দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ সোমবার। সরকারি হিসাবে এই এক বছরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গড়ে দৈনিক ২৩ জন মারা গেছে। এ সময় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের খবর দেয় সরকার। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়।
গতকাল রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পাঠানো নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ পর্যন্ত দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার ৩৩০ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছে আট হাজার ৪৬২ জন এবং সুস্থ হয়েছে পাঁচ লাখ তিন হাজার তিনজন।
এ হিসাব অনুসারে, গত এক বছরে গড়ে দৈনিক ২৩ জন করে মারা গেলেও প্রায় এক মাস ধরেই দেশে দৈনিক মৃত্যু ২০ জনের নিচে বিভিন্ন সংখ্যায় ওঠানামা করছে। এর মধ্যে সর্বশেষ গত আট দিন মৃত্যু ১০ জনের মধ্যে থাকলেও গতকাল আবার বেড়ে হয়েছে ১১ জন। গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬০৬ জন এবং সুস্থ হয়েছে এক হাজার ৩৭ জন।
কয়েক দিন ধরে দৈনিক রোগী শনাক্তের হার আবার দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৪.৪০ শতাংশ। এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩.২৭ শতাংশ। আর সুস্থতার হার ৯১.৪০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১.৫৪ শতাংশ।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১১ জনের মধ্যে ৯ জন পুরুষ এবং দুজন নারী। বয়স বিবেচনায় ৩১ থেকে ৪০ বছরের একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের একজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের দুজন এবং ষাটোর্ধ্ব সাতজন। ঢাকা বিভাগে ছয়জন, চট্টগ্রাম বিভাগে চারজন এবং খুলনা বিভাগে একজন মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আরেক তথ্য অনুসারে, দেশে করোনার টিকা দেওয়ার জন্য নিবন্ধনসংখ্যা ৫০ লাখ ছাড়িয়েছে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত ৫০ লাখ ১৭ হাজার ৮০৪ জন নিবন্ধন করেছেন। এ ছাড়া গত ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি শুরুর পর থেকে গতকাল পর্যন্ত এক মাসে টিকা নিয়েছেন ৩৭ লাখ ৮৯ হাজার ৩৫২ জন। এর মধ্যে গতকাল এক দিনে টিকা নিয়েছেন এক লাখ সাত হাজার ২০০ জন।
করোনাভাইরাসজনিত কভিড-১৯ রোগী প্রথম শনাক্তের তিন মাস পর ১৮ জুন তা এক লাখ ছাড়িয়ে যায়। ঠিক এক মাস পর ১৮ জুলাই এই সংখ্যা দুই লাখ ছাড়ায়। এর পরের এক লাখ রোগী শনাক্ত হয় এক মাস ৯ দিনে, ২৬ আগস্ট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়ে যায়। চার লাখ ছাড়িয়ে যায় এর দুই মাস পর, ২৬ অক্টোবর। এর ৫৫ দিন পর গত ২০ ডিসেম্বর তা পাঁচ লাখে পৌঁছায়। এর পরের ৭৭ দিনে শনাক্ত রোগীর তালিকায় যুক্ত হয় আরো ৫০ হাজার নাম। এর মধ্যে গত ২ জুলাই চার হাজার ১৯ জন কভিড রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
দেশে করোনায় প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করার পর এ বছর ২৩ জানুয়ারি এর সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা দৈনিক হিসাবে সর্বোচ্চ মৃত্যু।