জোড়া নায়ক এখন দুই ভায়রাভাই: ভারতীয় পত্রিকা

SHARE
mahmudullahএকটা সময় তাদের সম্পর্ক নিয়েই প্রশ্ন উঠেছিল৷ বলা হয়েছিল, পারিবারিক সম্পর্কের জেরেই অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম টিমে জায়গা করে দিচ্ছেন ভায়রাভাই  মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে! সোমবার অ্যাডিলেডে সেই আত্মীয়ের ব্যাটেই ইতিহাস বাংলাদেশের৷
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ক্রিকেটে যেমন দীর্ঘ দিনের ‘জুটি’ ভায়রাভাই লক্ষ্মীরতন শুক্ল ও সৌরাশিস লাহিড়ির, তেমনই বাংলাদেশের হিট জুটি মাহমুদুল্লাহ-মুশফিক৷ ইংল্যান্ডকে হারাতে মাহমুদুল্লাহর রান ১০৩, মুশফিকের ৮৯৷ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরির মালিক হিসেবে ও পার বাংলার ক্রিকেটে রাতারাতি মহানায়কের আসনে মাহমুদুল্লাহ৷ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর তিনিই দ্বিতীয় বাঙালি, যিনি বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করলেন৷ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই সেঞ্চুরি মাহমুদুল্লাহের কেরিয়ারেও প্রথম৷

কে এই মাহমুদুল্লাহ? আদি বাড়ি ময়মনসিংহ হলেও ঢাকাতেই বেড়ে ওঠা মধ্যবিত্ত পরিবারের রিয়াদের৷ বাংলাদেশ ক্রিকেটে শ্রদ্ধার পাত্র খালেদ মাহমুদ সুজনের হাতে তৈরি ক্রিকেটার তিনি৷ সুজনকে বাংলাদেশ ক্রিকেটে চাচা বলে চেনে সবাই৷ আর সেটা শুধু নামে নয়, অভিভাবকের মতোই মাহমুদুল্লাহকে হাতে ধরে তৈরি করেছেন চাচা৷
বাংলাদেশে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মাহমুদুল্লাহ সে দেশের ক্রিকেটে বেশ প্রথম সারির তারকা বিপিএলে তার দর উপরের দিকে৷ পদ্মা পারের ক্রিকেটপ্রেমীরা যাদের পঞ্চপাণ্ডব বলে ডাকেন, তাদেরও একজন মাহমুদুল্লাহ৷ বাকি চার জন সাকিব আল হাসান, মাশরাফি মোর্তাজা, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর৷

তা হলে কেন বাকি চার জনের মতো বিশ্ব ক্রিকেট মহলে খ্যাতি নেই মাহমুদুল্লাহর? বাংলাদেশের ক্রিকেট মহল বলছে, প্রতিভার অভাব নেই, কিন্তু ধারাবাহিকতার অভাবই মাহমুদুল্লাহের শত্রু৷ আট বছর ধরে আন্তজার্তিক ক্রিকেট খেলছেন৷ ২৩ টেস্টে ১২৮৫ রান৷ ১১৪ ওয়ান ডে-তে ২৩৩৯ রান৷

নিউ জিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে সেঞ্চুরি আছে৷ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে অভিষেক টেস্টে এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন অলরাউন্ডার মাহমুদুল্লাহ৷ ডান হাতি ব্যাটের সঙ্গে তার অফ স্পিনও বড় ভরসা বাংলাদেশের৷ এত কিছুর পরও মাঝেমাঝে ফর্ম হারিয়ে টিমে থেকে গিয়েছেন! তখনকার অধিনায়ক মুশফিকের দিকে সে সময় আঙুল তুলেছেন কেউ কেউ৷

এদিন অবশ্য দুই বোনের ‘লেডি লাক’ বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করল৷ ২০১১ সালে জান্নাতুল কাউসার মিষ্টির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিলে মাহমুদুল্লাহর৷ আর গত আগস্টে তার বোন জান্নাতুল কিয়াফত্ মণ্ডির সঙ্গে জীবনের বাইশ গজে জুটি বেঁধেছেন মুশফিকুর৷

দুই বোন এখন অস্ট্রেলিয়াতেই রয়েছেন তাদের স্বামীদের সঙ্গে৷ আর বছর ২৯-এর জীবনে তার স্ত্রীর অবদান যে অনেকখানি সেটা অ্যাডিলেডে ঐতিহাসিক ম্যাচের পর বোঝা গিয়েছে৷ মাহমুদুল্লাহ নিজেই বলেছেন, ‘আমি আমার সাফল্য স্ত্রী ও সন্তানকে উত্স,র্গ করছি৷’

এমনিতে এ সময়টা উত্স বমুখর হয়ে ওঠে বাংলাদেশ৷ মার্চে স্বাধীনতা দিবস ও এপ্রিলে বাংলা নববর্ষ ঘিরে৷ সেখানে মাহমুদুল্লাহের সেঞ্চুারির যেন সোনার বাংলাকে আরও উজ্জীবিত করে দিল৷