দখলকারীদের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছি।

প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম জানান, ৯০ সালে স্কুলটি নির্মিত হয়েছে। এ পর্যন্ত কোনোদিন কেউ হস্তক্ষেপ করেনি। সুযোগ সন্ধানী এই আওয়ামী লীগ নেতা বাদল মুন্সি একেবারেই স্কুল ঘেঁষে সামনের প্রায় ৭০ শতাংশ জায়গা সব বন্ধ করে দিয়েছেন। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ দখল করে প্রাচীর নির্মাণ করেছেন। আমি দুই-তিন দিন ইউএনও স্যারের কাছে গিয়ে তাকে পাইনি। এই সুযোগে নামধারী আওয়ামী লীগ নেতা নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছেন।

এ ঘটনায় বিবিরকান্দি গ্রামের বাসিন্দারা কেউই দেওয়াল নির্মান কাজে কোন প্রকার বাঁধা প্রদান করেনি। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় বিবিরকান্দির বাসিন্দারা আওয়ামী লীগের দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে অনেকেই নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিলো। সাবেক সতন্ত্র সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ কাজীর অনুসারী ছিলেন। সাবেক সতন্ত্র সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর দেশ থেকে পালিয়ে যায়। যার কারনে নিক্সনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত নিরু খলিফা নানা অপকর্মের দায়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। এই সুযোগে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ কাজীর অনুসারী মোঃ বাদল মুন্সী বিদ্যালয়ের জায়গা সুযোগ বুঝে দখল করে দেওয়াল নির্মান করে এবং বর্তমানে নিজেকে রক্ষা করার জন্য বিএনপির নেতাদের সাথে হাত মিলাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বাদল মুন্সি তার চাচা লায়েক মুন্সির কাছ থেকে স্কুলের পিছন থেকে কিছু জমি ক্রয় করেন। কিন্তু সরকার পরিবর্তন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই আওয়ামী লীগ নেতা বাদল মুন্সি বিএনপি নেতাদের নাম ব্যবহার করে স্কুলের সামনের খেলার মাঠসহ জায়গা দখল করেন। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ প্রশাসনের কাছে দ্রুত দখল মুক্ত করার দাবি জানাই।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বাদল মুন্সির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, স্কুলের জায়গা আমার নামে হওয়ায় আমি সকল কাগজপত্র প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছি। স্কুলের জায়গা যদি আপনার নামে হয় তাহলে এতকাল আপনি প্রশাসনকে জানাননি কেন? এ প্রশ্নের জবাবে বাদল মুন্সি জানান, প্রভাবশালী দখলবাজ নিরু খলিফার জন্য অত্র এলাকার কোন কাজ চাঁদা প্রদান করা ছাড়া সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। এখন আমার সুযোগ হয়েছে, তাই আমার জায়গায় আমি দেওয়াল নির্মান করেছি। এই ঘটনায় এখনো বিবেকবান মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে রাজী হয় নাই। তবে প্রশাসনের উচিৎ শীঘ্রই স্কুলের জায়গা দুষ্কৃতিকারীর হাত থেকে দখলমুক্ত করে স্কুলের জায়গা ফিরিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খেলার সুযোগ করে দেওয়া।